প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫, ৪:০৭ এএম (ভিজিট : ২০৪)

ভক্তদের ভালোবাসায় উচ্ছ্বসিত হামজা দেওয়ান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের ফুটবল দেখছে দিন বদলের স্বপ্ন। যে স্বপ্নে আলোবর্তিকার ভূমিকায় ইংলিশ বংশোদ্ভূত বাঙালি ফুটবলার হামজা দেওয়ান চৌধুরী। বাংলাদেশি পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পর সোমবার প্রথম শেকড়ের মাটিতে পা রাখেন শেফিল্ডের এই ফুটবলার। এর আগেই সিলেটে তার আগমন উপলক্ষে ঘটা করে তার বাড়ি সাজানো হয়েছিল বর্ণিল সাজে। তাই হামজার আগমন যেন উৎসবেই পরিণত হয়। সেই উৎসবে শুধু ফুটবলপ্রেমীরাই নন, সাধারণ মানুষও হামজাকে একঝলক দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি। যে কারণে তার পৈতৃক বাড়িতে নামে জনতার ঢল। সেখানে একসমুদ্র মানুষের উপস্থিতিই যেন পুরো বাংলাদেশের পরিচায়ক।
জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিতে সোমবার সকালে বাংলাদেশে এসে পৌঁছান হামজা। বেলা পৌনে ১১টায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ খেলা এই ফুটবলার। মা, স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফুটবলার হিসেবে পা রাখেন নিজের শেকড়ের মাটিতে। এ সময় হামজাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেন বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাত নির্বাহী সদস্য। ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার পরপরই বাফুফে কর্তারা তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। তাদের সঙ্গে ছিলেন হামজার বাবা মোর্শেদ দেওয়ান চৌধুরী।
হামজাকে একনজর দেখতে সোমবার সকাল থেকেই বিমানবন্দরের বাইরে সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। কেউ হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে, কেউবা কেবল প্রিয় তারকাকে স্বচক্ষে দেখার জন্য অপেক্ষায়। শুধু সমর্থকরাই নন, বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আসা এই ফুটবলারকে কাছ থেকে দেখতে ভিড় করেছেন গণমাধ্যমকর্মীরাও। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সামনে এলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় খুব বেশি কিছু বলতে পারেননি তিনি। পরে আবার লাউঞ্জের ভেতরে চলে যান। এরপর সরাসরি চলে যান হবিগঞ্জের বাহুবল থানার স্নানঘাট গ্রামে। যেখানে হামজার আগমন উপলক্ষে আগে থেকেই পুরো এলাকায় উৎসব বিরাজ করছিল।
আরও পড়ুন:
ভারতের বিপক্ষে ‘সাউথ এশিয়ান ডার্বি’ জিততে চান হামজাগ্রামে পৌঁছানোর পর তাকে সংবর্ধনা দেন স্থানীয়রা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তারকা ফুটবলার হামজা চৌধুরী ও হবিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শেখ সুজাত মিয়া। এ সময় হামজা চৌধুরী সিলেটি ভাষায় বলেন, ‘আপনারা সব যে আইছইন আমারে দেখবার লাগি, আমার ভালা লাগছে।’ পরে তিনি ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগানও দেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাকিবের সঙ্গে তার চলমান তুলনা নিয়ে হামজা বলেন, ‘সাকিব একজন মেগাস্টার, এত বছর ধরে বৈশ্বিক পর্যায়ে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন, আমি কমপেয়ার করতে চাই না। আমি মনে করি না এখনও সেখানে গিয়েছি।’ ছেলের আগমনে আপ্লুত তার বাবা মোর্শেদ দেওয়ান চৌধুরীও। তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‘আজ আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের দিন। খুব ভালো লাগা কাজ করছে।’
এদিকে হামজা চৌধুরী ও তার পরিবারের নিরাপত্তাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করছে বাফুফে। আগামী ২০ মার্চ ভারতের বিপক্ষেএশিয়ান কাপ বাছাইয়ে খেলতে জাতীয় দলের সঙ্গে দেশ ছাড়বেন তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হবে তার।