প্রকাশ: শুক্রবার, ৭ মার্চ, ২০২৫, ৭:২২ পিএম (ভিজিট : ২৭০)

অসহায় বা বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো ইবাদত। এতে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়। মানুষকে সহযোগিতা করে যত কাজ করা যায়, এর অন্যতম রক্তদান। এটি নিঃসন্দেহে মহৎ ও মানবিক কাজ। কখনো মানুষকে বাঁচাতে রক্ত দেওয়া অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়ে। যেহেতু রক্তের কোনো বিকল্প নেই, তাই অন্য একজন সুস্থ সবল ব্যক্তির কাছ থেকে রক্ত নিতে হয়। রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচানো সওয়াবের কাজ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘এ কারণেই আমি বনি ইসরায়েলের প্রতি এই নির্দেশ দিয়েছি যে, যে কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করে অন্য প্রাণের বিনিময় ছাড়া, কিংবা তার দ্বারা ভূপৃষ্ঠে কোনো ফিতনা-ফাসাদ বিস্তার ছাড়া, তাহলে সে যেন সমস্ত মানুষকে হত্যা করে ফেলল; আর যে ব্যক্তি কোনো ব্যক্তিকে রক্ষা করল, তাহলে সে যেন সমস্ত মানুষকে রক্ষা করল।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৩২)
নানাভাবে নানা সময়ে মানুষের রক্তের প্রয়োজন পড়ে। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর তাড়না ও সওয়াবের প্রত্যাশায় রক্ত দিতে হয়। কিন্তু রোজা রেখে রক্ত দেওয়া যাবে কিনা, এ নিয়ে অনেকে দ্বিধায় পড়ে যান। ইসলামি স্কলারদের মতে, রোজা রাখা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত বের হলে রোজা ভাঙবে না। কেউ যদি রোজা রেখে রক্ত দেয়, তাহলে রোজা ভাঙবে না। তবে যদি রক্ত দেওয়ার পর ব্যক্তি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তার রোজা রাখার শক্তি চলে যায়, তাহলে তার জন্য রক্ত না দেওয়া ভালো। হজরত আকরামা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) হজের জন্য ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শরীর থেকে শিঙ্গার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন এবং রোজা অবস্থায়ও শরীর থেকে শিঙ্গার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯৩৮)
হজরত আনাস বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, রোজাদারকে শরীর থেকে শিঙ্গা লাগিয়ে রক্ত বের করতে কোনো সমস্যা নেই, তবে যদি রক্ত দেওয়ার ফলে দুর্বলতা অনুভূত হয়, তাহলে তা এড়িয়ে চলা উচিত। (সহিহ বুখারি)
মনে রাখতে হবে, রোজা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত বের হলে রোজা ভাঙে না। একইভাবে সিরিঞ্জ দ্বারা বের করা হলেও রোজা ভাঙে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯৩৮)। রক্তদান মানবসেবার অন্তর্ভুক্ত। ইসলামে মানবজীবন রক্ষা করা অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ। অতএব, রোজা ভাঙার কোনো আশঙ্কা না থাকলে রক্ত দেওয়া নৈতিক দায়িত্ব ও সওয়াবের কাজ।