প্রকাশ: সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ৭:৪৪ পিএম (ভিজিট : ৯৫)

শনি গ্রহের চারপাশে নতুন ১২৮টি চাঁদের সন্ধান। ছবি: সংগৃহীত
সৌরজগতের সবচেয়ে বেশি চাঁদের অধিকারী গ্রহ হিসেবে সুপরিচিত শনি এবার আরও ১২৮টি নতুন চাঁদের সন্ধান পেয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহটির এ নিয়ে গ্রহটির মোট চাঁদের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৭৪টি।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স ও তাইওয়ানের একদল জ্যোতির্বিজ্ঞানীর ধারণা, এই তথ্য-উপাত্তগুলোকে তদন্ত করলে সৌরজগতের বিবর্তন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত অনেক কিছু জানা যাবে।
সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কারের পর গ্রহটির এত বিপুল সংখ্যক উপগ্রহ কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাদের বিস্ময়ের কারণ হলো, গ্রহটির চাঁদের সংখ্যা সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতির প্রায় তিনগুণ। এ ছাড়া এই সংখ্যা অন্যান্য গ্রহের চারপাশে থাকা চাঁদের সংখ্যার চেয়েও অনেক বেশি।
পৃথিবীর একমাত্র চাঁদটি যেখানে ৩ হাজার ৪৭৫ কিলোমিটার প্রশস্ত, সেখানে ছোট শিলা সদৃশ শনির চাঁদগুলো মাত্র কয়েক কিলোমিটার প্রশস্ত। এগুলো বিশৃঙ্খল এবং এলোমেলভাবে দূরবর্তী কক্ষপথ দিয়ে শনির চারপাশে ঘুরছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
চলতি সপ্তাহে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আর এই নতুন তথ্য-উপাত্ত তাইওয়ানের তাইপেইতে অবস্থিত একাডেমিয়া সিনিকা ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের জ্যোতির্বিদ এডওয়ার্ড অ্যাশটনের নেতৃত্বে একটি গবেষণাপত্রে বর্ণনা করা হবে। একইসঙ্গে গবেষণাটি আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির গবেষণাপত্রেও প্রকাশিত হবে।
শনির চাঁদগুলো আবিষ্কারের বিষয়ে ওয়াশিংটন ডিসির কার্নেগি ইনস্টিটিউশন ফর সায়েন্সের একজন জ্যোতির্বিদ স্কট শেপার্ড শনিকে চাঁদের রাজা বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ ছাড়া কানাডার রেজিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী সামান্থা ললার বলেন, এই আবিষ্কারটি বেশ চমৎকার।
জ্যোতির্বিদ অ্যাশটন ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত, শনির কাছাকাছি স্থানের কিছু অংশ পরীক্ষা করার জন্য হাওয়াইয়ের মাউনা কিয়াতে ৮.২-মিটার সুবারু টেলিস্কোপ ব্যবহার করেছিলেন। ওই পরীক্ষায় ছোট ও অনিয়মিত চাঁদগুলো থেকে হালকা আলো শনাক্ত করেছিলেন তিনি। তবে, সেগুলোর কক্ষপথ সুনির্দিষ্টভাবে ট্র্যাক করতে না পারায় অনেক চাঁদকে চাঁদ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়নি।
আবিষ্কার কৌশলের অগ্রগতির ফলে অ্যাশটন সেই আবিষ্কারগুলো পুনর্বিবেচনা করতে সক্ষম হন। ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত, মাউনা কিয়াতে ৩.৬-মিটার কানাডা ফ্রান্স হাওয়াই টেলিস্কোপ ব্যবহার করে তিনি নতুনভাবে চাঁদগুলোকে আবিষ্কার করেন। ওই সময় টেলিস্কোপের ছবিগুলোকে একত্রিত করে শনির ৬২টি নতুন চাঁদ নিশ্চিত করেছিলেন এই জ্যোতির্বিদ। সর্বশেষ ২০২৩ সালে, টেলিস্কোপে আরও বেশি সময় ব্যয় করে ১২৮টি চাঁদ আবিষ্কার করেছিলেন তিনি।