প্রকাশ: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ৩:০৩ এএম (ভিজিট : ১৪৪)

সারাদেশে ধর্ষণ ও নারীদের প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৯ মার্চ) রাত সাড়ে এগারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেট) সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।
এর আগে রাত দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে মশাল মিছিল শুরু করে 'ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ'। মিছিলটি শহীদ মিনারের পাদদেশে এসে শেষ হয়। সেখানে আগে থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ করছিলেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে 'ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ'। মিছিল শেষে সেখানে সমাবেশ করেন তারা।
সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন ইতিহাস বিভাগের ৪৮তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আয়শা সিদ্দিকা বৃষ্টি।
এ সময় 'ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ'-এর মুখপাত্র সাইয়েদা শাওলী বলেন, ‘দেশ এমন এক ক্রান্তিকালে উপনীত হয়েছে যে, আমাদের মধ্যে আর কোনো বিভেদ নেই। আমরা সবাই সেই ধর্ষিতা, যার নিরাপত্তা এই দেশের সরকার কখনোই নিশ্চিত করতে পারেনি। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছি, কিন্তু কয়েক মাস পরেই আমাদের জীবনের নিরাপত্তা ও সম্ভ্রম রক্ষার জন্য আবারও রাস্তায় নামতে হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এমনভাবে কথা বলেছেন, যেন আইনশৃঙ্খলার কোনো অবনতি হয়নি। জুলাই আন্দোলনের সময় পুলিশ আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছে, রক্ত ঝরিয়েছে, কিন্তু আজ সেই পুলিশ আমার কোনো একজন বোনের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। তাহলে রাষ্ট্র এই স্বৈরাচার আমলের পুলিশ বাহিনী কেন রেখে দিয়েছে? আন্দোলন ও বিপ্লবের আঁতুরঘর জাহাঙ্গীরনগর থেকে আওয়াজ তুলে বলছি—প্রত্যেক ধর্ষকের কালো হাত প্রতিহত করা হবে, এই ব্যবস্থাকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।’
বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আহসান ইমাম বলেন, ‘শিশু, গর্ভবতী নারী, প্রতিবন্ধী নারী, বয়স্ক নারী—কেউই বাদ যাচ্ছে না। আমাদের বারবার কথা বলতে হচ্ছে। কিন্তু আমি আর কথা বলতে পারছি না, কারণ আমার মনে ও শরীরে ‘আছিয়া’ বসে আছে। আছিয়ার অবস্থা অকল্পনীয়। এই বাংলাদেশ আমাদের কাম্য ছিল না। শুধু একটি কথাই বলব—ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। আমার মায়েরা, বোনেরা আর অনিরাপদ থাকবেন না। আর একটি ধর্ষণের ঘটনাও আমরা শুনতে চাই না।’
সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। সেখানে রাত ১০টা ৫৫ মিনিট থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অবস্থান করেন তারা।