
যুক্তরাষ্ট্রের দূত অ্যাডাম বোহলার। ছবি: সংগৃহীত
জিম্মি মুক্তি নিয়ে হামাসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূত অ্যাডাম বোহলারের সরাসরি আলোচনা নিয়ে নিন্দা প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন দূত সাংবাদিকদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের দালাল নয়।
একাধিক মার্কিন ও ইসরায়েলি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
হামাসের সঙ্গে বোহলারের সরাসরি বৈঠক নিয়ে ইসরায়েলি কর্মকর্তার ক্ষোভ প্রকাশের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া তিনি ব্যক্ত করেন। তিনি বুঝতে পারেন— কেন ইসরায়েল এই আলোচনা নিয়ে ক্ষুব্ধ।
অ্যাডাম বোহলার জানান, এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমারের সঙ্গে কথা বলেছেন।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বোহলার বলেন, আমি রনের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তার উদ্বেগের প্রতি আমরা সহানুভূতিশীল।
হামাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেখুন, তাদের মাথায় শিং গজায়নি। তারা আসলে আমাদের মতোই মানুষ, বেশ ভালো লোক।
রন ডারমার প্রসঙ্গে বোহলার বলেন, সে আমাকে চেনে না এবং এখানে (হামাসের সঙ্গে আলোচনায়) বড় ধরনের ঝুঁকি আছে। তিনি এমন এক দেশে থাকেন, যেখানে নির্দিষ্ট কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হলে, তা অন্য অনেক মানুষের ক্ষতি বা উপকার করতে পারে।
বোহলার আরও বলেন, আমি অস্বস্তি ও উদ্বেগের কারণ বুঝতে পারি। আমি বিরক্ত হইনি। তবে, এটাও বুঝতে হবে, আমরা যুক্তরাষ্ট্র। আমরা ইসরায়েলের কোনো দালাল নই। এখানে আমাদের নিজস্ব স্বার্থ জড়িত। আমরা পারস্পরিক যোগাযোগ করেছি। আমাদের খুব নির্দিষ্ট কিছু সীমারেখা ছিল, যা আমরা মেনে চলার চেষ্টা করেছি।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র বোহলারের মন্তব্য ইসরায়েলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরক্ত করেছে। তারা টাইমস অব ইসরায়েলকে জানিয়েছেন, বোহলারের ‘যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের দালাল নয়’- এমন মন্তব্যে তারা অবাক হয়েছেন।
কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় চলমান পরোক্ষ আলোচনার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রও হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা চালিয়েছে। এর মূল লক্ষ্য ছিল গাজায় এখনও বন্দি থাকা আমেরিকান জিম্মিদের মুক্ত করা। তবে বোহলার জোর দিয়ে বলেছেন, চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো, সব জিম্মির মুক্তি নিশ্চিত করা।
ইসরায়েলি সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেল-১২ কে তিনি বলেন, আমরা দুই সপ্তাহ শুধু বসে থাকার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। আপনারা এখন বাস্তব সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন যে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কিছু অগ্রগতি হতে পারে এবং জিম্মিদের বাড়ি ফিরতে দেখা যেতে পারে।
চ্যানেল-১২ বোহলারের কাছে জানতে চায়, বাস্তবতা বিবেচনায় হামাস শেষ পর্যন্ত অস্ত্র সমর্পণ করবে এবং গাজার রাজনৈতিক ভবিষ্যতে আর কোনো ভূমিকা রাখবে না—এমনটা কী সম্ভব? উত্তরে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে, এটি সম্ভব।