
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার লন্ডন বলেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে উপস্থাপনের জন্য ইউরোপিয়ান নেতারা ইউক্রেন যুদ্ধের একটি শান্তি পরিকল্পনা তৈরিতে সম্মত হয়েছেন।
ইউরোপিয়ান নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নেয়ার আগে রোববার স্ট্রারমারের দেয়া বক্তব্যের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইউরোপিয়ান নেতারা যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে ইউক্রেনকে সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধ অবসানে এ শান্তি পরিকল্পনাটি তৈরি করবেন।
ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনার পাশাপাশি ইউরোপীয় নেতারা ট্রাম্পকে একটি বিষয় দেখানোর জন্য একমত হয়েছেন যে, মহাদেশটি নিজেদের রক্ষা করতে পারে এবং তাদের প্রতিরক্ষা খাতে আরও বেশি ব্যয় করতে হবে।
ইউরোপিয়ান নেতারা তাদের পরিকল্পনার বিস্তারিত কিছুই জানাননি।
তবে, শীর্ষ সম্মেলনের আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ লে ফিগারো পত্রিকাকে বলেছেন যে, ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনায় এক মাসের যুদ্ধবিরতি অন্তর্ভুক্ত থাকবে যা বিমান ও সমুদ্র আক্রমণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে; কিন্তু স্থল যুদ্ধের ক্ষেত্রে নয়।
তিনি বলেন, ‘শান্তি চুক্তিটিতে ইউক্রেনে ইউরোপিয়ান সেনা মোতায়েন করারও পরিকল্পনা আছে।’
এসব শর্তে ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলো এখনও সম্মত হয়েছে কিনা তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। শুক্রবার হোয়াইট হাউজে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির তীব্র সমালোচনা করেন।
ওই সময় ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, জেলেনস্কি রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রতি কৃতজ্ঞ নয়।
হোয়াইট হাউজের বৈঠকের পর জেলেনস্কি সরাসরি লন্ডন আসেন এবং ইউরোপের প্রায় সব দেশ ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হওয়া সত্ত্বেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এসব কারণে লন্ডনের শীর্ষ সম্মেলনটি রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছে।
শনিবার লন্ডনে সফররত জেলেনস্কিকে উষ্ণ আলিঙ্গনে স্বাগত জানানো স্টারমার বলেন, ‘ব্রিটেন, ইউক্রেন, ফ্রান্স এবং আরও বেশ কিছু দেশ জোট গঠন করবে এবং যুদ্ধ অবসানে ট্রাম্পের কাছে পৌঁছানোর জন্য একটি শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করবে।’
এ গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ বৈঠক ল্যানকাস্টার হাউজে অনুষ্ঠিত হবে, যা বাকিংহাম প্রাসাদের কাছে ২০০ বছরের পুরনো একটি রাজকীয় ভবন। এটি মূলত ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনার জন্য একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বৈঠকে ফ্রান্স, জার্মানি, ডেনমার্ক, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, স্পেন, কানাডা, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, চেক প্রজাতন্ত্র ও রোমানিয়ার নেতারা থাকবেন।
এছাড়া তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ন্যাটোপ্রধান, ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট ও ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টও বৈঠকে যোগ দেবেন।
জেলেনস্কি অবশ্য বলেছেন যে, শুক্রবারের ঘটনার পরেও তিনি বিশ্বাস করেন যে ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে পারবেন, তবে সেই আলোচনা অবশ্যই বন্ধ দরজার পিছনে হতে হবে।