
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, আমাদের রাজনৈতিক দল এই ফেব্রুয়ারিতেই আসতে যাচ্ছে। আমরা আমাদের সহযোদ্ধা নাহিদ ইসলামকে আহ্বান জানিয়েছি, মন্ত্রণালয়ের ক্ষমতার চেয়ার ছেড়ে আমাদের জনতার কাতারে চলে আসেন। আমরা একটি নতুন রাজনৈতিক দল করছি।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটি সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, বিগত সময়ে এ দেশে যে রাজনৈতিক চর্চা ছিল, তা আবার নতুন করে দেখতে পাচ্ছি। এটি তাদের রক্তে মিশে গেছে। তাই আন্দোলনকারীদেরকেই রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিতে হবে। যারা আন্দোলনে সামনের সারিতে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদেরকেই নেতৃত্বে থাকতে হবে। না হলে পেছনের সারির সুবিধাবাজ অযোগ্য বা কম দেশপ্রেমি যারা, তারা এ জায়গাটা নিয়ে নেবে।
তিনি তার নতুন রাজনৈতিক দলের আদর্শ তুলে ধরে বলেন, আপনারা যারা আমাদের রাজনৈতিক দলে আসতে চান তারা একটি সৎ উপার্জনের মাধ্যমে জীবিকার ব্যবস্থা করুন। যারা রাজনীতি করে তারা যদি সৎভাবে উপার্জনের পথ না পায় দুর্নীতি করবে। আগে যারা রাজনীতি করেছে তারা প্রথমে ১০ হাজার টাকা পরে ১০ লক্ষ টাকা দুর্নীতি করেছে। এভাবে হাত বাড়ানোর পথ বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আগে চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট হয়েছে, এখনো হচ্ছে। আপনাদের এ সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন জায়গায় যত ভাগবাটোয়ারা হতো, এখন তার চেয়ে কম হয় না, বেশি হয়? আপনারা যদি এগুলো বন্ধ করতে চান, তাহলে আপনাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একটা কথা মনে রাখবেন, এই অভ্যুত্থানের লড়াইয়ে ওই ৫-৬ জুনে আমরা পাঁচশ জনও রাজপথে ছিলাম না, কিন্তু পাঁচ আগস্টে সারা দেশে পাঁচ কোটি মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। এভাবে ঐক্য ধরে রাখতে হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক বলেন, খুনি হাসিনা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ যে নামেই হোক না কেন; যাদেরকে মাঠ পর্যায়ে ব্যবহার করেছে তাদেরকে শুধু মাত্র টিস্যু পেপারের মতো ব্যবহার করেছে। বিপদের সময় তাদের ফেলে পালিয়ে গেছে। তাদের এবার শিক্ষা নেওয়ার আছে, আপনি কোন নেতার পেছনে দাড়াবেন। কাদের হয়ে কাজ করবেন। কাদের পেছনে ছুটবেন। দেশের বাইরে থেকে আপনাদের উস্কানি দেবে, তাতে যদি আপনারা মাঠে নামেন তাহলে আপনারাই ভুক্তভুগী হবেন।
তিনি বলেন, আপনাদের আমাদের লড়াইয়ে খুনি হাসিনা লেজ গুটিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো খুনি হাসিনার কাছ থেকে আমাদের অসংখ্য শিক্ষা নেওয়ার আছে। আমাদের লড়াইটা হবে দীর্ঘ। এ লড়াইয়ে সবার আগে থাকবে দেশের স্বার্থ, মানুষের স্বার্থ। ফলাফল পেতে আমাদের হয়তো আরও ১০ বছর লাগবে। যারা লক্ষ্য নিয়ে লেগে থাকবেন তারা একদিন অবশ্যই সফল হবেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নির্বাহী সদস্য তুহিন মাহমুদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সোনারগাঁ শাখার সংগঠক শাকিল সাইফুল্লাহ প্রমুখ।