প্রকাশ: সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ৩:৫৬ পিএম আপডেট: ১৭.০৩.২০২৫ ৪:২০ পিএম (ভিজিট : ১৪২)

ছবি: সময়ের আলো
ঈদের পোশাকে পাকিস্তানি থ্রি পিচের চাপে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ভারতীয় পোশাক। মেহেরপুর জেলার বাজারগুলোতে এবার একচেটিয়া রাজত্ব করছে পাকিস্তানি থ্রি পিস। রমজানের শেষে ঈদকে উপভোগ্য করে তোলার জন্য চলছে হাজারো আয়োজন। অভিজাত বিপণী বিতান থেকে শুরু করে ফুটপাত, সবখানেই ব্যস্ততা।
সোমবার (১৭ মার্চ) বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সারারা, গারারা, পাকিস্তানি নোটস, বিন সাইদ, বিন আহম্মেদসহ বিভিন্ন নামে বাজারে আসা থ্রি পিসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
জরজেট থ্রি পিসের বেশিরভাগ ক্রেতা চাইছেন পাকিস্তানি পোশাক। সুতি কাপড়ের মধ্যে ক্রেতাদের আস্থা দেশীয় পোশাক। গেল কয়েক বছর ধরে ভারতীয় থ্রি পিসের একচেটিয়া বাজার থাকলেও এবার বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। অন্যদিকে পাঞ্জাবী, শিশুদের নানা প্রকার বাহারি পোশাক, জুতা, স্যান্ডেল ও কসমেটিকস দোকানগুলোতে নতুন নতুন মডেলের পোশাকের প্রতি বেশি আগ্রহ রয়েছে শিশু কিশোরদের।
দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি অনুযায়ী পোশাকের বাজার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই বলে মনে করছেন কাস্টমাররা। ছেলেরা ঈদবাজারে জুতসই পাঞ্জাবি কিনছেন। তবে গরমে ঈদ হওয়ায় ছেলে মেয়েরা সবাই সূতি কাপড়ের প্রতি আগ্রহী।
শহরের অভিজাত বিপণী বিতান শপিংমল এমনকি ফুটপাতে উপচেপড়া ভিড়। সকাল থেকে দুপুর ও বিকেল থেকে সন্ধ্যারাত পর্যন্ত রূপ নেয় ক্রেতা ও দর্শনার্থী সমুদ্রে। সকলের উদ্দেশ্য আসন্ন ঈদুল ফিতরের জন্য নতুন পোশাক এবং অন্যান্য অনুষঙ্গ কেনা। গেল বছরের তুলনায় একটু দাম বেশি বলেও দাবী ক্রেতাদের। ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে দরকষাকষির শেষে বাড়ি ফেরার পথে সবার হাতেই থাকছে এক বা একাধিক নতুন কাপড়ে ভরা ব্যাগ।
গাংনী বাজারের হাশেম বস্ত্রালয়ের মামুনুর রশীদ জানান, এই ঈদে জরজেট থ্রি পিসের বেশিরভাগ ক্রেতা চাইছেন পাকিস্তানি পোশাক। এবার নুরানি, সারারা, গারারা, পাকিস্তানি নোটস, বিন সাইদ, বিন আহম্মেদসহ বিভিন্ন নামে বাজারে আসা থ্রি পিসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
গাড়াডোব গ্রামের গৃহবধূ সানজিদা জানান, পরি, পাকিস্তানি, সারারা, গারারা, প্রজাপতিসহ নানা ডিজাইনের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। কাজ ভেদে এসব পোশাকের দাম পড়ছে আড়াই হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা। আরো বেশি দামের পোশাকও আছে। দামের ব্যাপারে জানতে চাইলে ক্রেতারা জানান, গেল ঈদের চেয়ে এবার পোশাকের দাম একটু বেশি। তারপরও কাঙ্ক্ষিত অনুষঙ্গ কিনতে পেরে তারা খুশি বলে জানালেন গাংনীর সেনা সদস্য হাসান।
এদিকে পোশাকের সাথে মিলিয়ে জুতা আর হাল্কা প্রসাধনী কেনার পালা। স্বল্প দামে টেকসই পাদুকা চাচ্ছেন তারা। তবে মেয়েদের একটু বাড়তি কেনাকাটার মধ্যে রয়েছে প্রসাধনী। সাজু গুজু করে মনটা রাঙানোর পাশাপাশি হাতটা রাঙাতে হবে। তাই মেহেদী কেনারও ধুম পড়েছে তাদের। বিভিন্ন কোম্পানির তৈরি মেহেদী বাজারে পাওয়া গেলেও বেশী বিক্রি হচ্ছে রাঙাপরী। সাথে থাকা স্বামী ভাই বন্ধু বা প্রেমিকের পকেট ফাঁকা হলেও মেয়েদের সেদিকে যেন কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। ছেলেরাও সম্মান বাঁচাতে মুখে যেন কুলুপ এঁটেছেন।
মধ্য ও নিম্নবিত্তদের ভরসার স্থান ফুটপাথের বাজারও বেশ জমজমাট। নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের ভিড় ছিল বেশি। কি নেই এখানে? অভিজাত বিপণিতে যা পাওয়া যায় ঠিক একই ধরনের অনুষঙ্গ পাওয়া যাচ্ছে এখানে। কয়েকজন জানালেন, ফুটপাথে সালোয়ার কামিজ ও বাচ্চাদের কাপড়-চোপড় বেশি বিক্রি হচ্ছে। শার্ট ও গেঞ্জি বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য অনুষঙ্গের তুলনায় কম।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল জানান, ক্রেতা বিক্রেতাদের নির্বিঘ্নে কেনা কাটা ও বাড়তি নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।