প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৬:৫০ পিএম আপডেট: ২০.০২.২০২৫ ৭:৫৩ পিএম (ভিজিট : ১৫৯)

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি চলাকালে গত ৫ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন পেশায় গাড়িচালক খোকন চন্দ্র বর্মণ। কাছ থেকে পুলিশের ছোড়া গুলির আঘাতে তার মুখের একটি বড় অংশ হাড়সহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই খোকনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাশিয়ায় পাঠাচ্ছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতনের দিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আন্দোলনে গুরুতর আহত হন খোকন। তার ওপরের ঠোঁট, মাড়ি, নাক, তালুর এখন আর কোনও অস্তিত্ব নেই। আঘাতের ধরণ গুরুতর এবং আহত খোকনের মুখ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল একটি কেস হওয়ায় খোকন চন্দ্র বর্মণের চিকিৎসার ব্যাপারে বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ করা হলে অনেকেই অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে দীর্ঘ চেষ্টার পর এক পর্যায়ে এই বিষয়ে দক্ষ রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর ইউনিভার্সিটি ক্লিনিক অব লোমোনোসোভ হাসপাতাল খোকনের মুখ পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জটি নিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন জানান, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাশিয়ায় প্রশিক্ষিত সার্জন মো. মাহমুদুল হাসানসহ শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৪টায় কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে খোকন চন্দ্র বর্মণকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে।
তাকে প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে প্রাক মূল্যায়ন করা হবে এবং থ্রি-ডি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তার চেহারাকে আগের অবস্থায় ফেরত আনার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি মডেল দাড় করানো হবে। মডেল অনুযায়ী চেহারা পুনর্গঠনের জন্য মূল সার্জারি আগামী ২০ মার্চ বা তার কাছাকাছি সময়ে শুরু হবে।
মন্ত্রণালয় জানায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যে কর্মকাণ্ড অব্যাহত আছে, তারই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে ৩৮ জন আহতকে সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আহতদের মধ্যে ৩ জন চিকিৎসা শেষে ফিরে এসেছেন। এছাড়া বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আহতদের মধ্যে যাদের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন তাদের বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান আছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জুলাই আন্দোলনে আহত ১৪ হাজারের বেশি ছাত্র-জনতাকে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ৬টি দেশ (থাইল্যান্ড, চীন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর) আগত বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ হাজারের অধিক আহতদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার মূল্যায়ন করেছেন। ক্ষেত্র বিশেষ তারা আন্দোলনে আহতদের সার্জারি করেছেন।