
ভয়েস অব আমেরিকা। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার ১৩০০ জনেরও বেশি কর্মীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আরও দুটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের তহবিলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত সংবাদমাধ্যমগুলোর মূল সংস্থা এবং আরও ছয়টি ফেডারেল সংস্থা বন্ধ করার জন্য ট্রাম্প নির্দেশ দেওয়ার একদিন পর এ সিদ্ধান্ত আসলো।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার ১৩০০ জনেরও বেশি ভয়েস অব আমেরিকার কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। ভয়েস অব আমেরিকার পরিচালক মাইকেল আব্রামোভিৎজ বলেছেন, তার প্রায় ১৩০০ জন সাংবাদিক, প্রযোজক এবং সহকারীদের সকল কর্মীকে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এর ফলে প্রায় ৫০টি ভাষায় পরিচালিত একটি মিডিয়াকে পঙ্গু করে দেওয়া হলো।
লিঙ্কডইনে দেওয়া এক পোস্টে আব্রামোভিৎজ বলেছেন, “আমি গভীরভাবে দুঃখিত যে— ৮৩ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বহুজাতিক ভয়েস অব আমেরিকাকে নীরব করে দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের লড়াইয়ে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।”
ভয়েস অব আমেরিকার মূল সংস্থা ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়ার (ইউএসএজিএম) পাশাপাশি রাশিয়া ও ইউক্রেনসহ পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে সম্প্রচারকারী রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি এবং চীন ও উত্তর কোরিয়ায় সম্প্রচারকারী রেডিও ফ্রি এশিয়াকে অনুদান দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে।
রয়টার্স বলছে, ট্রাম্পের এই নির্দেশ এমন একটি সংস্থাকে ধ্বংস করার জন্য প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে যা কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোতে নির্ভরযোগ্য সংবাদের একটি বিরল উৎস হিসেবে কাজ করে থাকে।
১৯৪২ সালে নাৎসি প্রচারণা মোকাবিলা করার জন্য প্রতিষ্ঠিত ভয়েস অব আমেরিকা এখন প্রতি সপ্তাহে ৩৬ কোটি লোকের কাছে সংবাদ পৌঁছায়। সংস্থাটিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কর্মী রয়েছে। কংগ্রেসে পেশ করা সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংস্থাটির জন্য ২০২৪ সালে ৮৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার বরাদ্দ ছিল।
ভয়েস অব আমেরিকার সিউল ব্যুরো প্রধান উইলিয়াম গ্যালো রোববার বলেছেন, তাকে কোম্পানির সকল সিস্টেম এবং অ্যাকাউন্ট থেকে লকড আউট করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি যা করতে চেয়েছি তা হলো- সোজাসাপ্টা ও সৎ থাকা এবং সত্য বলা, সে আমি যে সরকারের খবরই কভার করছি না কেন। যদি এটি কারও জন্য হুমকিও হয়, তাহলে তাই হোক।”
পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা সিনহুয়া বলছে, ভয়েস অব আমেরিকা (ভিওএ), রেডিও ফ্রি এশিয়া, রেডিও ফ্রি ইউরোপ এবং অন্যান্য গণমাধ্যমের আউটলেটের শত শত কর্মীকে ছাটাই করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি ইমেইলও করা হয়েছে এসব কর্মীদের। একই সঙ্গে তাদের প্রেস পাস এবং সরঞ্জাম জমা দিতে বলা হয়েছে।