প্রকাশ: রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৫, ৪:৩৩ এএম (ভিজিট : ১৫৪)

ঈশ্বরগঞ্জে মানবেতর জীবনযাপন করছেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি)। গত এক যুগে একটিবারের জন্যও বাড়েনি কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপিদের বেতন। শুধু তাই নয়, গত ৯ মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে তাদের। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ উদযাপন। সিএইচসিপি ও তাদের পরিবারের লোকজনের মাঝে নেই কোনো ঈদের আনন্দ। রমজান মাস প্রায় শেষের দিকে, ঈদুল ফিতর সমাগত। ঈদের আগে আদৌ বেতন-বোনাস হবে কি না তা নিয়ে চরম উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন তারা।
এ ব্যাপারে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাদিয়া তাসনিম মুনমুন বলেন, ডিজি হেলথের অপারেশন প্ল্যান থেকে সিএইচসিপিদের বেতন দেওয়া হতো। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কমিউনিটি ক্লিনিক সহায়তা ট্রাস্টের অধীনে চাকরি স্থানান্তরিত হওয়ায় বেতন দিতে সমস্যা হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাদিয়া তাসনিম মুনমুন আরও বলেন, তবে মাসিক মিটিং আয়োজনের পাশাপাশি নিয়মিত রিপোর্ট প্রদান করা হচ্ছে। অচিরেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
কথা হয় বিখেরুয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি বিজন দেবনাথের সঙ্গে। এসময় তিনি বলেন, ১২ বছর ধরে এক বেতনে চাকরি করতে হচ্ছে। তারপরও ৯ মাস ধরে বেতন বন্ধ রয়েছে যার ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলাবাসীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ১৯৯৭-৯৮ সালে ৪২টি এবং ২০২২ সালে দুটিসহ মোট ৪৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয় ঈশ্বরগঞ্জে। সরকার থেকে প্রতিটি ক্লিনিকে ২২ ধরনের ওষুধ প্রদান করা হয়। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ট্রাস্টের অধীনে সিএইচসিপিদের যোগদান করানো হয়। ট্রাস্টে যোগদানের আগে ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাস এবং চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত মোট ৯ মাস ধরে বেতন বন্ধ রয়েছে। ফলে পরিবার নিয়ে চরম অর্থ সংকটে ভুগছেন সিএইচসিপিরা। তারা অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তার চাপে ঠিকমতো কাজেও মন দিতে পারছেন না।
ঘাগড়াপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার নয়ন মিয়া বলেন, এতদিন ধরে বেতন না পাওয়ার পরও সিএইচসিপিরা নিয়মিত ক্লিনিকে আসছেন। এভাবে মাসের পর মাস বেতন না পাওয়ার বিষয়টি খুবই কষ্টের।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সুজনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম তালুকদার বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের বেতন বন্ধ থাকা অনভিপ্রেত। অবিলম্বে তাদের বেতন-বোনাস প্রদান করে স্বাস্থ্যসেবায় গতি ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সুজনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম তালুকদার।