ই-পেপার বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫
বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫

প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের পুষ্টি জোগাতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫, ৩:১৫ এএম  (ভিজিট : ১৬২)
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন ও ঝরে পড়া রোধে দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকাগুলো গুরুত্ব দিয়ে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালুর নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকার ৩১ লাখ শিক্ষার্থীকে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হবে। স্কুল ফিডিংয়ের আওতায় শিক্ষার্থীদের জন্য দুধ, ডিম, মৌসুমি ফল, কলা, ফর্টিফাইড বিস্কুট, কেক ও বনরুটি রয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে অতিদরিদ্র ১৫০ উপজেলার ১৮ থেকে ১৯ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।

জানা গেছে, স্কুল ফিডিং প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আগামী ২৩ মার্চ উপস্থাপন করা হবে। ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি’ নামে প্রকল্পটিতে খরচ ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, দারিদ্র্যপ্রবণ ১৫০টি উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি সম্পর্কে সচেতনতায় ১৯২টি ব্যাচে প্রায় ১৯ হাজার ৭১৯ জন প্রধান শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

সূত্র বলছে, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা স্কুলে গেলেই ফর্টিফাইড বিস্কুট, কলা বা মৌসুমি ফল, বান, ডিম ও ইউএইচটি দুধ দেওয়া হবে। এ প্রকল্পের অধীনে শুধু খাবারের প্যাকেজেই ব্যয় হবে ৫ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা। ২০২৫ সাল থেকে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। চার বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের অধীনে ৫৮ কোটি টাকার বেশি হ্যান্ডওয়াশ কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। স্কুল ফিডিংয়ের জন্য আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ৩০০ জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। এসব জনবলের জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ২২ কোটি টাকা।

তথ্যমতে, শিক্ষায় বিনিয়োগ ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ দেশে স্কুল মিল কর্মসূচি চালু রয়েছে। স্কুল মিল কর্মসূচিকে সর্বজনীন করার মাধ্যমে শিক্ষায় সব ধরনের বৈষম্য নিরসন, শিক্ষার্থীদের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করা এবং শিখনফল ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নকে গতিশীল করার লক্ষ্যে জাতীয় স্কুল মিল নীতি ২০১৯ প্রণয়ন করা হয়। এ স্কুল মিল নীতিতে ৩০ লাখের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অন্তত ৩০ শতাংশ ক্যালরি ও ৫০ শতাংশ মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্টের চাহিদা পূরণে সক্ষম দুপুরের খাবার সরবরাহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে শিক্ষার্থীদের পুষ্টি চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। অধিকাংশ খাদ্যসামগ্রী স্থানীয়ভাবে কেনা হবে বিধায় স্থানীয় পর্যায়ের অর্থনীতি গতিশীল হবে, প্রকল্প এলাকার দারিদ্র্যের মাত্রা কমবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, স্কুল ফিডিং কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা, প্রদেয় খাবারের পুষ্টিমান, ব্যয় ইত্যাদি বিবেচনায় স্বল্প মেয়াদে সপ্তাহের পাঁচ দিন উচ্চ পুষ্টিমান সম্পন্ন ফর্টিফাইড বিস্কুট, বান, পাস্তুরিত দুধ, ফল ও ডিমের সমন্বয়ে গঠিত প্যাকেটজাত করা খাবার সরবরাহ করা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মিরাজুল ইসলাম উকিল বলেন, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে ও ঝরে পড়া রোধে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। অপেক্ষাকৃত দরিদ্র এলাকার প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা এ সুবিধা পাবেন।

বাংলাদেশে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি ২০০১ সালে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) সহায়তায় শুরু হয়। ২০১০ থেকে ২০২২ সালে ‘দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচি’ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। এরপর ৪৯২টি উপজেলা ও ২১টি শিক্ষা থানার প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি অর্থায়নে ‘প্রাইমারি স্কুল মিল’ প্রকল্প প্রস্তাবিত হয়, যার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা ১৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকা।

এ প্রকল্পের অধীনে খিচুড়ি রান্না শিখতে কর্মকর্তাদের বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি বিতর্ক সৃষ্টি করে। একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন না পেয়ে, ‘কার্যকর বিকল্প ব্যবস্থা’ গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

২০২৫ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি’ নামে নতুন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ৫ হাজার ৪৫২ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয়ে ডিপিপি প্রক্রিয়া পাঠানো হয়। সবশেষ প্রকল্পটি আগামী ২৩ মার্চ একনেকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close