
ভারতে নারীদের বিনা শাস্তিতে একটা করে খুন করার অনুমতি দেওয়া হোক। নারীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এমনই দাবি তুলেছেন দেশটির এনসিপির (শারদ পাওয়ার গোষ্ঠী) নেত্রী রোহিণী একনাথরাও খাড়সে।
এ বিষয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি লিখেছেন ওই নেত্রী। গতকাল শনিবার (৮ মার্চ) সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে রোহিণী দাবি করেছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নারীদের বিরুদ্ধে যেভাবে অপরাধের ঘটনা বাড়ছে, তাতে তাদের একটা খুনের অনুমতি দেওয়া হোক। যেক্ষেত্রে মহিলাদের কোনোরকম শাস্তি দেওয়া যাবে না।
সম্প্রতি মুম্বাইয়ে ১২ বছরের এক কিশোরীর গণধর্ষণের যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা উল্লেখ করে শারদ গোষ্ঠীর মহিলা ব্রিগেডের সভানেত্রী বলেন, নারীরা 'অত্যাচারী মানসিকতা' এবং 'ধর্ষণের মানসিকতা'-কে হত্যা করতে চায়।
বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করে রোহিণী জানান, বিশ্ব জনসংখ্যা পর্যালোচনার তরফে যে সমীক্ষা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে এশিয়ায় নারীদের জন্য সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাহীন দেশ হিসেবে ভারতকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অপহরণ, গার্হস্থ্য হিংসা-সহ বিভিন্ন গুরুতর ঘটনার কথা তুলে ধরা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। প্রতিটা দিন যাচ্ছে, আর অপরাধের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। দু'দিন আগেই মুম্বাইয়ে এক ১২ বছরের কিশোরীর উপরে ভয়ংকর অত্যাচার চালানো হয়েছে। ভাবা যায়? ১২ বছরের কিশোরীকে এরকম অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে।
এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় নারীদের বিনা শাস্তিতে একটা খুনের অনুমতি দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন এনসিপি নেত্রী। তিনি বলেন, 'মাননীয় রাষ্ট্রপতি, যখন রাজ্যপাট এবং লোকজন বিপদের মুখে ছিলেন, তখন তাদের রক্ষা করতে নিজেদের হাতে তলোয়ার তুলে নিয়েছিলেন মহারানি তারাবাই এবং দেবী অহিল্যাবাই হোলকাররা। সমাজ সংস্কারের জন্য আমরা যে লড়াই করছি, সেটার জন্য কেন চুপ করে থাকব?'
তবে বিনা শাস্তিতে নারীদের খুনের অনুমতি প্রদানের দাবী জানানোর পাশাপাশি সেটার জন্য ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন এনসিপি নেত্রী। তিনি বলেন, আমাদের দেশ গৌতম বুদ্ধ এবং মহাত্মা গান্ধীর জায়গা হিসেবে পরিচিত। তারা শান্তি এবং অহিংসার মূর্ত প্রতীক। কিন্তু অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে এই আবেদনের জন্য ক্ষমা চাইছি। যে বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে, নেত্রী রোহিণীর সেই দাবি নিয়ে পালটা প্রশ্ন ছুড়েছেন শিবসেনা নেতা তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী গুলাবরাও পাটিল। তিনি দাবি করেছেন, রোহিণীর প্রথমে বলা উচিত যে, কাকে খুন করা উচিত।
যদিও শিবসেনার নেত্রী মনীষা কায়নাড়ে দাবি করেছেন, রোহিণী সম্ভবত কিছু লোকের মধ্যে থাকা কয়েকটি প্রবৃত্তিকে হত্যা করার কথা বলেছেন। সম্প্রতি যা যা ঘটনা ঘটেছে, সেটা থেকেই সম্ভবত এরকম ভাবাবেগ তৈরি হয়েছে।