ই-পেপার রোববার ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
রোববার ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইইউতে রফতানিতে সুযোগের সঙ্গে চ্যালেঞ্জও আছে
প্রকাশ: সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৩:০৬ এএম আপডেট: ১৮.০৯.২০২৩ ৭:৩৭ এএম  (ভিজিট : ৩১৪)
রফতানিকারকদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানি করাসহ বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। অন্যান্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে-অভ্যন্তরীণ বাজারে স্ট্যান্ডার্ডার অভাব, তথ্য ও জ্ঞানের অভাব, অপর্যাপ্ত লজিস্টিক সুবিধা। তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বেশ কিছু উপায় রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে-ইউরোপীয় ইউনিয়নে রফতানি বৈচিত্র্যকরণের জন্য সম্ভাব্য শনাক্ত করা, বন্ডেড ওয়্যারহাউসের সুবিধা নিশ্চিত করা, মান যাচাইয়ের কর্তৃপক্ষ ও প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা জোরদার করা, বাণিজ্য খরচ কমানো।

গতকাল পল্টন টাওয়ারে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম কার্যালয়ে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় মূল প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। র‌্যাপিড চেয়ারম্যান ড. এমএ রাজ্জাক বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংবলিত স্যালাইডের মাধ্যমে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন র‌্যাপিডের ড. আবু ইউসুফ, ফ্রেডিক এবার্ট স্টিফিং বাংলাদেশের সাধন কুমার দাস। কর্মশালা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ প্রেসিডেন্ট রেফাতউল্লাহ মিরধা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি তথ্য অহরহ বিভ্রান্ত করতে পারে। এ কারণে যেকোনো সংবাদ তৈরির আগে তথ্য-উপাত্ত ভালোভাবে যাচাই করা প্রয়োজন। জনগণ যেন বিভ্রান্ত না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। অনেক মিডিয়া কোনো ধরনের তথ্য যাচাই না করে ভুল সংবাদ পরিবেশন করে যাচ্ছে। তিনি কথা প্রসঙ্গে মানবাধিকার সংগঠনের কথা উপস্থাপন করেন। সেই মানবাধিকার সংগঠনের নেতার জন্য দুটি দূতাবাস থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। আসলে তথ্য যাচাই-বাছাই না করে এ ধরনের সংবাদ যেকোনো সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে।
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমদানিকৃত পণ্য বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বরং উসকে দিচ্ছে মূল্যস্ফীতি। তবে আগামী ফসল সরবরাহ উজ্জীবিত হলে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। রফতানি বৈচিত্র্যকরণের বিষয়ে তিনি বলেন, রফতানি বৈচিত্র্যময় করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ট্যারিফ পলিসিতে বেশ কিছু সংশোধন করা হয়েছে। আগামীতে নন-গামের্ন্টস পণ্য রফতানিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

পিআরডি চেয়ারম্যান ড. এমএ রাজ্জাক তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার। বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের সর্বমোট রফতানি আয় ছিল প্রায় ৫৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে রফতানি হয়েছে প্রায় ২৫ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা সর্বমোট রফতানি আয়ের ৪৫ শতাংশ। ইইউ থেকে বাংলাদেশের রফতানি আয়ের ৯২ শতাংশ আসে পোশাক খাত থেকে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত এ বাজারে এলডিসি বাণিজ্য সুবিধা পেয়ে থাকবে। সে ক্ষেত্রে ইইউতে রফতানি বৈচিত্র্যকরণ বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ। তিনি তাদের গবেষণা অনুযায়ী উল্লেখ করেন, ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশ ইইউতে কটন পোশাক রফতানিতে শীর্ষস্থান দখল করে আসছে। ২০২২ সালে ইইউ মোট কটন পোশাক আমদানিতে বাংলাদেশের শেয়ার ছিল ৩৪ দশমিক ৭ শতাংশ। একই সময়ে চীনের শেয়ার ছিল প্রায় ১৫ শতাংশ। তবে নন-কটন ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশের শেয়ার ১২ দশমিক ২ শতাংশ। যেখানে চীন সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার নিয়ে এগিয়ে আছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের রফতানি বৈচিত্র্যকরণের অভাবকে দুভাবে চিহ্নিত করা যায়। প্রথমত সার্বিক রফতানি কাঠামোতে তৈরি পোশাকের আধিপত্য। দ্বিতীয়ত তৈরি পোশাকের মধ্যে কটন পোশাকের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা রয়েছে। তিনি জানান, র‌্যাপিড যে গবেষণা করেছে তাতে ৬০০টির বেশি রফতানি সম্ভাব্য পণ্য শনাক্ত করা হয়েছে। এতে নন-কটন রেডিমেড গার্মেন্টস, কৃষি, মৎস্য, প্রকৌশল পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, জুতা ও হোম টেক্সটাইল। পোশাক বহির্ভূত পণ্যের জন্য প্রায় ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে।

আলোচনায় উঠে এসেছে রফতানিকারকদের জন্য শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানি এখনও একটি চ্যালেঞ্জ। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাজারে টিকে থাকার জন্য প্রধান কাঁচামালের শুল্কমুক্ত প্রবেশ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও উচ্চ আমদানি শুল্কের মাধ্যমে রফতানিকে নিরুৎসাহিত করা হয়। সরকার অতি সম্প্রতি শুল্ক ব্যবস্থাকে যৌক্তিক করার জন্য জাতীয় শুল্ক নীতি পাস করেছে। যা রফতানি বিরোধী নীতি দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

ড. এমএ রাজ্জাক বলেন, ইইউ বাজারে রফতানির জন্য আন্তর্জাতিক মান মেনে চলা অপরিহার্য। রফতানিকারকদের বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত সনদ প্রদানের জন্য মান যাচাইকারী কর্তৃপক্ষ ও প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষার সক্ষমতা জোরদার করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, ইইউ রফতানিতে প্রসারিত করতে হলে দেশীয় কার্বন বাজার প্রতিষ্ঠা, কার্বন কমানো নীতি তৈরি অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। কর্মশালায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্ন অত্যন্ত সাবলীল ভঙ্গিতে উত্তর দেন।


সময়ের আলো/আরএস/ 






https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close