প্রকাশ: শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫, ৩:৫১ পিএম (ভিজিট : ২৩৪)
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত
বিশ্বের ৪৩টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে আগমন ও ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন কূটনীতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা একটি লাল তালিকা প্রস্তাব করেছেন। এই তালিকায় থাকা ১১টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হবে। এই দেশগুলো হলো-আফগানিস্তান, ভুটান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইয়েমেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর, বিভিন্ন দূতাবাস, আঞ্চলিক দফতর ও গোয়েন্দা সংস্থার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা খসড়া তালিকাটি পর্যালোচনা করছেন। এ ছাড়া একটি ‘কমলা’ তালিকাও আছে। এই তালিকায় থাকা ১০টি দেশের নাগরিকদের আংশিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হবে। এ ক্ষেত্রে দেশগুলোর ধনী ব্যবসায়ীরা প্রবেশ করতে পারলেও অভিবাসী বা পর্যটন ভিসায় আসা ব্যক্তিরা পারবেন না। এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো হলো—বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান ও তুর্কমিনিস্তান।
এর আগে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেই একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। সেই আদেশে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরকে কোন কোন দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন বা সীমিত করা প্রয়োজন তা চিহ্নিত করতে বলা হয়। তিনি ৬০ দিনের মধ্যে হোয়াইট হাউসে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। অর্থাৎ, আগামী সপ্তাহেই জমা দিতে হবে এই প্রতিবেদন।
প্রস্তাবিত লাল ও কমলা তালিকার মধ্যে কিছু দেশ ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের সময়ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছিল, তবে অনেক দেশ নতুন। কিন্তু অন্য কয়েকটি দেশের অন্তর্ভুক্তির কারণ স্পষ্ট নয়। উদাহরণস্বরূপ, ভুটানকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাশিয়া থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব একটি ভিন্ন বিষয় সৃষ্টি করে।
প্রস্তাবে একটি খসড়া ‘হলুদ’ তালিকাও অন্তর্ভুক্ত আছে, যেখানে ২২টি দেশকে ৬০ দিনের মধ্যে প্রাপ্ত তথ্যগত ঘাটতি দূর করার জন্য বলা হয়েছে। যদি তারা তা না করতে পারে, তবে তারা অন্য কোনো তালিকায় স্থানান্তরিত হতে পারে। এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো হলো—অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বেনিন, বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, কেপ ভার্দে, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ডোমিনিকা, ইকুয়াটোরিয়াল গিনি, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালি, মৌরিতানিয়া, সেন্ট কিটস ও নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাও টোমে ও প্রিন্সিপে, ভানুয়াতু ও জিম্বাবুয়ে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের তৈরি করা সেই ৪৩ দেশের তালিকা। ছবি: সংগৃহীত
রয়টার্স জানায়, গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের সময়ে বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন ট্রাম্প। সেসব আদেশের মধ্যে যেসব বিদেশি প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছেন, তাদেরকে সার্বিক রেকর্ড ভালোভাবে যাচাইয়ের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এর আগে ২০১৮ সালে যখন প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছিলেন ট্রাম্প, সে সময় সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এসব দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলিম হওয়ায় এ নিয়ে সে সময় বেশ আলোচনা-সমালোচনাও শুরু হয়েছিল। পরে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে সেই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করা হয়।
সাম্প্রতিক এই সম্ভাব্য নিষেধজ্ঞার ব্যাপারে আরও তথ্য জানতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।