ই-পেপার বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫
বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫

পাপ থেকে মাফ পাওয়ার সুযোগ বয়ে যায়
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫, ৩:০৯ এএম  (ভিজিট : ১৬৮)
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

পবিত্র রমজানের আগমন হয় ক্ষমা ও মুক্তির আশীর্বাদ নিয়ে। এ মাসে মুমিনের একান্ত ও একমাত্র কাম্য হচ্ছে মহান প্রভুর মার্জনা ও সন্তুষ্টি লাভ করা। ঈমানদার নর-নারীর সারা বছরই কাটে রমজানের ব্যাকুল প্রতীক্ষায়। এ মাসে মুষলধারে বৃষ্টির মতো রাশি রাশি রহমত-বরকত বর্ষিত হতে থাকে মহান রবের পক্ষ থেকে। নিজেকে এ বারিধারায় সিক্ত করার কামনা সব মুমিনের। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোজা পালন করবে, আল্লাহ তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন’ (বুখারি : ১৯০১)। যে ব্যক্তি রমজান পেল কিন্তু নিজের পাপ মোচন করতে পারল না তার চেয়ে হতভাগা নেই।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) মিম্বরে উঠলেন এবং বললেন—আমিন, আমিন, আমিন। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি মিম্বরে উঠছিলেন এবং বলছিলেন, আমিন, আমিন, আমিন। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই জিবরাইল আমার কাছে এসেছিলেন। তিনি বললেন, যে রমজান পেল অথচ তাকে ক্ষমা করা হলো না, সে জাহান্নামে যাবে এবং আল্লাহ তাকে দূরে সরিয়ে দেবেন—বলুন আমিন। আমি বললাম আমিন; যে তার মা-বাবা উভয়কে পেল অথবা তাদের একজনকে পেল অথচ তাদের মাধ্যমে সে পুণ্যের অধিকারী হতে পারল না এবং সে মারা গেল, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে এবং আল্লাহ তাকে দূরে সরিয়ে দেবেনÑবলুন আমিন। আমি বললাম আমিন; যার কাছে আপনার নাম উচ্চারিত হলো অথচ সে আপনার প্রতি দরুদ পাঠ করল না এবং মারা গেল, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে এবং আল্লাহ তাকে দূরে সরিয়ে দেবেন—বলুন আমিন। আমি বললাম আমিন (ইবনে হিব্বান : ১৮৮)

এ হাদিসে রমজান মাসে গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং আল্লাহর কাছে তওবা করার প্রতি বিশেষ তাগিদ রয়েছে। কেননা রমজান রহমত ও মাগফিরাতের মতো পাপ থেকে মুক্তিলাভেরও মাস। রমজান মাসে রোজা রাখার উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, ‘হে মুমিনরা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া (আল্লাহভীতি) অর্জন করতে পারো’ (সুরা বাকারা : ১৮৩)


আর আল্লাহভীতির মূলকথা হলো গুনাহ ও পাপ থেকে বেঁচে থাকা। এ জন্যই রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও তদানুযায়ী আমল করা বর্জন করেনি, তার এই পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (বুখারি : ১৮০৪) অপর হাদিসে এসেছে, ‘অনেক রোজাদার এমন আছে, যাদের রোজা পালনের সার হলো তৃষ্ণার্ত আর ক্ষুধার্ত থাকা।’ (তাবরানি : ৫৬৩৬)

রমজান পাপমোচনের মৌসুম। পবিত্র রমজানের বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে আল্লাহ বান্দার দোয়া কবুল করেন এবং পাপ মার্জনা করেন। যেমন ইফতারের আগমুহূর্ত। এই সময়গুলোতে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি প্রার্থনা করা এবং অতীত পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা আবশ্যক। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না—ন্যায়পরায়ণ শাসক, রোজাদার যতক্ষণ না সে ইফতার করে এবং অত্যাচারিত ব্যক্তির দোয়া।’ (ইবনে মাজা : ১৭৫২)

এ ছাড়া স্বয়ং রোজাও পাপ মার্জনার মাধ্যম। যদি রমজানে পাপ পরিহার এবং অতীত পাপের জন্য আল্লাহর কাছে তওবা করা হয়, তবে রোজা মুমিনের জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায় হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রোজা ঢালস্বরূপ, যতক্ষণ তা ত্রুটিমুক্ত করা হয়’ (নাসায়ি : ২২৩৩)। এই হাদিসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসরা বলেন, রোজাকে ঢালস্বরূপ বলার কারণ হলো তা মানুষকে পৃথিবীতে পাপাচার থেকে রক্ষা করে এবং পরকালে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করে (আরবাউনান-নাবাবিয়্যা : ৫৫)। তাই আসুন! জীবনের সব পাপ ধুইয়ে মুছে সাফ করে ফেলার এ সুবর্ণ সুযোগের সদ্ব্যবহার করি। নতুন করে সাজাই জীবনের রাজপথ।


আরও সংবাদ   বিষয়:  রোজা   রমজান   সওয়াব   রাসুলুল্লাহ (সা.)  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close