প্রকাশ: শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫, ২:৪৪ এএম আপডেট: ১৫.০৩.২০২৫ ২:৪৭ এএম (ভিজিট : ২৯১)

ঈদ যত ঘনিয়ে আসে ততই ব্যস্ততা বাড়ে দর্জির। ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গতকাল তোলা। ছবি: সময়ের আলো
ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে দর্জি ও থান কাপড়ের দোকানগুলো। বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। দর্জিরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন পোশাক তৈরিতে। তবে আগের তুলনায় কাপড়ের দাম ও মজুরিও বেড়েছে বলে জানান ক্রেতারা।
রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জে এখন জমজমাট দর্জি দোকান। সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি টেইলার্স ঘুরে দেখা যায়, একদিকে সেলাই মেশিনের খটখট আওয়াজ আর পাশেই চলছে মাপ অনুযায়ী কাপড় কাটা। ফরমায়েশ নেওয়া হচ্ছে নতুন পোশাকের। বিরতিহীন সেলাই মেশিনের যান্ত্রিক শব্দ বলছে, দম ফেলার ফুরসত নেই কারিগরদের। আর এ ব্যস্ততা চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত। শবে বরাতের পর থেকেই ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পোশাক তৈরির চাপ। ঈদ উপলক্ষে দর্জির দোকানগুলোয় ২০-২২ রমজান পর্যন্ত অর্ডার নেবে বলে জানালেন মালিকরা।
জিনজিরা বাসস্ট্যান্ড রোডের টেইলার্স আল-আমিন, সুরুজ, খোকনসহ কয়েকজন মালিক বলছেন, পছন্দের পোশাকের জন্য রেডিমেড থ্রিপিস ও থানকাপড় কিনে ক্রেতারা পাড়ি জমাচ্ছেন দর্জি দোকানগুলোতে। ক্রেতাদের পছন্দ মতো পোশাক বানাতে দিনরাত দোকান খোলা রেখে কাজ করছেন দর্জিরাও। আবার কোনো কোনো টেইলার্স কাজের চাপ সামলাতে মৌসুমি কারিগর এনেছেন বিভিন্ন এলাকা থেকে।
চুনকুটিয়া গার্লস স্কুল রোডের বিসমিল্লাহ টেইলার্সের মো. সিদ্দিক হোসেন সময়ের আলোকে বলেন, গতবারের মতো এবারও অর্ডার বেশি। ঈদের এই সময়টায় অর্ডার বেশি আসে। রাত জেগে কাজ করতে হচ্ছে। কাজের চাপের কারণে খাওয়া-ঘুমের সময় পাচ্ছি না। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত কাজ এবং জামা-কাপড় ডেলিভারি করি। সবকিছুর দাম বাড়তি, সেই রেশ পড়ে মজুরিতেও।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলা এই ব্যস্ততার সঙ্গে তাল মিলিয়ে জমে উঠেছে থান কাপড়ের বাজারও। উপজেলার কদমতলী, জিনজিরা ও কাঠুরিয়া এলাকায় এখন ভিড় বেশি নারী ক্রেতাদের। দোকানিরা বলছেন, দেশি-বিদেশি নানা ধরনের কাপড় থাকলেও বিদেশি কাপড়ের দাম এবার বেশি বলে জানান ক্রেতারা।
ক্রেতারা বলছেন রেডিমেড পোশাকের চেয়ে বানানো পোশাকের কাপড় ও ফিটিং ভালো হয়, তাই দর্জির দোকানে আসেন অনেকে।
হ্যাপী আক্তার নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘দাম বেশি সবকিছুর। দোকানিরা বলছে তারা বেশি দামে কিনছে। সে জন্য আমাদের কাছ থেকে তো একটু বেশি নেবেই।’
থরে থরে সাজানো নানা রঙ ও ডিজাইনের কাপড়। সুতি, বিনে সুতি, ছাপা, একরঙা, কাতান, সিল্ক, জর্জেটসহ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কাপড়। ভারত থেকে কাপড় না আসায় চীন থেকে আমদানি করা কাপড় এবার বেশি দেখা যাচ্ছে। ফলে কিছু কিছু কাপড়ের দাম ২০-১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
একজন বিক্রেতা বলেন, ‘গতবার ছিল শুধু নেটের মধ্যে এবার কয়েক প্রকারের কাপড় আসছে। ডলারের দাম যেহেতু এবার বেশি, সে জন্য কাপড়ের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।’
কাপড় তৈরি করতে আসা ইব্রাহিম হোসেন জানান, ঈদের সময় সবাই চায় নতুন পোশাক পড়তে। তাই নিজের পছন্দমতো কাপড় গজ আকারে কিনে পছন্দমতো দর্জির দোকানে বানাতে দিই।
নতুন পোশাক অর্ডার দিতে আসা আয়েশা আক্তারসহ কয়েকজন ক্রেতা বলেন, আর কিছুদিন পর আমাদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। বাচ্চাদের নতুন পোশাকের অর্ডার দিতে বাজারে এসেছি। কিন্তু মজুরির যা দাম আমরা তাতে হিমশিম খাচ্ছি। আমরা যারা নিম্নআয়ের মানুষ তাদের জন্য খুবই সমস্যা। পোশাক ও মজুরির দাম বাড়লেও আমাদেরতো আর আয় বাড়েনি।