ই-পেপার বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫
বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫

ক্ষমার চাদরে আবৃত করো প্রভু
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫, ৫:০৬ এএম  (ভিজিট : ১৪০)
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

রহমতের দশক শেষে মাগফিরাতের দশকও বিদায় নিচ্ছে। হাতছানি দিচ্ছে নাজাতের দশক। দেখতে দেখতে একদিন মাহে রমজানও বিদায় নেবে। মূলত রমজান আসে মানুষের আত্মশুদ্ধির জন্য। পাপমুক্তির জন্য। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়ামকে ফরজ করা হয়েছে, যাতে তোমরা ‘তাকওয়া’ অর্জন করতে পারো।’ আরবি তাকওয়া অর্থ আল্লাহভীরু বা খোদাভিরু হওয়া। অভিধানে তাকওয়া হচ্ছে বেঁচে থাকা, মুক্তি পাওয়া, নিরাপদ হওয়া। জীবনের প্রতিমুহূর্তে আল্লাহর অসন্তুষ্টি থেকে বেঁচে থাকার আপ্রাণ প্রচেষ্টাকে তাকওয়া বলে। শেষ বিচারের দিন আল্লাহর আজাব থেকে মুক্তি পেয়ে নিরাপদে জান্নাতে বসবাস করার জন্য যিনি চেষ্টা করেন তাকে বলে মুত্তাকি।

সিয়াম সাধনার মাধ্যমে একজন বিশ্বাসী বান্দা মুত্তাকির স্তরে পৌঁছে যায়। বান্দা যখন রুহের জগতে প্রভুকে প্রভু বলে স্বীকার করে আবার এ জগতেও প্রভুর প্রভুত্ব মেনে নেয়, তখন আর বান্দার নিজের ইচ্ছেমতো চলার কোনো সুযোগ নেই। চলতে হবে প্রভুর ইচ্ছেমতো। কিন্তু মানবদেহে যে নফস নামে আরেক প্রভু আছে, আছে শয়তানি শক্তি, সে তো বান্দাকে আল্লাহর ইচ্ছেমতো চলতে দিচ্ছে না। এভাবেই বান্দা হেরে যায়, নফস জিতে যায়। তখন আর মানবের রুহের জগতে করা ওয়াদা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। আল্লাহ কত দয়ালু! কত মেহেরবান! প্রথমে মনে করিয়ে দেন, রুহের জগতের ওয়াদার কথা। তারপর সে ওয়াদা কীভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, সে পথও দেখিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, সিয়াম সাধনা করলে তুমি মুত্তাকি হতে পারবে। আল্লাহর আজাব থেকে বেঁচে যাওয়ার কৌশল খুব সহজেই শিখে যাবে।

তো বান্দা যখন সিয়াম সাধনা শুরু করে, তখন নফস বলে, খুব পিপাসা পেয়েছে। একটু পানি খেয়ে নাও। বান্দা বলে, সাবধান! সমুদ্রের গভীর অন্ধকারের নিচেও আল্লাহপাক স্পষ্ট দেখতে পান। তাই লুকিয়ে, আড়ালে-আবডালেও পানি খাওয়া সম্ভব নয়। এভাবেই শুরু হয়ে যায় তাকওয়ার প্রশিক্ষণ। নফস বলে, হারাম উপার্জন করো। বান্দা বলে, না। আল্লাহ দেখছেন। এমনিভাবে এক মাসের বিশেষ কোর্স যখন বান্দা সফলভাবে শেষ করেন, তখন তার চেতনায় গেঁথে যায়, আমি যা-ই করছি, আল্লাহপাক সব দেখছেন। এক মাসের ট্রেনিং শেষে বান্দা এমন রুহানি শক্তি অর্জন করেন যে, তখন আর নফস তাকে পরাজিত করতে পারে না। নফসই তার কাছে পরাজিত হয়। এ জন্যই দৃঢ়তার সঙ্গে আল্লাহপাক বলেছেন, তোমাদের এবং পূর্ববর্তীদের ওপর সিয়াম ফরজ করে দিয়েছি, এতে করে তোমরা মুত্তাকি হতে পারবে।

মুত্তাকিরাই দুনিয়া-আখেরাতের সাধক মানুষ। তাদের জন্য বিশেষ বিশেষ সুবিধা আল্লাহপাক রেখেছেন। এক. যারা মুত্তাকি হতে চায়, আল্লাহ তাদের মুত্তাকি হওয়ার কঠিন সাধনাকে সহজ করে দেন। তাদের জন্য এমন জায়গা থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন, যা তাদের কল্পনা করাও সম্ভব নয় (সুরা তালাক : ২-৩)। দুই. হে বিশ্বাসীরা! যদি তোমরা মুত্তাকি হও, তা হলে তোমাদের প্রজ্ঞা দান করা হবে। তোমরা বুঝতে পারবে দুনিয়া-আখেরাতের জন্য কোনটি আসলেই ভালো আর কোনটি ভালো নয়। তোমাদের গুনাহগুলো মুছে দেব। ক্ষমার চাদরে তোমাদের জড়িয়ে নেব (সুরা আনফাল : ২৯)। তিন. যদি তোমরা ধৈর্য ধর এবং মুত্তাকি হও, তা হলে দুনিয়া-আখেরাতে কেউ তোমাদের কোনো ধরনের ক্ষতি করতে পারবে না (সুরা আলে ইমরান : ১২০)। রমজানের এই সময়গুলো হলো অনুতাপের, অনুতপ্তের অনলে নিজেকে জ¦ালানোর সময়। হে প্রভু! মাগফিরাতের এই দশকে ক্ষমার চাদরে আবৃত করো আমাদের।

লেখক : প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close