চলছে পবিত্র রমজান মাস। ফলে সাহরি থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় রোজাদারদের না খেয়ে থাকতে হয়। এ জন্য শরীরের সার্বিক সুস্থতার জন্য সাহরিতে সুষম ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এমন খাবারকে প্রাধান্য দিতে হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক ভোররাতে সাহরিতে কি ধরণের খাবার আপনার শরীরকে ভালো রাখবে।
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারসেহরিতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীর তা থেকে ধীরে ধীরে শক্তি শোষণ করে ও তাড়াতাড়ি ক্ষুধা অনুভব হয় না। ডিম, মাংস, মাছ, বা দই প্রোটিনের ভালো উৎস।
ফাইবারসমৃদ্ধ খাবারফাইবার দ্রুত হজম হয় না, যা দীর্ঘ সময় ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই সেহরিতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন-ওটস, ব্রাউন রাইস বা রুটি খাওয়া উচিত। ফাইবারের কারণে খাবার দীর্ঘ সময় পেটে থাকে, ফলে ক্ষুধা কমে যায় ও শরীরের শক্তি বজায় রাখে।
কলা: কলা শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। পাশাপাশি পেট ভরা রাখে দীর্ঘ সময়। তাই রোজার রাখার নিয়ত করতে সাহরিতে কলা খেতে পারেন।
কাঠবাদামভিটামিন ই, এ, বি১, বি৬, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে কাঠবাদামে। ত্বক ও চুলের সুস্থতা নিশ্চিতের পাশাপাশি মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্র ভালো রাখে কাঠবাদাম। তাই দীর্ঘ সময় রোজায় না খেয়ে থাকার আগে সাহরিতে খেয়ে নিতে পারেন কয়েকটি বাদামও।
পানিপানি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং পানির অভাব শরীরে তৃষ্ণা ও ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয়। তাই সাহরির সময় পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত।
এদিকে রমজানে স্বাস্থ্য ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের গুরুত্ব নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম
টাইমস অব ইন্ডিয়া। এবার তাহলে প্রতিবেদন অনুযায়ী সেহরির খাদ্যতালিকা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক-
সাহরির খাবার কেমন হবেসাহরির খাবার নিয়ে আগে থেকেই পরিকল্পনা থাকা উচিত। রোজায় সুস্থ থাকতে সেহরিতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাশি বড় এক বাটি দুধ, দই বা সয়াদুধ, এক মুঠো লবণ ছাড়া বাদাম ও মৌসুমি একটি ফল রাখতে পারেন। অথবা দুধের সঙ্গে গম বা ওটসভিত্তিক কিছু খাবার, লবণ ছাড়া এক মুঠো বীজও রাখতে পারেন।
এছাড়া মাল্টিগ্রেইন ব্রেড বা ব্রাউন ব্রেড স্লাইসসহ স্ক্র্যাম্বলড ডিম বা পনির, অমলেট বা স্টিমড চিকেন, সসেজ ও এক বাটি রকমারি ফল রাখতে পারেন সেহরিতে। চাইলে অল্প পরিমাণ মাল্টিগ্রেইন ইডিলি-দোসা, সেভিয়ান ইত্যাদি রাখতে পারেন। সঙ্গে চাটনি স্প্রাউট ও ডিম রাখতে পারেন।
রমজানে ক্লান্ত বোধ হয়সাহরি হচ্ছে শেষ রাতে খাবার গ্রহণ করা। এ সময় এমন সব স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত, যা ইফতার পর্যন্ত আপনাকে যথেষ্ট শক্তি প্রদান করবে। খুব কম সংখ্যক মানুষই ইফতারের পর ক্ষুধা নিবারণের জন্য কিছু খাবার খায়, তারপর ঘুমায়। আবার সেহরি এড়িয়ে যায় এবং ইফতার পর্যন্ত ক্ষুধার্ত থাকে।
বেঙ্গালুরুর সাক্রা ওয়ার্ল্ড হাসপাতালের প্রধান ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট প্রাচী চন্দ্র বলেন, মনে রাখতে হবে যে সাহরিতে খাবার খাওয়া উচিত। বিশেষ করে রোজা শুরু হওয়ার আগ সময়ে। রাতে ঘুমানোর আগে খাওয়া বা সাহরির ওয়াক্তে খাওয়া এড়িয়ে চলা পরদিন রক্তে শর্করার তীব্র সমস্যা করে থাকে। আবার মাথা ঘোরা, পানিশূন্যতার মতো সমস্যাও হতে পারে। এ জন্য সাহরির সময় খাবার খাওয়া এবং অবশ্যই তা সঠিক খাবার হতে হবে।