প্রকাশ: শনিবার, ১ মার্চ, ২০২৫, ১:৫৩ পিএম (ভিজিট : ২৭২)

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কি ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের মধ্যে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে আয়োজিত এক বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে ওই বৈঠক থেকে বের হয়ে যান জেলেনস্কি। বাতিল করা হয় দুই নেতার মধ্যে আয়োজিত কনফারেন্সটিও। খবর: দি ইকোনমিক টাইমস।
ফলে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল সেটিও বাতিল করা হয়।
ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মধ্যে উত্তপ্ত বাগবিতণ্ডার পর বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যম এবং নেতাদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে, যা ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ গতিপথ এবং রাশিয়ার সঙ্গে চলমান সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে কিয়েভ। এতে দেশটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউরোপসহ অন্যান্য মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে রাশিয়াকে ঠেকাতে ইউক্রেনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে। কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতায় আসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নির্বাচনের আগে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করবেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গত ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে ফেরার পরই যুদ্ধ বন্ধে তৎপরতা শুরু করেন ট্রাম্প।
ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে এবং যুদ্ধ বন্ধ করতে দেশটির খনিজ সম্পদের ওপর নজর পড়ে ট্রাম্পের। এ নিয়ে কথার বলার জন্য ওয়াশিংটনে উড়ে যান জেলেনস্কি। কিন্তু ওভালে বৈঠক শুরু হওয়ার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের তোপের মুখে পড়েন জেলেনস্কি। এক পর্যায়ে মার্কিন দুই নেতার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন ইউক্রেন প্রেসিডেন্টও।
এ বিষয়ে রয়টার্সের এক সাংবাদিক বলেছেন, গত ১৬ বছরে হোয়াইট হাউসে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) একজন সিনিয়র উপদেষ্টা ব্রিয়ান ফিনুকেন বলেন, ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে শুক্রবার অনুষ্ঠিত বৈঠকটি যে উত্তেজনাকর হবে সেটি আমরা আগেই ধারণা করেছিলাম।
তিনি বলেন, ট্রাম্প ও তার ভাইস প্রেসিডেন্টের কথা শুনে মনে হতে পারে তারা সঠিক ছিল না। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে সামরিক সহায়তা করেছে তাতে তাদের এ ধরনের আচরণ অযৌক্তিক নয়।
ইউক্রেনের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ভ্লদিমির ফেসেঙ্ক এএফপিকে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে মার্কিন সহযোগিতার দীর্ঘ তালিকা ছিল। যার ফলে ট্রাম্প তীর্যক ভাষায় জেলেনস্কিকে আক্রমণ করেছেন।
তিনি বলেন, ইউক্রেনকে নিয়ে মার্কিন মনোভাব কী হবে তা এখনই বলা না গেলেও বোঝাই যাচ্ছে ভালো কিছু হবে এটা ধারণা করা ঠিক হবে না।
ফেসেঙ্ক আরও বলেন, গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে ট্রাম্প-জেলেনস্কির উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে মার্কিন প্রশাসন হয়তো ইউক্রেনকে সামরিক সহযোগিতা কমিয়ে দিতে পারে।