প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫, ২:০৭ এএম (ভিজিট : ১৮৬)

সলপের ঘোলের স্বাদ নিচ্ছেন দেশের নানা প্রান্তের মানুষ। ছবি: সময়ের আলো
দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর প্রবাদ আছে। কিন্তু সলপের ঘোল-মাঠার ব্যাপারে এই প্রবাদ খাটবে না। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার সলপের ঘোলের স্বাদ ছাড়িয়ে যায় দুধকেও। যার খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। স্থানীয় খামারিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা দুধ নির্দিষ্ট সময় জ্বাল দিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় সুস্বাদু এ পানীয়। এখানকার ঘোলের পাশাপাশি মাঠারও বেশ সুনাম রয়েছে।
সোমবার দেখা যায়, স্টেশনের পাশে গড়ে ওঠা ঘোল তৈরির দোকানগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। কেউ বাজার থেকে সংগৃহীত দুধভর্তি ড্রাম গাড়ি থেকে নামাচ্ছেন, কেউ সারি সারি চুলায় বিশেষ পাতিলে জ্বাল দিচ্ছেন শত শত মণ দুধ। আবার কেউবা তৈরি করছেন ঘোল। সবশেষ ক্রেতার কাছে ঘোল, মাঠা, দই, ঘি বিক্রি করছেন তারা।
জানা যায়, পানীয় হিসেবে বাঙালির কাছে ঘোল ও মাঠার এখনও ব্যাপক চাহিদা। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে রমজান মাসে এ চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণ। সিরাজগঞ্জ ছাড়াও সলপের ঘোলের স্বাদ নিচ্ছেন দেশের নানা প্রান্তের মানুষ। এই পানীয় বিক্রি করে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জীবন-জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছেন। সলপ রেলস্টেশন ঘিরে গড়ে ওঠা এই ব্যবসার পেছনের ইতিহাস শতবর্ষের। ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতি বছর বৈশাখ মাসে এখানে আয়োজন করা হয় ঘোল উৎসব। রমজান মাস ছাড়া অন্য সময়ে ১০০-২০০ মণ ঘোল-মাঠা বিক্রি হলেও রমজানে প্রতিদিন বিক্রি হয় ৪০০-৫০০ মণ ঘোল ও মাঠা। প্রতি লিটার ঘোল ১০০, মাঠা ১২০, প্রতি কেজি দই ১৬০ ও প্রতি কেজি ঘি ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কামারখন্দ থেকে আসা মাসুদ রানা জানান, ঘোল ও মাঠা কিনতে সলপ এসেছি। এখানকার ঘোল ও মাঠা একদিকে সুস্বাদু অন্যদিকে দামেও সাশ্রয়ী। তাই প্রতি বছর রমজান মাস এলে এখান থেকে ঘোল ও মাঠা কিনি।
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সলপ ঘোল অ্যান্ড সাদেক খান দই ঘরের স্বত্বাধিকারী আবদুল মালেক খান জানান, ঘোল ও মাঠার ব্যবসা কেবল অর্থ উপার্জনের মাধ্যম নয়। এটি এখন এই অঞ্চলের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। আমাদের তৈরি ঘোল ও মাঠা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করছি। অন্য সময়ের তুলনায় রমজান মাসে ঘোল ও মাঠার চাহিদা বহুগুণে বেড়ে যায়। এ কারণে দোকানে অতিরিক্ত জনবল দিয়ে ক্রেতার চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছি।