ই-পেপার বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫
বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫

যুগ পেরোয়, সেতু হয় না
প্রকাশ: বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫, ৩:৩৩ এএম  (ভিজিট : ৮৬)
 ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া চেত্রা নদীর ওপর সেতু। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া চেত্রা নদীর ওপর সেতু। ছবি: সংগৃহীত

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া চেত্রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তি কাটছেই না ১৫ গ্রামের লাখো মানুষের। এই হাওর ও নদীবেষ্টিত জনপদবাসীর নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা ৭০০ ফুট বাঁশের সাঁকো।

এই অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা কেন্দ্র অরুয়াইল বাজারে যাতায়াতে অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়ন ছাড়াও ভৈরব এবং বাজিতপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষও এই সাঁকো ব্যবহার করেন। চেত্রা নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে চিকিৎসা, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত স্থানীয়রা। বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় নানা দুর্ঘটনা।

স্থানীয়দের মতে, বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে কখনোই মেলেনি সেতুর দেখা। বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতার পালাবদলে জনপ্রতিনিধিদের ভাগ্যের বদল ঘটলেও স্থানীয়দের ভাগ্য যেমন ছিল তেমনই রয়ে গেছে। ভুক্তভোগী নদী ও হাওর পাড়ের বাসিন্দারা এখানে সেতুর অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন যুগের পর যুগ ধরে।

এ প্রসঙ্গে সরাইল এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুর রহিম বলেন, গত বর্ষা মৌসুমে এখানে সেতু নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই করে গেছে কর্তৃপক্ষ। এর বেশি কিছু জানা নেই আমার।

এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, এই বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে ১৫ গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত। ইতিমধ্যে দুবার প্রকল্পের পরিচালক সরেজমিন এসে দেখে গেছেন। অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। কিন্তু আশানুরূপ অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে রানীদিয়া গ্রামের রহমত আলী ও মজর মিয়া প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রথমে অরুয়াইল বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া চেত্রা নদীতে বিশাল একটি সাঁকো নির্মাণ করেন। এরপর থেকে প্রতি বছরের নভেম্বর মাসে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ করে এই স্থানে সাঁকো নির্মাণ করা হয়। শুষ্ক মৌসুমে প্রায় সাত মাস স্থানীয় লোকজন সেই সাঁকো দিয়েই পারাপার হন। জুনের মাঝামাঝি সময়ে বর্ষার পানি এলে সাঁকোটি আবার ভেঙে ফেলা হয়।

কথা হয় রানীদিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও শিক্ষক আকতার হোসেনের সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, নদীর দক্ষিণ পাড়ের গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের ইউনিয়ন সদরে অবস্থিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, বাজার ও ইউনিয়ন পরিষদসহ উপজেলা সদরের যাতায়াতের জন্য এই বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিতে হচ্ছে। প্রথম দর্শনেই দীর্ঘ এই সাঁকো দেখে দূর-দূরান্তের লোকজন আশ্চর্য হন। বছরের সাত মাস ১৫ গ্রামের লাখো বাসিন্দা এই সাঁকো ব্যবহার করেন।

সাঁকো পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রানীদিয়া গ্রামের নূর ইসলাম বলেন, প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে অন্তত দুই থেকে আড়াই হাজার লোক যাতায়াত করেন। বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বহন ও শিক্ষার্থীদের জন্য পারাপার ফ্রি থাকলেও অন্যদের কাছ থেকে পারাপারের ক্ষেত্রে পাঁচ টাকা আদায় করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আসিফ ইকবাল খোকন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল বাসার, সাংবাদিক মনসুর আলী, প্রভাষক মোসলেম উদ্দিন সাগরের সঙ্গে আলাপকালে তারা অভিযোগ করে বলেন, ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে পানির পরিমাপ, সেতু নির্মাণের বাস্তবায়নযোগ্যতা যাচাই করে গেলেও বাস্তবায়নে কোনোই অগ্রগতি নেই।




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close