
প্রতীকী ছবি
গলার ভেতর ছোট ছোট মশা-মাছি বা পোঁকা ঢুকে যাওয়ার অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। রাস্তায় হাঁটাচলা, বাইরে বা ঘরে থাকা অবস্থায়ও এরকম ঘটনা ঘটতে পারে। এমন ঘটনা বেশ অস্বস্তিতে ফেলে মানুষকে। রোজা অবস্থায় গলার ভেতর মশা-মাছি ঢুকে গেলে রোজা ভাঙবে কিনা, এ নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান অনেকে।
সুবহে সাদিক থেকে নিয়ে সূর্য অস্তমিত হওয়া পর্যন্ত খাবার-পানীয় এবং স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা হলো রোজা। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আর যতক্ষণ না ভোরের সাদা রেখা কালো রেখা থেকে পৃথক হয়ে যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা খাও ও পান করো। তারপর রাতের আগমন পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)
আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের আগেরকার লোকদের প্রতি ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমাদের মধ্যে তাকওয়া বা আল্লাহভীতি সৃষ্টি হয়।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)
রোজা অবস্থায় গলার ভেতর মশা চলে গেলে রোজা ভাঙে না। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, ‘(রোজা অবস্থায়) গলার ভেতর মাছি চলে গেলে এ সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এ কারণে রোজা ভাঙবে না।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা: ৯৮৮৬; আদ্দুররুল মুখতার, ২/৩৯৫)
মৌলিক তিনটি কারণে রোজা ভেঙে যায়। যেমন- খাওয়া, পান করা ও সহবাস। এখানে রোজা ভাঙার কারণগুলো উল্লেখ করা হলো—
১. স্ত্রী সহবাস করা।
২. খাবার গ্রহণ করা।
৩. পানীয় গ্রহণ করা।
৪. ভুলে খাওয়া বা পান করার পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে আবার ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া বা পান করা।
৫. বিড়ি-সিগারেট বা হুঁকা সেবন করা।
৬. কাঁচা চাল, আটার খামির বা একত্রে অনেক লবণ খাওয়া।
৭. এমন কোনো বস্তু খাওয়া, যা সাধারণত খাওয়া হয় না। যেমন—কাঠ, লোহা, কাগজ, পাথর, মাটি, কয়লা ইত্যাদি।
৮. পাথর, কাদামাটি, কংকর, তুলা-সুতা, তৃণলতা, খড়কুটো ও কাগজ গিলে ফেলা।
৯. নিজের থুতু হাতে নিয়ে গিলে ফেলা।
১০. ভুলে স্ত্রী সম্ভোগের পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে আবার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করা।
১১. বৃষ্টি বা বরফের টুকরো খাদ্যনালির ভেতরে চলে যাওয়া।
১২. দাঁত দিয়ে রক্ত বের হলে যদি তা থুতুর চেয়ে পরিমাণে বেশি হয় এবং কণ্ঠনালিতে চলে যায়।
১৩. মুখে পান দিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং এ অবস্থায় সুবহে সাদিক করা।
১৩. কাউকে জোরজবরদস্তি করে পানাহার করানো।
১৪. ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা বা বমি আসার পর তা গিলে ফেলা। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড: ৩, পৃষ্ঠা: ৩৭৫; ফাতওয়া হিন্দিয়া, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ১৯৯; ইমদাদুল ফাতাওয়া, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ১২৭)
এ ছাড়া আলেমরা এ বিষয়ে একমত, হায়েজ বা নারীদের ঋতুস্রাবের কারণেও রোজা ভেঙে যায়।