ই-পেপার মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫
মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫

ঈদের পর দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া
প্রকাশ: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯:১৮ পিএম আপডেট: ১৭.০২.২০২৫ ৯:৪৫ পিএম  (ভিজিট : ৪৬০)

যুক্তরাজ্যে ছেলের বাসায় চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঈদুল ফিতরের পর দেশে ফিরবেন। তবে দেশে ফেরার তারিখ সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা বাসায় এসে তাকে ফলোআপ করছেন নিয়মিত। তার শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভালো সময় কাটাচ্ছেন তিনি।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সফরসঙ্গী ও উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী সময়ের আলোকে এসব তথ্য জানান। 

তিনি জানান, চিকিৎসা এখনও পুরোপুরি শেষ হয়েছে; এটা বলা যাবে না। লন্ডনের বিশেষায়িত হাসপাতাল দ্য লন্ডন ক্লিনিকের বিখ্যাত লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা রোস্টার করে বাসায় দেখে যাচ্ছেন। বাসায় সবকিছুর চিকিৎসা চলছে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড যেদিন বলবেন সেদিনই তিনি দেশে ফিরবেন। খালেদা জিয়ার ১৫ জন সফরসঙ্গীর মধ্যে ৮ জন দেশে ফিরে এসেছেন এর মধ্যে। বাকিরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরবেন।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে  তারেক রহমান ফেরার সম্ভাবনা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ম্যাডামের সঙ্গে ছেলে তারেক রহমানের ফেরার সম্ভবনা নেই। তারেক রহমানের ফেরা নির্ভর করছে রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ওপর। আর চিকিৎসা শতভাগ শেষ হলেই দেশে ফিরবেন ম্যাডাম। আমি, ডা. জাহিদ, তাবিথ আউয়াল ম্যাডামের সঙ্গে আছি। এ ছাড়া ম্যাডামের নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও গৃহপরিচারিকাও সঙ্গে আছেন। বাকি সফরসঙ্গীরা দেশে ফিরে গেছেন। হয়তো কিছুদিন পর আমিও দেশে আসব। তারপর আবার ম্যাডামের দেশে ফেরার তারিখ ঠিক হলে লন্ডনে যাব।


তিনি আরও বলেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা ওভারওল ভালো। তিনি ছেলে তারেক রহমান, দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমান এবং তিন নাতনিদের সঙ্গে ভালো সময় কাটাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যদের কাছে পেয়ে খালেদা জিয়া স্বাভাবিকভাবেই মনোবলের দিক থেকে সতেজ ও সুস্থ আছেন। বাকিটা চিকিৎসকরা করছেন। 

সবশেষ খালেদা জিয়ার আরও দুই সফরসঙ্গী দেশে ফিরছেন। একজন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার ও আরেকজন মেডিকেল বোর্ড সদস্য ডা. আল মামুন। এর আগে চারজন সফরসঙ্গী চিকিৎসক দেশে ফিরেন।

খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ছিলেন মেডিকেল বোর্ডের ছয়জন সদস্য। তাদের মধ্যে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক এফ এম (ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ) সিদ্দিক, অধ্যাপক নরুদ্দিন আহমেদ, জাফর ইকবাল ও সবশেষ ডা. মোহাম্মদ আল মামুন দেশে ফিরে এসেছেন। অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরবেন। 

সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার সময়ের আলোকে জানান, ম্যাডাম দ্য লন্ডন ক্লিনেকে সেরা চিকিৎসা পাচ্ছেন। সেখানে বিশ্ববিখ্যাত চিকিৎসকরা সেবা দিয়ে থাকেন। পুরো বডি চেক আপ করা মানে অনেকটা আরোগ্য লাভ করা। ম্যাডাম শিগগির দেশে ফিরতে চান। তবে তার ছেলে তারেক রহমান চাচ্ছেন, রোজার ঈদ পর্যন্ত ম্যাডাম লন্ডনে থাকুক। এখন দেখা যাক কবে দেশে ফিরেন। আর চূড়ান্ত ফলোআপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। উনার মূল কিডনিতে যে সমস্যা ছিল তার অনেকটা উন্নতি হয়েছে। অন্য জটিলতাও কমছে। আর আগেই বলেছি স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণে লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি।      

প্রসঙ্গত, টানা ১৭ দিন চিকিৎসা নিয়ে দ্য লন্ডন ক্লিনিক থেকে খালেদা জিয়া সরাসরি ছেলে তারেক রহমানের বাসায় উঠেন। গত ৭ জানুয়ারি খালেদা জিয়া কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেসে যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন। এই হাসপাতালটির লিভার বিশেষজ্ঞ জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসা চলছে। ৭৯ বছর বয়সি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।

দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে যেতে হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ২০২০ সালে তিনি সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পেলেও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। গত চার বছরে তাকে কয়েক দফা ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকরা ঢাকায় এসে খালেদা জিয়ার যকৃতে ‘ট্র্যান্সজাগুলার ইন্ট্রাহেপেটিক পোরটোসিসটেমিক শান্ট (টিপস)’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুই রক্তনালীর মধ্যে একটি নতুন সংযোগ তৈরি করে দিয়ে যান। তখন থেকেই বলা হচ্ছিল, বিদেশে নিয়ে খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা দরকার। গত অগাস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করে খালেদা জিয়াকে পুরোপুরি মুক্তি দিলে সেই সুযোগ তৈরি হয়।


আরও সংবাদ   বিষয়:  খালেদা জিয়া   চিকিৎসা  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close