প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫, ১২:৩১ পিএম আপডেট: ১৩.০৩.২০২৫ ১২:৪০ পিএম (ভিজিট : ১৩৩)

লালন উৎসব পরিদর্শনে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান। ছবি: সময়ের আলো
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেউড়িয়ার আখড়াবাড়ীতে আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে লালন স্মরণোৎসব। মরমি সাধক লালন শাহ তার জীবদ্দশায় প্রতিবছর ভক্ত ও অনুসারীদের নিয়ে দোলপূর্ণিমা তিথিতে আখড়ায় স্মরণোৎসব পালন করতেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ৩টার সময় কুষ্টিয়ার লালন একাডেমির হলরুমে আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর দোলপূর্ণিমায় লালনের ভক্ত-অনুসারী ও বাউলেরা অনুষ্ঠান উদযাপন করে আসছেন। তবে পবিত্র রমজানের কারণে এবার এক দিনে শেষ হবে দোলপূর্ণিমা বা স্মরণোৎসব উদযাপন।
এবারের উৎসবে শুধু মূল আচার-অনুষ্ঠান থাকবে। লালন একাডেমির পক্ষ থেকে ১৩ মার্চ সন্ধ্যা ও রাতে বাউল, ভক্ত, ফকিরদের ‘বাল্যসেবা’ দেওয়া হবে। তবে ১৪ মার্চ দুপুরে খেলাফতধারি বাউল ফকিরেরা নিজস্ব উদ্যোগে ‘পূর্ণসেবা’ নেবেন।
এছাড়া থাকছে না কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং লালন মেলা। পর পর দুই বছর রমজানে দোল উৎসব হওয়ায় সাধু-গুরুদের করণ-কারণে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তার পরও সাঁইজীর ধামে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেন অনেকে।
একদিনের এই স্মরণোৎসবকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। তবে এবারের স্মরণোৎসবে বাউল সাধু গুরুদের আগমন তুলনা মূলক অনেক কম।
ফকির লালন শাহ তার জীবদ্দশায় ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে প্রতিবছর চৈত্রের দোলপূর্ণিমা রাতে বাউলদের নিয়ে অষ্টপ্রহরব্যাপী সাধুসঙ্গ উৎসব করতেন। তার মৃত্যুর পরও এ উৎসব চালিয়ে আসছেন ভক্ত-অনুসারীরা। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে লালন একাডেমি তিন দিনের আয়োজন করে আসছে। এবার রমজানের কারণে কালী নদীর পাড়ে গ্রামীণ মেলা ও সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে না।
বাউল সাধক ফকির হৃদয় সাঁই বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে আখড়াবাড়ির ভেতরে সাধুসঙ্গ শুরু হবে। অষ্টপ্রহরব্যাপী সাধুসঙ্গ পরের দিন দুপুরে শেষ হবে। এ সময়ের মধ্যে আমরা সাধু-বাউলেরা তাদের রীতিনীতি মেনে আচার অনুষ্ঠান করব। আমরা বাউল সাধকরা আমাদের মতো করে অষ্টপ্রহরব্যাপী সাধুসঙ্গে মিলিত হব।
লালনের এই ধাম বিশাল আকাশের মত। এখানে আসলে মনটা আমার বিশাল হয়ে যায়। মনে প্রশান্তি আনে। আবার এই অনুষ্ঠান শেষ হলে আবার আগামী অনুষ্ঠানে এখানে আসার জন্য মনটা উদগ্রীব হয়ে থাকবে।
লালন মাজারে থাকা খোদা বক্স ফকির জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমরা গুরুকার্যে বসব। ভোরে সাহরির পূর্বেই আমরা বাল্য সেবার মধ্য দিয়ে আমাদের কার্যক্রম শেষ করব। তবে যদি কেউ দুপুরে থাকে তাহলে তারা নিজেদের কাফেলায় নিজেদের উদ্যোগে পূণ্য সেবা নিবে। আমরা সকালেই সবাইকে বিদায় দিয়ে দেব।
তিনি বলেন, পৃথিবীর সকল ধর্মের মানুষের মাঝে সত্যের বাণী প্রচারের মাধ্যমে আমরা আমাদের মানবতার ধর্ম প্রচার করি। এজন্য কারও ধর্মের মানুষ কষ্ট পাক এটা আমরা চাই না।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান জানান, লালন স্মরণোৎসবের নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ-র্যাব এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।