ই-পেপার সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫
সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫

টেন্ডারে অস্বচ্ছতা, একে অপরকে দোষারোপ
ঝালকাঠিতে এলজিইডির ব্রিজ নির্মাণে অনিয়ম
প্রকাশ: রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৫, ৫:০৭ এএম  (ভিজিট : ২৪৮)

ঝালকাঠি সদর উপজেলার এলজিইডিতে আয়রন ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের ৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকার টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অনিয়মের বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে অভিযোগ দায়েরের পর প্রকল্প পরিচালক অভিযোগের বিষয়ে জানতে ঝালকাঠি এলজিইডি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে চিঠি দিয়েছেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টরা একে অপরকে দোষারোপ করছেন তারা। আয়রন ব্রিজ পুনর্বাসন (আইবিআরপি) অনিয়ম নিয়ে অভিযোগের তীর নির্বাহী প্রকৌশল দফতরের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী শিপলু কর্মকারের দিকে।

স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মে টেন্ডারের মূল্যায়ন করার কারণে এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলীর কাছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাস্টবিল্ড এ অভিযোগ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি জানতে চেয়ে ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলীকে চিঠি দেন প্রকল্প পরিচালক শরীফ জামাল উদ্দিন অলোক। এরপরই বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। তবে ইতিমধ্যেই অস্থায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত আইবিআরপি প্রকল্প পরিচালক আদনান আকতারুল আজিমকে দুর্নীতির দায়ে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠি সদর উপজেলার দোগলচিড়া বেতরা খালের ওপর এই গার্ডার ব্রিজের টেন্ডার হয় ২০২৪ সালের ১৩ নভেম্বর। ওটিএম পদ্ধতিতে টেন্ডারে অংশ নেয় একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে একই দরপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয় ফাস্টবিল্ড ও ই-স্মার্ট কনস্ট্রাকশন লিমিটেড।

এ বিষয়ে এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, টেন্ডার আইডি-১০৩৩১৭৫-এর দুজন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি দরপত্র দাখিল করেন। তারা দুজনই একই সমান দর দেন। উভয়ের দর ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ৩০৩ টাকা। এখানে টেন্ডারে লক্ষ করা যায় ই-স্মার্ট এলজিইডি থেকে টেন্ডারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া রয়েছে। তা ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন ধরনের কাজ নিয়ে তাদের (নোহা) নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড গোপন করে টেন্ডার ক্যাপাসিটি এ টেন্ডারে দেখায়। এ অবস্থায় মূল্যায়ন বিষয়টির সার্বিক দিক বিবেচনা করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আবেদনে বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান প্রকৌশলী বিষয়টি তদন্ত করে বর্তমান প্রকল্প পরিচালক শরীফ জামাল উদ্দীন অলোককে নির্দেশনা দেন। তাই প্রকল্প পরিচালক অভিযোগের বিষয়ে জানাতে ঝালকাঠি এলজিইডি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে চিঠি দেন। 

যদিও নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম সরকার বলেন, এ চিঠি আমাকে নয়, সরাসরি সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলীর নামে দেওয়া হয়েছে। তার কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) স্যার। কারণ সিনিয়র প্রকৌশলী টেন্ডার কমিটির সভাপতি। প্রকল্প পরিচালকের চিঠির বিষয়টি স্বীকার করে সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী শিপলু কর্মকার বলেন, এই টেন্ডার মূল্যায়নের সব কাজ আমার পূর্বের প্রকৌশলী মো. রাজিউল্লাহ তৈরি করে দুজনের মধ্যে ই-স্মার্টকে সিলেক্ট করে গেছেন। আমি তাতে স্বাক্ষর করেছি মাত্র। তার সব প্রমাণ আমার কাছে আছে। তবে ই-স্মার্টকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি তা জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করে বলেন, যেহেতু বিষয়টি মূল্যায়নের পর্যায়ে, তাই কিছু বলা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, প্রকল্প পরিচালক আমাকে কোন চিঠি দেয়নি। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে। কারণ তিনি নির্বাহী পদে আছেন। চিঠি দেখতে চাইলেও তিনি তা দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে চিঠিতে এই টেন্ডারে স্বচ্ছতা গ্রহণের বিষয় কতখানি তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। 

এদিকে ফাস্টবিল্ড কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী শিপলু কর্মকার ই-স্মার্ট লাইসেন্সের অভিযোগের বিষয়গুলো চাপিয়ে রেখে দুটি টেন্ডারের মূল্যায়ন করে তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত পিডি আদনানের কাছে পাঠান। তিনি একটি গ্রহণ করে আরেকটি রি-টেন্ডার দেন। তাই প্রশ্ন উঠেছে একই লাইসেন্সে ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও একটি গ্রহণ করে আরেকটি কীভাবে রি-টেন্ডার হয়।

এ বিষয়ে বরখাস্ত হওয়া প্রকল্প পরিচালক আদনান মুঠোফোনে বলেন, আমার এই মুহূর্তে চাকরি নেই, সাসপেনশনে আছি। আইবিআরপি প্রকল্পের এ বিষয়টি আমার নলেজে নেই। এ বিষয়ে বর্তমান পিডির সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানিয়ে লাইন কেটে দেন তিনি। 

অপরদিকে ঝালকাঠি এলজিইডির সাবেক সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. রাজিউল্লাহ জানান, গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের টেন্ডারে ই-স্মার্ট ও ফাস্টবিল্ড একই দরদাতা হয়েছিল। আমি শুধু ওপেন করে বদলি হয়ে চলে আসছি। মূল্যায়নের কোনো কাজ আমি করার প্রশ্নই ওঠে না। আমার আসার পর মূল্যায়ন করেছেন বর্তমান প্রকৌশলী। মূল্যায়ন রিপোর্টের কোথাও আমার কোনো স্বাক্ষর নেই। এখন আমার ওপর দায় চাপানো হলে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমি এখনই সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলব। আমি ১২ ডিসেম্বও, ২০২৪ তারিখ ঝালকাঠি থেকে বদলি হয়ে চলে আসি। আর মূল্যায়ন হয়েছে তারপর।




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close