মানব কুকুর সেজে হাতিরঝিলের রাস্তায় হাঁটছেন এক ব্যক্তি। আর এক নারী তাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। হাতিরঝিলের এমন একটি দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়া আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি করে। ‘মানব কুকুর’ সেজে পারফর্মিং আর্ট করায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন এর শিল্পীরা।
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলেও তারা মৌখিক ও লিখিতভাবে জানান। রবিবার সন্ধ্যায় তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে তারা দুঃখ প্রকাশ করেন।
এই দুই শিল্পী হলেন- সেঁজুতি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পেইন্টিং ও ড্রয়িংয়ের শিক্ষার্থী। তার সঙ্গে থাকা পুরুষ ব্যক্তির নাম টুটুল চৌধুরী।
ফেসবুক পোষ্টে জানানো হয়, ২৮ ডিসেম্বর তারিখ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হাতিরঝিলে একজন পুরুষের গলায় জড়ি বেঁধে তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এক নারী। মূহূর্তেই ভাইরাল হয় ভিডিওটি।
সোস্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি দেখে অনেকেই তেজগাঁও বিভাগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ DC Tejgaon - DMP (https://www.facebook.com/dctejgaon/) কে Mention করে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
ভিডিওটি তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার মহোদয়ের নজরে আসামাত্রই ভিডিওতে অংশগ্রহনকারী পুরুষ ও নারীকে সনাক্ত করে তাঁর কার্যালয়ে তলব করা হয়।
২৯ তারিখ সন্ধ্যা ০৭.১৮ ঘটিকায় ভিডিওটিতে অংশগ্রহনকারী টুটুল চৌধুরী ও আফসানা হাসান শ্যামলীতে অবস্থিত উপ-পুলিশ কমিশনার (তেজগাঁও বিভাগ) এঁর কার্যালয়ে হাজির হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার মহোদয়কে মৌখিক ও লিখিতভাব তারা জানায়, ২৫.১২.২০১৯ ইং তারিখ বিকেল ০৪.০০ ঘটিকায় হাতিরঝিল থানাধীন রামপুরা ব্রীজ এলাকায় তারা দুজন একটি স্ট্রীট আর্ট পারফরমেন্স করে যা আসলে ১৯৬৮ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ভেল্যি এক্সপোর্ট ও পীটার ওয়েভেলের ‘From the Portfolio of Doggedness’ পারফরমেন্সের পুনরাবৃত্তি।
তাদের পুনরাবৃত্তি পারফরমেন্সের মূল প্রতিবাদ্য ছিল: কালের যাত্রায় মানুষ অগ্রসর হচ্ছে। সে অগ্রযাত্রার ঊর্দ্ধমুখী চলন হিসেবে ১ জন শিল্পী সামাজিক উপাদান মানুষ ও সভ্যতার ধ্রুবক। অন্যজন আতংকিত, অনুসরনরত এবং শীতের প্রকটতায় নিজেকে মানিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
‘From the Portfolio of Doggedness’ পুনরাবৃত্তি পারফরমেন্স ১ ঘন্টাব্যাপী করার পরিকল্পনা করলেও হাতিরঝিল থানা পুলিশের বাধার মুখে ১০-১৫ মিনিট পরে পারফরমেন্স শেষ না করেই তারা হাতিরঝিল ত্যাগ করে। এসময় হাতিরঝিলে আগত দর্শনার্থী/ পথচারীদের কেউ তাদের হাতিরঝিল ত্যাগের দৃশ্য ধারন করে সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে। ফলে তাদের মূল পারফরমেন্স না দেখে হাতিরঝিলে আগত দর্শনার্থী/ পথচারী কতৃক ধারনকৃত ও পরবর্তীতে সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্টকৃত অবাঞ্ছিত দৃশ্য দেখে তাদের সম্পর্কে জনসাধারনের নেতিবাচক ধারনা তৈরী হয়েছে বলে তারা উল্লেখ করে।
‘হাতিরঝিলের মতো জনাকীর্ন উন্মুক্ত স্থানে প্রকাশ্য দিবালোকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং হাতিরঝিল কতৃপক্ষের পূর্বানুমতি বা কোনরকম অবহিতকরণ ব্যতিরেকেই বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিরোধী এ ধরনের পারফর্মেনস কেন করা হলো’- তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার মহোদয়ের এ প্রশ্নের প্রেক্ষীতে তারা দুঃখপ্রকাশ করে এবং পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনার পূনরাবৃত্তি হবে না বলে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানায়।
পাশাপাশি ১৯৬৮ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ভেল্যি এক্সপোর্ট ও পীটার ওয়েভেলের ‘From the Portfolio of Doggedness’ পারফরমেন্সের ড্রেসআপ এবং হাতিরঝিলে তাদের পারফরমেন্সের ড্রেসআপ ও রুচিবোধ তুলনায় এনে কঠোরভাবে ভর্ৎসনা করা হয়।