কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগ দিলে কর্মীদের বেশ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। কেমন চাকরি কিংবা কী ধরণের চাকরি, সেটার উপর নির্ভর কোরে নিয়মের বাঁধন অনেকটাই কড়া থাকে। আর সেই অফিসের নিয়মের ফাঁকফোঁকর নজরে এনেই মোটা অংকের টাকা আদায় করে নিলেন কর্মীরা।
নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট আগে অফিসে আসার নিয়ম জুড়ে দেন বস। টানা তিন বছর চলেছে এমন কড়া নিয়ম। যা মানতে বাধ্যও হয়েছেন কর্মীরাও। এরপর বস পাল্টে যায়, আসেন নতুন একজন। যিনি এসে কর্মীদের জানান অফিসের সব ফাঁকফোকর। আর সেই ফাঁকফোঁকরেই ওভারটাইমের জন্য মামলা করতে মদদ দেন নতুন বস। আর তাতেই কর্মীরা পেয়ে যান ৫৯ লাখ টাকা।
ঘটনা জাপানের এক সরকারি সংস্থার অফিসের। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন অফিসের নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট আগে আসতে বাধ্য করতেন বস। টানা তিন বছর ধরে এমন রীতি অব্যাহত ছিল। পরে অফিসে নতুন বস আসেন। তিনি কর্মীদের সংস্থা থেকে ওভারটাইমের দাবি করার পরামর্শ দেন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, জাপানের বিভিন্ন শহরে সরকারি কর্মীদের দৈনিক মিটিংয়ের ক্ষেত্রে অফিসের নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৫ মিনিট আগে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে এক নির্দেশনা অনুসারে, জাপানের জিন্নান টাউন এবং হোনসু দ্বীপে ১৪৬ জন কর্মী এমন আচরণের শিকার হন। তাদের অফিসের নির্ধারিত সময় সাড়ে ৮টা হলেও ৮টা ২৫ মিনিটে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
তৎকালীন মেয়র হিডিও কোজিমা এই নীতি চালু করেন। এমনকি যারা আসবে না তাদের চাকরি চলে যাওয়ারও হুমকি ছিল। ২০২১ সালের ১ মার্চ থেকে এ নীতি কার্যকর করা হয়। গত বছরের ফেব্রুয়ারি কোজিমা মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপরই কর্মীরা দৈনিক ৫ মিনিট করে আগে হাজিরা দেওয়াকে ওভারটাইম হিসেবে তাদের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। গত বছরের ডিসেম্বরে তারা জাপানের ফেয়ার ট্রেড কমিশনে মামলা করেন। এতে তিন বছরের ওভারটাইমের দাবি করা হয়।
গত বছরের নভেম্বর মাসে কর্মীদের ৫৯ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে জাপান সরকার। তবে এ টাকা এখনো কর্মীদের দেওয়া হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।