ই-পেপার সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫
সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫

মুকুলের ম-ম ঘ্রাণে ছেয়ে গেছে নওগাঁ
প্রকাশ: সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ২:০০ পিএম  (ভিজিট : ১৫৮)
ছবি: সময়ের আলো

ছবি: সময়ের আলো

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ আমের নতুন রাজধানী হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। আম উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁয় গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার আমের মুকুল সবচেয়ে বেশি এসেছে। মুকুলের ম-ম ঘ্রাণ এখন জেলার বাতাসে। আমের মুকুলের সমারোহ দেখে ভালো ফলনের আশা করছেন আম চাষিরা। মুকুল থেকে মসুর দানার মতো গুটি গুটি আম ফুটছে শুরু করেছে।

স্থানীয় কৃষিবিদরা বলছেন, এখন পর্যন্ত আবহাওয়া আম চাষের অনুকূলে রয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে। এবার গত বছরের চেয়ে ২০০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান বেড়েছে। আশা করা হচ্ছে, গত বছরের চেয়ে এবার ২৫ হাজার মেট্রিক টন ফলন বাড়তে পারে।

অন্যদিকে আমচাষিরা বলছেন, প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী এক মৌসুমে ভালো ফলন হলে পরের বার আমের ফলন কম হয়। সে হিসেবে গত বছর নওগাঁয় আমের ফলন কম হওয়ায় এবার তারা আমের বাম্পার ফলনের আশায় বুক বেঁধে আছেন। বাগানে প্রায় সব গাছেই মুকুল এসেছি। ঘন কুয়াশা থাকলেও শীতের তীব্রতা কম হওয়ায় মুকুলের তেমন ক্ষতি হয়নি। তারপরেও কুয়াশার কারণে মুকুলকে ছত্রাকের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে ছত্রাক-নাশক কীটনাশক স্প্রে করছেন তারা।

ক্ষেত্র বিশেষে ছিটানো হচ্ছে পানি। আমগাছের  গোড়াতেও পানি দিচ্ছেন চাষিরা। এদিকে বাগানে মুকুল আসা শুরু করতেই মৌসুমি বাগান ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ারা মাঠে নেমে পড়েছে। তারা মুকুল দেখে বাগান কেনার জন্য মালিকদের কাছে যাচ্ছেন। তবে এখনো বাগান কেনাবেচা জমে উঠেনি। মুকুলে গুটি বড় হওয়ার পর বাগান কেনাবেচা জমে উঠবে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ জেলায় ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির বাগানে আম চাষ করা হয়েছে। গত বছর এই পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর। গত বছর আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩১ হাজার মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। এবার ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।

নওগাঁর সাপাহার ও পোরশা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আম চাষ হয়। এই দুই উপজেলাতেই প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমির বাগানে এবার আম চাষ হয়েছে। গত শনিবার ও রোববার সাপাহার ও পোরশা উপজেলার বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাগানগুলোতে অধিকাংশ গাছেই ব্যাপক মুকুল থেকে গুটি এসেছে। কোনো কোনো বাগানে শতভাগ গাছে মুকুল থেকে গুটি এসেছে। আবার কোনো কোনো ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ গাছে গুটি এসেছে।

সাপাহার উপজেলার গোডাউনপাড়া এলাকাসহ ২০০ বিঘা জমির ওপর তিনটি আমবাগান রয়েছে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা  আব্দুল মজিদ। তিনি স্থানীয় বাজারে আম বিক্রি ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বাজারে আম বিক্রি করে থাকেন। তিনি বলেন, গত বছর তার বাগানে ৫০-৬০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছিল। এবার এখন পর্যন্ত তার বাগানে ৮০ শতাংশ মুকুল থেকে ৬০শতাংশ গুটি এসেছে।  আশা করছেন, আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে বাকি গাছগুলোতেও গুটি আসবে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত আমের জন্য অনুকূলে আছে। রোদের তাপ কম পেলে  মুকুলে ছত্রাকের আক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেজন্য গাছে ছত্রাকনাশক কীটনাশক স্প্রে করছেন তিনি।

পোরশা উপজেলার আমচাষী হোসেন আলী বলেন, গত বছর শীতের কারণে অনেক লেটে মুকুল এসেছিল। গাছে মুকুল আসতে প্রায় ১৫-২০ দিন লেট হয়েছিল। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়েও অনেক গাছে মুকুল ধরেছিল। তবে সে তুলনায় এবার অনেক আগেই মুকুল এসেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি নওগাঁর উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সাধারণত ধরা হয় দীর্ঘস্থায়ীভাবে তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে আমের মুকুল ধরতে চায় না। তবে এবার জানুয়ারি মাসে দুই-এক দিন করে শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও দীর্ঘস্থায়ী শৈত্যপ্রবাহ ছিল না। গড় তাপমাত্রা প্রায় ২০ ডিগ্রির কাছাকাছি ছিল। এই তাপমাত্রা আমের জন্য অনুকূল। এজন্য আমরা আমচাষীদের ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি।




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close