ই-পেপার শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫
শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫

ইফতারের নামে যৌতুক বন্ধ হোক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫, ৯:০৯ এএম  (ভিজিট : ৩২৮)
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

জীবনের সব পাপ ও অন্যায় থেকে পরিশুদ্ধ হয়ে নতুন করে জীবন শুরু করার মাস রমজান। মুসলমানদের মধ্যে এ মাসের আগমন হয় জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত অর্জনের আশীর্বাদ নিয়ে। এই মাসের বিভিন্ন নেয়ামতের মধ্যে অন্যতম নেয়ামত হলো ইফতার করা। সারা দিন রোজা পালন করে নিজে ইফতার করার পাশাপাশি অন্য রোজাদারদের ইফতার করানোর মধ্যে রয়েছে অফুরন্ত সওয়াব ও বরকত। এ সম্পর্কে হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানে কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে ব্যক্তির গুনাহ মাফ হবে এবং একই সঙ্গে রোজাদার ব্যক্তির সমপরিমাণ সওয়াব সে-ও পাবে।’ সাহাবিরা রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর নবী, আমাদের মধ্যে এমন অনেক লোক আছে যারা অন্যদের ইফতার করানোর সামর্থ্য রাখে না, তারা কী করবে? জবাবে রাসুল (সা.) বলেন, কাউকে পেট ভরে ইফতার করাবে এমন কোনো শর্ত নেই। কেউ কোনো রোজাদার ব্যক্তিকে একটি মাত্র খেজুর বা পানি দ্বারা ইফতার করালেও সে সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে। এতে রোজাদারের সওয়াবের কোনো কমতি হবে না বরং আল্লাহ নিজের রহমতের ভান্ডার থেকে এ সওয়াব প্রদান করবেন।’ (তিরমিজি : ৮০৭)

তবে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় ইফতারি নিয়ে নানা অপসংস্কৃতি চলমান। বিশেষ করে দেশের সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে প্রথম রমজানে, তেরো রমজানের আগে বা শেষ রমজানের আগে ইফতার প্রদানের প্রচলন রয়েছে। এর কোনো যৌক্তিকতা পবিত্র ধর্ম ইসলামে নেই। এতে একদিকে খাবারের অপচয় বাড়ে, অন্যদিকে সামাজিক অসাম্যের রেশও দেখা দিতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে মেয়ের বাবার বাড়িতে ইফতারের চাহিদা পাঠানো হয়। চাহিদামতো ইফতারসামগ্রী না পেলে মেয়েকে কটু কথা বা গালমন্দ শুনতে হয়। যা ইসলাম কোনোভাবেই সমর্থন করে না। তবে কেউ যদি সওয়াবের মনোভাব নিয়ে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে বা আত্মীয় বাড়িতে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী ইফতারসামগ্রী পাঠায় এতে অসুবিধার কিছু নেই। কিন্তু চরম দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি মুসলিম সমাজ ব্যবস্থায় রমজান মাসে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে ইফতারি প্রদান নিয়ে বর্তমানে যে নিয়ম চলমান রয়েছে তা ইসলামের নামে অপসংস্কৃতি ছাড়া আর কিছু নয়।

এই প্রথায় ধনী পিতা কর্তৃক নিজের আদরের মেয়ের প্রতি ভালোবাসা মনে হলেও মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত পরিবারের বাবা-ভাইয়ের জন্য নানা সংটের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আদরের মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে চাহিদামতো ইফতারি দিতে গিয়ে অনেক দরিদ্র পিতা সুদে ঋণ বা ধারদেনা করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেক গরিব পিতা নিজের পরিবারকে অনেক সময় অভুক্ত রেখে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে কার্টন ভর্তি করে ইফতারি পাঠাচ্ছেন মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে। অনেক মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে বলা হয় সেই প্রাচীনকাল থেকে এ প্রথা প্রচলিত। তাই এ প্রথা না মানলে মেয়েকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন পর্যন্ত করা হয়। ইসলামের নামে এসব অপসংস্কৃতি কোনোভাবেই সওয়াবের কাজ নয়। উপরন্তু তা অত্যন্ত গুনাহের কাজ। তাই আমাদের এসব অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো প্রয়োজন। পবিত্র কুরআন ও হাদিসবহির্ভূত কোনো কিছু ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। আর এসব নিঃসন্দেহে সামাজিক অসাম্যের দুয়ার উন্মুক্ত করে দেয়।




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close