প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫, ৭:৪৭ পিএম (ভিজিট : ২১০)

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। পুরোনো ছবি
দিল্লি সফরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ড গত সোমবার বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশ তা প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যকে গুরুতর বলে উল্লেখ করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যে প্রতিক্রিয়া (তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যের) জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অবস্থান ওটাই। ওনার (তুলসী গ্যাবার্ড) বক্তব্য গুরুতর।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যের পর অর্ন্তবর্তী সরকার সোমবার রাতে এক বিবৃতির মাধ্যমে জানায়, গ্যাবার্ডের বক্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনামের জন্য ক্ষতিকর। এই জাতির ঐতিহ্যবাহী ইসলাম ধর্মের অনুশীলন বিখ্যাতভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং শান্তিপূর্ণ এবং চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, গ্যাবার্ডের মন্তব্য কোনো প্রমাণ বা নির্দিষ্ট অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে নয়। তারা একটি সম্পূর্ণ জাতিকে বিস্তৃত এবং অযৌক্তিক দৃষ্টিকোণ থেকে চিত্রিত করেছে। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও চরমপন্থার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। কিন্তু আইন প্রয়োগ, সামাজিক সংস্কার এবং অন্যান্য সন্ত্রাসবাদ দমন প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো মোকাবিলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অংশীদারত্বে ক্রমাগত কাজ করে আসছে।
ইসলামি খেলাফতের ধারণার সঙ্গে বাংলাদেশকে ভিত্তিহীনভাবে যুক্ত করা অগণিত বাংলাদেশি এবং তাদের বন্ধু এবং অংশীদারদের কঠোর পরিশ্রমকে ক্ষুণ্ন করে। যারা বিশ্বজুড়ে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং অগ্রগতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশকে ইসলামি খেলাফতের সঙ্গে যুক্ত করার যেকোনো প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা করে। রাজনৈতিক নেতা এবং জনসাধারণের ব্যক্তিত্বদের তাদের বক্তব্য, বিশেষ করে সবচেয়ে সংবেদনশীল বিষয়গুলো সম্পর্কে, প্রকৃত জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা উচিত। ক্ষতিকারক স্টেরিওটাইপগুলোকে শক্তিশালী না করার, ভয় তৈরি করার এবং এমনকি সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ানোর বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত। উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় আমাদের যৌথ বৈশ্বিক প্রচেষ্টার সমর্থনে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তথ্যের ভিত্তিতে এবং সব জাতির সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রতি শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গঠনমূলক সংলাপে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমগুলো ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে। যাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নাই তারা ভারতীয় এসব মিডিয়ার নিউজ দেখলে সত্যি ঘটনা মনে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ড সেখান থেকে ভুল তথ্য পেতে পারেন। বাংলাদেশ সম্পর্কে তুলসী গ্যাবার্ডের জানা-বোঝার ফারাক আছে। যা থেকে তিনি এমন মন্তব্য করতে পারেন।
এরই মধ্যে বাংলাদেশের ওয়াশিংটন দূতাবাস ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলাপ করেছেন। তুলসী গ্যাবার্ডের কাছেও বাংলাদেশের প্রকৃত চিত্র উপস্থাপন করা হবে।