
মঙ্গলবার গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দলটির সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেছেন, আমরা শুরু থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে একতরফা সমর্থন দিয়েছি। কিন্তু সরকার সবার সঙ্গে ইনসাফ না করে বরং গণঅভ্যুত্থানের একটি গোষ্ঠী বা পক্ষের সরকার হতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছে।
তিনি বলেন, যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকারের ৩ জন ছাত্র উপদেষ্টা ছিলো, তাদের একজন পদত্যাগ করে একটি দলের প্রধান হয়েছে, সেক্ষেত্রে বাকিরাও সরকারে থাকার নৈতিকতা হারিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি প্রসঙ্গে রাশেদ বলেন, দল গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় কি পদত্যাগকৃত উপদেষ্টা সম্পৃক্ত ছিলেন না? অবশ্যই ছিলেন। আর ৩ জন ছাত্র উপদেষ্টার একই নেক্সাস। সুতরাং আমরা সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে বাকি ২ জন ছাত্র উপদেষ্টারও পদত্যাগ দাবি করছি। এছাড়া ছাত্ররা যেহেতু দল গঠন করেছে।
এক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী বা সমন্বয়কের কোন অস্তিত্ব বিদ্যমান নেই বলে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে সরকারের সব সেক্টর ও দপ্তর থেকে ছাত্র প্রতিনিধিদের পদত্যাগ করা অতীব জরুরি।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা ওয়াসায় আউটসোর্সিং নিয়োগ নিয়ে গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশিত করা হয়েছে। এটা স্থায়ী নিয়োগের প্রাথমিক ধাপ। ২০২৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যম প্রকাশিত হয়, ‘প্রায় দুই হাজার পাঁচশ আউটসোর্সিং কর্মী ঢাকা ওয়াসায় বিভিন্ন বিভাগ ও পদে কর্মরত আছেন। ওয়াসা তাদের চাকরির সুরক্ষায় বয়স শিথিল করে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগে।’
এক্ষেত্রে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ হলেও পরবর্তীতে স্থায়ী করার সুযোগ আছে। সুতরাং এই নিয়োগ অনৈতিক নিয়োগ। এই নিয়োগের তদন্তসহ সরকারের সব দপ্তরে নিয়োগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি করছি।
রাশেদ বলেন, আমরা মনে করি, রাষ্ট্র সংস্কার করতে হলে সবার আগে উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্গঠন করতে হবে। এই লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্গঠন জরুরি। যেহেতু এই উপদেষ্টা পরিষদে বিতর্কিত ব্যক্তিরা রয়েছে। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হওয়া জরুরি। গণঅধিকার পরিষদ গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও রোডম্যাপ দাবি করছে। আমরা মনে করি, প্রধান উপদেষ্টার সোমবারের বক্তব্য অনুযায়ী ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার জরুরি। এজন্য দরকার জাতীয় ঐক্যমত। কিন্তু উপদেষ্টাদের বক্তব্যে জাতীয় ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান। এসময় উপস্থিত ছিলেন- উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান প্রমুখ।