প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫, ১:৫৪ এএম (ভিজিট : ২৭৬)

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের লোগো। ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ক কমিশনের দেওয়া প্রস্তাবে ক্ষমতা খর্ব হবে বলে মনে করে ভিন্নমত প্রকাশ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পাশাপাশি নিজেদের যুক্তি তুলে ধরেছে সংস্থাটি। সোমবার ইসি সচিব আখতার আহমেদ নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এমন তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সংস্কার কমিশন সীমানার পুনর্নির্ধারণ কমিশনের কথা বলেছে, আমরা বলেছি যে দরকার নেই। কেবিনেটে আমাদের একটা প্রস্তাব দেওয়া আছে। সেটাই সাফিসিয়েন্ট। আমরা বলেছি গ্রাম শূন্য হয়ে বিদেশে যাচ্ছেন, শহরে আসছেন। এ জন্য শহরমুখী হয়ে যাচ্ছে আসন সংখ্যা। এটা না করে ভোটার, জনসংখ্যা, ভৌগোলিক অবস্থান, আঞ্চলিক অখণ্ডতা বিবেচনা করা উচিত।
এ ছাড়া সংস্কার কমিশন ভোটের ৪৮ ঘণ্টার ভেতরে সার্টিফাই করার কথাও বলেছে। আমরা মনে করি, এটার দরকার নেই। নির্বাচন সম্পর্কে রিটার্নিং অফিসার সন্তুষ্ট না হয়ে তো ফলাফল দিচ্ছেন না। এটা গেজেট হচ্ছে, এটাই সার্টিফিকেশন। এমন কোনো ম্যাকানিজম কী আছে, যে আমরা সার্টিফিকেশন দেব, কী করব? ম্যাকানিজম কী হবে, সেটা তো আবার আরেকটা দিকে যাবে। সংস্কার কমিশন এনআইডির জন্য পৃথক অথরিটির কথা বলেছে।
ইসি সচিব বলেন, এনআইডি কার্ডের বিষয়ে আমাদের অভিমত, সেটা হচ্ছে এনআইডি আমাদের এখানে থাকা বাঞ্ছনীয়। কেননা ২০০৭ সাল থেকে আমাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে এবং স্কিলড করা হয়েছে। তা হলে এটা কেন নেওয়া হবে? বরং এটাকে আরও শক্তিশালী করা যায় কীভাবে, কলেবরটা কী করে বহুমুখী করা যায়, সেটা করতে হবে। আমরা এখন ১৮৩টি প্রতিষ্ঠানকে সেবা দিচ্ছি, সার্ভিসের উপযোগিতা আছে বলেই তো দেওয়া হচ্ছে। ইসির দায়বদ্ধতা ও কমিশনের শাস্তির বিষয়ে সংস্কার কমিশন অবসরের পাঁচ বছর পর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন।
এ বিষয়ে আখতার আহমেদ বলেন, ইসির শাস্তির ব্যবস্থা তো আছেই। শর্ত ভঙ্গ করলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বা অন্যান্য আইন আছে। এটা পরিবর্তন করা কতটুকু বাস্তবসম্মত। একাডেমিক সাইডে বিষয়টা যদি বলি-চাকরি শেষ হওয়ার পাঁচ বছর পর আপনি বললেন আপনি ওই নির্বাচনে শর্ত ভঙ্গ করেছেন। তা হলে পাঁচ বছর পর আমাকে কোর্টে দৌড়াতে হবে ২০ বছর জেলের ঘানি টানার জন্য। এটা যৌক্তিক কি না? আমি ইমিডিয়েট শর্ত ভঙ্গ করেছি, এটা এখনই বলেন। সংস্কার কমিশনে চিঠি পাঠানো হয়েছে, কয়টি বিষয়ে আপত্তি আছে—এই প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আপত্তি বিষয়টির প্রতি আমার আপত্তি আছে। আপত্তি না, আমরা বলেছি আমাদের মতামত। আপত্তি বিষয়টা হলো জোরালো এবং বিষয়টাই ডিফারেন্ট। ইসি ভিন্নমত পোষণ করেছে—নয় কী দশটা হবে। ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজকে চিঠি দিয়েছি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, চিঠিতে মতামত দেওয়ার কারণই হচ্ছে ইসির ক্ষমতা খর্ব হওয়ার জন্য। খর্ব না হলে তো পাঠাতাম না। কমিশনের ভিন্নমত প্রকাশ করার সুযোগ আছে, সেখানে মতামত দিয়েছে। ‘নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কতিপয় সুপারিশের বিপরীতে নির্বাচন কমিশনের মতামত বা অভিমত প্রেরণ’ শিরোনামে চিঠির অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এবং লেজিসলেটিভ সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিবের কাছেও পাঠিয়েছে ইসি।
এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনও আপত্তি জানিয়ে সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন।