ই-পেপার শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫
শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫

সেহরি কখন খাবেন, কীভাবে খাবেন
প্রকাশ: সোমবার, ৩ মার্চ, ২০২৫, ১০:১৯ এএম আপডেট: ০৩.০৩.২০২৫ ১০:৫৭ এএম  (ভিজিট : ৩৮৮)

আরবি ভাষায় শেষ রাতের আলো ফোটার আগের সময়টিকে বলা হয় ‘সাহর’ এবং ওই সময় যে খাবার খাওয়া হয় সেটিকে বলা হয় ‘সাহরি’। তবে উপমহাদেশের ইসলামি সংস্কৃতিতে ফার্সি ভাষার প্রভাবে শব্দটিকে উচ্চারণ করা হয় ‘সেহরি’। ইসলামের পরিভাষায় রোজা রাখার উদ্দেশ্যে সুবহে সাদিকের আগে যে খাবার গ্রহণ করা হয় তাকেই ‘সেহরি’ বলা হয়। সেহরি খাওয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত। এর মধ্যে কল্যাণ নিহিত রয়েছে। তাই প্রয়োজন না থাকলেও সেহরিতে সামান্য কিছু পানাহার করতে হয়, নতুবা মাকরুহ হবে। 

হাদিস শরিফে আছে-হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা সেহরি খাও, কেননা সেহরি খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে’ (বুখারি : ১৯২৩)। অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, ‘তোমরা সেহরি খাও, যদিও এক ঢোক পানি দ্বারা হয়। কারণ যারা সেহরি খায়, আল্লাহ তায়ালা তাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন।’ (ইবনে হিব্বান : ৩৪৭৬)

সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজা রাখার শক্তি অর্জিত হয়। সেহরি না খেয়ে রোজা রাখলে রোজাদার ক্লান্ত হয়ে পড়বে। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে দিনে রোজা রাখার শক্তি অর্জন করো আর দিনে হালকা ঘুমের মাধ্যমে রাত জেগে ইবাদত করার শক্তি অর্জন করো।’ (ইবনে মাজাহ : ১৬৯৩)

আহলে কিতাব তথা ইহুদি-নাসারাদের ধর্মেও রোজার প্রচলন ছিল, আজও তারা রোজার সাদৃশ্য উপবাস করে, কিন্তু সেহরি খায় না। তাই আমাদের প্রতি নির্দেশ আমরা সেহরি খেয়ে যেন তাদের সাদৃশ্য হতে আলাদা হয়ে পড়ি। হজরত আমর ইবনে আস (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমাদের রোজা এবং আহলে কিতাব (ইহুদি ও খ্রিস্টানদের) রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহরি খাওয়া।’ (মুসলিম : ২৬০৪)

সুবহে সাদিকের কাছাকাছি সময় সেহরি খাওয়া মুস্তাহাব। তবে এত দেরি করা মাকরুহ যে, সুবহে সাদিক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সব নবীকে তাড়াতাড়ি ইফতার করতে আদেশ করা হয়েছে এবং সেহরি সময়ের শেষ দিকে খেতে বলা হয়েছে।’ (আল মুজামুল আওসাত : ২/৫২৬)

অনেকে মনে করে ফজরের আজান পর্যন্ত সেহরি খাওয়া যায়। এটা একটি ভুল ধারণা। কারণ ফজরের আজান দেওয়া হয় সুবহে সাদিকের পরে। আর সেহরির শেষ সময় হলো সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত। হজরত জায়েদ ইবনে সাবেত (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে সেহরি খেলাম অতঃপর নামাজে দাঁড়ালাম। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, সেহরি খাওয়া ও নামাজে দাঁড়ানোর মধ্যে সময়ের ব্যবধান কতটুকু ছিল? তিনি উত্তরে বললেন, পঞ্চাশ আয়াত পাঠ করার মতো সময়ের ব্যবধান ছিল’ (বুখারি : ১৯২১)। তাই সুবহে সাদিকের পরে সেহরি খেলে রোজা হবে না। যদি নিদ্রা বা অন্য কোনো কারণে কেউ সেহরি খেতে না পারেন, তা হলে সেহরি না খাওয়ায় তার রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে সেহরি না খাওয়ার কারণে রোজা ছেড়ে দেওয়া বড়ই গুনাহের কাজ।

সেহরির সময় আল্লাহ তায়ালার বিশেষ রহমত অবতীর্ণ হয়। এ সময়টিতে কুরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার ও অন্যান্য নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা লাভের সর্বোত্তম সুযোগ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাতের সেহরির সময় দোয়া কবুল হয়’ (তাবরানি)। আল্লাহ সবাইকে বোঝার ও আমল করার তওফিক দিন।




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close