প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫, ৮:০৬ পিএম আপডেট: ১৮.০৩.২০২৫ ৮:১৪ পিএম (ভিজিট : ২১৫)

প্রতীকী ছবি
মিয়ানমারের বন্দি শিবির (মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তের মায়াওয়াডি-মেসোট অঞ্চল) থেকে ১৯ বাংলাদেশি মুক্তি পেয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে তাদের মুক্ত করা হয়। ১৯ বাংলাদেশি মঙ্গলবারই থাইল্যান্ড হয়ে বাংলাদেশ আসার কথা রয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তার স্বার্থে এই ১৯ জনের নাম ঠিকানা প্রকাশ করা যাচ্ছে না। এই নিয়ে মোট ২২ জন বাংলাদেশি মিয়ানমারের বন্দি শিবির থেকে মুক্তি পেয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত অর্থ কামানোর লোভে এই বাংলাদেশিরা দুবাই থেকে থাইল্যান্ড যান। পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তের মায়াওয়াডি-মেসোট অঞ্চলের বন্দি শিবিরে নিয়ে যান এই বাংলাদেশিদের।
জানা যায়, এ বন্দি শিবিরগুলো মূলত মিয়ানমারে অবস্থিত। সেখানে প্রায় ৩০টি বন্দি শিবির রয়েছে। থাইল্যান্ড-মিয়ানমার যৌথ বাহিনী অতি সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে এরকম ৪/৫টি বন্দি শিবির গুড়িয়ে দিয়েছে। এসব বন্দি শিবিরে আইটি খাতের লোকজনদের অতিরিক্ত অর্থ কামানোর লোভ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর জোরপূর্বক কাজ করানো হয়, অনেক সময় টার্গেট পূরণ করতে না পারলে নির্যাতন করা হয় এবং এসব বন্দি শিবির এলাকা থেকে কাউকে বাইরে বের হতে দেওয়া হয় না।
এর আগে এমন একটি বন্দি শিবির থেকে একজন বাংলাদেশি পালিয়ে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে এসে আশ্রয় নিলে তখন বাংলাদেশ দূতাবাস জানতে পারে। ওই বাংলাদেশি প্রায় এক মাস ইয়াঙ্গুনে আশ্রয় নেওয়ার পর বাংলাদেশ দূতাবাসের কূটনৈতিক তৎপরতায় দেশে ফেরেন। এরপর অন্য বাংলাদেশিদের উদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক চ্যানেলে যোগাযোগ করলে মিয়ানমার সরকার সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানায় যে সীমান্তের মায়াওয়াডি-মেসোট অঞ্চল স্পর্শকাতর এলাকা, সেখানে বাইরের কারোর প্রবেশের অনুমতি নাই। তবে বাংলাদেশ যদি থাইল্যান্ডকে ম্যানেজ করতে পারে তবে থাইল্যান্ড হয়ে বাংলাদেশিরা মুক্তি পেতে পেতে পারে।
পরবর্তী সময়ে মিয়ানমারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস থাইল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি অবগত করে। থাইল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এই বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে থাইল্যান্ড সরকার অনুমতি দেয়। যার ফলে মঙ্গলবার ১৯ বাংলাদেশিকে মিয়ানমারের ওই অঞ্চল থেকে উদ্ধার করে ব্যাংককে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার বিকেলে এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে ১৯ বাংলাদেশি মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চল থেকে ব্যাংককে পৌঁছেন। তাদের সেখান থেকে মঙ্গলবার রাতেই বাংলাদেশ পৌছানোর কথা রয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রে আরও জানা গেছে, এরই মধ্যে মিয়ানমারে অবস্থিত এসব বন্দি শিবির থেকে চীনের প্রায় ৬০০০ নাগরিক, ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ৪০০ জন এবং ভারতের ২৮৫ জন নাগরিকদের উদ্ধার করে নিজ নিজ দেশে পাঠানো হয়েছে।