পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় রাধানগর হাজী সাহার আলী উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়েন এক তরুণ।
২৩ বছরের এই তরুণের নাম রিফাত বিন সাজ্জাত। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।
আটক যুবকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এরপর বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
ওই নারীকে প্রথমে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। পরে যৌনাঙ্গ, স্তনসহ শরীরের
বিভিন্ন স্থানে চাকু দিয়ে কেটে হত্যা করা হয়। তারপর লাশ রেললাইনে ফেলে
দেওয়া হয়।
ঘটনার প্রেক্ষাপটতাহিরুল প্রতিদিনের মতো ইজিবাইক চার্জে রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ৪টার দিকে উঠে দেখেন ইজিবাইকটি নেই। চিৎকার করলে এলাকাবাসী মোটরসাইকেল নিয়ে চোর ধরতে বের হন।
একপর্যায়ে রাধানগর ডুংডুংগী অধিকারী পাড়ার গোপালের বাড়ির সামনে ধরা পড়ে সেই চোর।
এ সময় দুইজন পালিয়ে গেলেও ধরা পড়েন রিফাত। সে বোদা উপজেলার মাঝগ্রাম এলাকার বাসিন্দা।
তার স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, পালিয়ে যাওয়া দুইজন হলেন রাণীগঞ্জ এলাকার মো. ফরিদুল ইসলাম ও ঠাকুরগাঁওয়ের নামাজপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলম।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত জানিয়েছেন, ১৪ জানুয়ারি তিনি এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে তাকে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেন। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে যৌনাঙ্গ, স্তনসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
হত্যার পর ওই কিশোরীর মরদেহ নিয়ে রেললাইনে ফেলে দেন। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
স্থানীয়রা জানান, আটকের পর রিফাতের মোবাইল ফোনে এক নারীকে বেঁধে রাখার ভিডিও পাওয়া পায়। পরে সেই ভিডিওর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তথ্য পায় পুলিশ।
পুলিশ সুপার জানান, গত ১৪ জানুয়ারি জেলার আটোয়ারী উপজেলার কিসমত এলাকায় রেললাইনে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। হত্যাকাণ্ড হলেও এ ঘটনার সূত্র উদঘটান করতে পারছিল না পুলিশ।
ওই ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। ঠাকুরগাঁওয়ের ভুল্লি এলাকার একটি পরিবার তাদের মেয়ে মনে করে ওই নারীর লাশ নিয়ে দাফন করেন।
পুলিশ সুপার জানান, রিফাত বলেছেন তার মাকে নিয়ে গালি দেওয়ায় ওই নারীকে প্রথমে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। পরে যৌনাঙ্গ, স্তনসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাকু দিয়ে কেটে হত্যা করা হয়। তারপর লাশ রেললাইনে ফেলে দেওয়া হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, রিফাতের বিরুদ্ধে আটোয়ারী থানায় ধর্ষণের পর হত্যা ও চুরির অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে। রোববার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।