প্রকাশ: সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ৩:৫৩ পিএম আপডেট: ১৭.০৩.২০২৫ ৪:২৪ পিএম (ভিজিট : ১৬৭)

সুমাইয়া জান্নাত প্রিয়া। ছবি: সংগৃহীত
খুলনায় বিয়ের ফাঁদে ফেলে মামলা ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হয়রানির অভিযোগ উঠেছে সুমাইয়া জান্নাত প্রিয়া নামে ইউটিউবার ও টিকটকারের বিরুদ্ধে। এতে সর্বস্বান্ত হয়েছে কয়েকটি পরিবার।
জানা গেছে, সুমাইয়া জান্নাত প্রিয়ার কাগজপত্র জালিয়াতি করে এফিডেভিটের মাধ্যমে মামলা ও প্রতারণার করে কয়েকটি পরিবারকে সর্বস্বান্ত করেছেন একই প্রিয়া।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মাদরাসা গলি রোড এলাকার বাসিন্দা হানিফ মিয়ার মেয়ে সুমাইয়া জান্নাত প্রিয়া।
প্রিয়ার প্রতারণার ফাঁদে বিজয় ছাড়াও সর্বস্বান্ত হয়েছেন বাদশা, মানিক, শিবলী, জিতু, বিজয় নামে আরও কয়েকটি পরিবার।
ভুক্তভোগী বিজয়ের পরিবারের সদস্যরা জানান, খুলনার ৭ নম্বর ঘাট এলাকায় তরিকুজ্জামান বিজয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় প্রিয়ার। সেই সুবাদে বিভিন্ন সময় মোবাইলে ফোনালাপের মাধ্যমে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের।
তারা আরও জানান, এই পরিচয়ের সূত্র ধরে বিভিন্ন সময়ে বিজয়কে বিভিন্ন জায়গায় টিকটক করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যান প্রিয়া। এ সময় প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে মেলামেশা করেন।
বিজয়ের বাবা আশরাফুজ্জামান চন্দন বলেন, আমার ছেলেকে ব্ল্যাকমেইল করার উদ্দেশে অশ্লীল ছবি তুলে ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করে প্রিয়া। পরবর্তীতে আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমার ছেলে বিজয়কে অপহরণ করে সে।
তিনি বলেন, কয়েকদিন খোঁজাখুঁজির পর বিজয়ের সন্ধান না পাওয়ায় খালিশপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। এরপর খালিশপুর থানা পুলিশ যশোরের মনিরামপুর থেকে বিজয়কে উদ্ধার করে।
জানা গেছে, অপহরণ করে ওই সময় বিজয়কে আটকে রেখে কৌশলে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করে সুমাইয়া জান্নাত প্রিয়া। পরবর্তীতে বিয়েকে কেন্দ্র করে বিজয়ের বাবা আশরাফুজ্জামান চন্দনের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে প্রিয়া। তিনি দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানোর হুমকি দেন।
এদিকে প্রিয়ার চাহিদা মত টাকা না দেয়ায় একই দিনে সোনাডাঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯/১ ধারায় একটি মামলা করেন প্রিয়া। এদিকে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে ধর্ষণকারীর শাস্তির দাবিতে একটি মানববন্ধন করেন প্রিয়া ও তার লোকজন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভোটার আইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন, স্কুল সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট সিভিল সার্জন সার্টিফিকেট ও নাম সংশোধন এফিডেভিটের দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে কয়েকটি পরিবারকে সর্বস্বান্ত করেছে প্রিয়া। এছাড়া ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর এস এম আশরাফুল আলমের সঙ্গে সুমাইয়া জান্না।
এ বিষয়ে সুমাইয়া জান্নাত প্রিয় বলেন, আশরাফুল আলম বাসারের সঙ্গে আমার কোনো বিয়ে হয়নি। বিজয় আমার সম্পর্কে আমি গর্ভবতী হই। স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতির জন্য বিজয়ের বাবার পা ধরেও আমার স্বীকৃতি মেলেনি। এ জন্য মামলা করি।
প্রিয়ার করা মামলার বিষয়ে সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সুমাইয়া জান্নাত প্রিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯/১ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলার আসামি তরিকুজ্জামান বিজয়কে আটক করে জেলে পাঠানো হয়েছিল। মামলার তদন্ত চলছে।