ই-পেপার বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫
বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫

দলীয় কোটায় দুস্থদের চাল
প্রকাশ: বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫, ৩:৪১ এএম  (ভিজিট : ১৩০)
ছবি: সময়ের আলো

ছবি: সময়ের আলো

অসহায়, ভূমিহীন এবং কর্মহীন ব্যক্তির পরিবারের প্রধান ও সরকারি অন্য কোনো অনুদান না পাওয়া ব্যক্তিরা হবেন ভিজিএফ (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) কার্ডধারী কিন্তু এ ক্ষেত্রে কার্ড পেতে দুস্থ হওয়ার চেয়ে জরুরি দলীয় লোকের সঙ্গে সখ্য থাকা। আর এ কারণে সরকারের এই প্রকল্প থেকে প্রকৃত দুস্থ লোকের চেয়ে দলীয় লোকই বেশি সুফল পেয়েছেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জয়পুরহাট পৌর এলাকার রাজনৈতিক দলের কোটার ভিত্তিতে ভিজিএফের কার্ড বণ্টনের অভিযাগ উঠেছে। এতে সরকারি বিশেষ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন প্রকৃত অতিদরিদ্র, অসহায় ও দুস্থ পরিবার।

রোববার থেকে কার্ড ও চাল বিতরণ শুরু হলেও কার্ড ও তালিকা প্রস্ততের ব্যাপারে জানেন না ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। কার্ড এর তালিকা তাদেরকে না দেখিয়ে বা এ-সংক্রান্ত কোনো সভা না করে ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের শুধু মৌখিকভাবে জানিয়ে এই কার্ড ও চাল বিতরণ করেছেন দফতরের সংশ্লিষ্টরা। এদিকে পৌর প্রশাসক দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে তাদের তালিকামতো চাল বণ্টন করা হয়েছে বলে জানান।

জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে গরিব ও দুস্থদের জন্য সরকারি ৪৬.২১ টন ভিজিএফের চাল বরাদ্দ আসে। এসব চাল ৪ হাজার ৬২১টি কার্ডের বিপরীতে জনপ্রতি ১০ কেজি করে বিতরণ করা হবে। এ লক্ষ্যে গত সপ্তাহ থেকে ওয়ার্ডভিত্তিক বরাদ্দ বণ্টনের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা তালিকা প্রস্ততির উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। পৌর পরিষদের উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ‘কোটার’ ভিত্তিতে কার্ড বণ্টনের দাবি করেন। চাপে রাজনৈতিক দলের নেতাদের দাবি মেনে নেয় পরিষদের দায়িত্বশীলরা। ৪ হাজার ৬২১টি কার্ডের মধ্য থেকে বিএনপির গোলজার গ্রুপ ১ হাজার ৬০০, বিএনপির ওহাব গ্রুপ ৪৫০, জামায়াত ৪৫০ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ৩৮০টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কার্ড কোটায় হাতিয়ে নেয়।

জয়পুরহাট পৌর এলাকার শান্তিনগর মহল্লার শিরিন আক্তার, ওমর ছিদ্দিক বিপ্লব, চিনিকল সুইপার কলোনির নন্দলাল, চিত্রাপাড়ার বান্না, প্রফেসরপাড়াসহ অনেকেই বলেন, ভিজিএফের চাল বিতরণের খবর আমরা জানি না। কীভাবে দিচ্ছে তাও জানি না। শুনলাম দলীয়ভাবে বিতরণ করা হচ্ছে। আমাদের তো কেউ নেই কীভাবে চাল পাব বলতে পারছি না।

জয়পুরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ ওহাব বলেন, আমার বরাদ্দকৃত কার্ড বিতরণের জন্য দেওয়া হয়েছে। কতটি কার্ড দেওয়া হয়েছে এ বিষয়টি জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। জয়পুরহাট জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি হাসিবুল আলম লিটন বলেন, আমাদেরকে ৪৫০টি কার্ড দেওয়া হয়েছে। পৌর জামায়াতের দায়িত্বশীলদের কার্ডগুলো দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক হাসিবুল হক সানজিদ বলেন, আমরা ৫০০ কার্ড চেয়েছিলাম। পৌরসভা থেকে আমাদেরকে ৩৮০টি কার্ড দেওয়া হয়েছে।

জয়পুরহাট পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মমিনুল ইসলাম, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমিন ও ১ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের উপ-পরিচালক লায়লুন নাজমা বেগমসহ ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ভিজিএফ চাল বিতরণের কথা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে আমাদেরকে জানিয়েছেন, তবে এ-সংক্রান্ত কোনো সভা করা হয়নি। দুস্থদের তালিকা চাওয়া হইলে আমাদেরকে কোনো তালিকাও দেখানো হয়নি।

রাজনৈতিকভাবে কার্ড বণ্টনের কথা আমরা কিছুই জানি না। কার্ড বণ্টনের তালিকাতে আমরা স্বাক্ষর করব না বলেও জানিয়েছেন অনেক দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

জয়পুরহাট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবদুল করিম বলেন, দুস্থদের জন্য সরকারি ৪৬.২১ টন পৌরসভার জন্য চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তালিকা প্রস্তুত পৌরসভা থেকে তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। দলীয়ভাবে তালিকা প্রস্তুতের ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। পৌরসভায় এসেছি ঘটনাটি তদন্ত করা হবে।

জয়পুরহাট পৌরসভার প্রশাসক ও উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) স্থানীয় সরকার মোহা. সবুর আলী বলেন, ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের তালিকামতে দুস্থদের চাল দেওয়া হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক তালিকাতে কার্ড দেওয়া হয়নি বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close