ই-পেপার বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫
বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫

ডিমের সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণসহ বিপিআইসিসির ৬ প্রস্তাব
প্রকাশ: সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫, ৭:০৭ পিএম  (ভিজিট : ৩৯২)
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান। ছবি: সময়ের আলো

সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান। ছবি: সময়ের আলো

রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা থেকে সাড়ে ১০ টাকা দরে বিক্রি হলেও খামারিরা ডিম বিক্রি করছেন ৮ থেকে সাড়ে ৮ টাকায়। ফলে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রতিটি ডিমের মূল্য নির্ধারণ করেছে- খামার পর্যায়ে ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছে ১০ টাকা ১৯ পয়সা।

সে হিসাবে প্রতিটি ডিম বিক্রি করে খামারির লোকসান হচ্ছে গড়ে প্রায় ১ টাকা ৬৯ পয়সা থেকে ২ টাকা ১৯ পয়সা। চলতি মাসে ডিমের দাম অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় অনেক খামারি মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন।

সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদ বীটের সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পোল্ট্রি খাতের নেতারা এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি) এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।


নেতারা বলেন, প্রতিবছর ৩ থেকে ৪ বার ডিম-মুরগির দরপতন হচ্ছে, অনেকে সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসছেন। খামারির সুরক্ষা, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে এ পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন প্রয়োজন। এসময় তৃণমূল খামারিদের ঝরে পড়া রোধে ৬টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।

প্রস্তাবগুলো হচ্ছে: ১. স্বল্পসুদে ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, ২. সরকারিভাবে ডিম-মুরগির ‘সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য” নির্ধারণের পাশাপাশি ‘সর্বনিম্ন মূল্য’ নির্ধারণ করা, ৩. কোল্ডস্টোরে ডিম সংরক্ষণের সরকারি বাধা প্রত্যাহার করা, ৪. অফ-সিজনে তৃণমূল খামারিদের জন্য ভর্তুকীর ব্যবস্থা করা, ৫. ফিডের দাম কমানো ডিম-মুরগির উৎপাদন, ৬. সংরক্ষণ ও বিপণন বিষয়ক কৌশলপত্র প্রণয়ন করা।

ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা থেকে সাড়ে ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ঢাকা, ময়মনসিংহসহ পাশ্ববর্তী এলাকায় খামার পর্যায়ে প্রতিটি ডিম বিক্রি হয়েছে গড়ে ৮ টাকা ৫০ পয়সা। অন্যদিকে টাঙ্গাইল ও নরসিংদীসহ অন্যান্য জেলায় বিক্রি হয়েছে গড়ে প্রায় ৮ টাকায়। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রতিটি ডিমের মূল্য নির্ধারণ করেছে খামার পর্যায়ে ১০ টাকা ৫৮ পয়সা। ডিমের দৈনিক উৎপাদন সাড়ে ৪ কোটি পিস ধরলে, বিগত ২১ দিনে খামারিদের লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৯ কোটি থেকে ২০৬ কোটি টাকা। লোকসান সামাল দিতে না পেরে অনেক খামারি মুরগি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন- যা অত্যন্ত আশংকাজনক কারণ। রমজান শেষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত খুললে চাহিদা বাড়বে আর তখন সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হলে দাম বাড়বে।

মসিউর আরও বলেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডিমের দাম কম। পার্শ্ববর্তী দেশে ডিমের দাম কম বলা হলেও প্রকৃত বিচারে কম নয় কারণ তাদের ডিমের দাম ১০ শতাংশ কম হলে ডিমের ওজনও ১৩ শতাংশ কম। তাছাড়া তারা যে মানের ফিড খাইয়ে ডিম উৎপাদন করে সে তুলনায় বাংলাদেশের ফিডের মান অনেক ভাল।


ওয়াপসা-বিবি’র সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার প্রামাণিক বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় বাংলাদেশে উৎপাদিত ডিম অনেক নিরাপদ কারণ তাদের ফিডে এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার ও মিট এন্ড বোনমিল ব্যবহার করা হয় কিন্তু আমাদের দেশে এগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ।

ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ এসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ফিআব) সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবেশি দেশে খামার থেকে ভোক্তার হাত পর্যন্ত পৌঁছাতে দামের ব্যবধান থাকে মাত্র এক টাকা; সেখানে আমাদের দেশে ৩ থেকে ৪ টাকা। তাই ডিমের দাম কমাতে হলে মধ্যস্বত্ত্বভোগীর সংখ্যা কমাতে হবে।

ব্রিডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সাধারণ সম্পাদক শাহ্ ফাহাদ হাবীব বলেন, চলতি মাসে একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চার দামেও পতন হয়েছে। সারাবছর জুড়ে ভারসাম্যপূর্ণ বাজার ধরে রাখা সম্ভব হলে খামারি ও ভোক্তা উভয়ই লাভবান হবেন।

এনিমেল হেলথ কোম্পানিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আহকাব) সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলম বলেন, ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া হলেও এসেছে যতসামান্যই। এখন তো ডিমের চাহিদা কম। তাহলে সরকারের উচিত হবে ডিম রপ্তানি করে খামারিদের লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করা।




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close