প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫, ৪:৫১ এএম (ভিজিট : ১৩৪)

আবুল মনসুর আহমদ। ফাইল ছবি
আবুল মনসুর আহমদ সাংবাদিক, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, সাহিত্যিক। ১৮৯৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের ধানিখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আবদুর রহিম ফরায়জী এবং মাতা মীর জাহান বেগম। তিনি ১৯১৭ সালে নাসিরাবাদ মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক, ১৯১৯ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯২১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। এরপর তিনি ১৯২৬ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত কলকাতা রিপন ল কলেজে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং বিএল পাস করেন। এ বছরেই তিনি ময়মনসিংহে আইনব্যবসা শুরু করেন এবং সেখানে তিনি ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত তার পেশায় নিয়োজিত থাকেন।
তিনি একজন পেশাদার সাংবাদিক ছিলেন। তিনি যেসব সাময়িক পত্রিকায় কাজ করেন, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সোলতান, মোহাম্মদী, দি মুসলমান, কৃষক, নবযুগ ও ইত্তেহাদ। রাজনীতিতেও আবুল মনসুর আহমদের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি খেলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
১৯৩৭ সালে নির্বাচনে কৃষক প্রজা পার্টি যথেষ্ট ভালো ফল করে এবং এ পার্টির নেতা একে ফজলুল হক আশা করেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস বাংলায় একটি কোয়ালিশন সরকার গঠনে সমর্থন পাওয়া যাবে। কিন্তু কংগ্রেস কৃষক প্রজা দলের সঙ্গে কোয়ালিশন সরকার গঠনে রাজি হয়নি। তখন ফজলুল হক মুসলিম লীগের সঙ্গে কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে বাধ্য হন। এ ঘটনার ফলে তিনি কংগ্রেসের সদস্যপদ ত্যাগ করেন এবং মুসলিম লীগের রাজনীতির প্রতি ঝুঁকে পড়েন। ১৯৪০ সালের মার্চ মাসে লাহোরে ভারতের মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাস ভূমির দাবি করা হয়। ১৯৪৯ সালে আবুল মনসুর আহমদ আওয়ামী মুসলিম লীগ দল প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী মুসলিম লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনি কর্মসূচি ২১ দফার অন্যতম প্রণেতা ছিলেন।
১৯৫৫ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পূর্ববঙ্গ পরিষদের সদস্যদের ভোটে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের যুক্তফ্রন্ট সরকারের শিক্ষামন্ত্রী এবং ১৯৫৬-৫৭ সালে বণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান কর্তৃক সামরিক শাসন জারি হওয়ার পর তিনি কারারুদ্ধ হন এবং ১৯৬২ সালে মুক্তি পান।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : আয়না ও ফুড কনফারেন্স সত্যমিথ্যা, জীবন ক্ষুধা ও আবে-হায়াৎ, আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর, শের-ই-বাংলা থেকে বঙ্গবন্ধু এবং আত্মকথা।
সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার, স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৯ সালের ১৮ মার্চ তিনি মারা যান।