ই-পেপার শুক্রবার ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শুক্রবার ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ই-পেপার

শুক্রবার ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জমে উঠছে বইমেলা
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২:৪০ পিএম  (ভিজিট : ১৬০)
অমর একুশে বইমেলা। বাঙালির প্রাণের মেলা। সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন লেখক, পাঠক, প্রকাশক ও কবি-সাহিত্যিক। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হয় বাংলাভাষী মানুষের উৎসব। একুশে বইমেলার অনেকগুলো দিক আছে। অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক বাংলা একাডেমি। বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক। বাঙালির শেকড়। অমর একুশে বইমেলা। বাঙালির প্রাণের মেলা। সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন লেখক, পাঠক, প্রকাশক ও কবি-সাহিত্যিক। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হয় বাংলাভাষী মানুষের উৎসব।

একুশে বইমেলার অনেকগুলো দিক আছে। অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক। পারস্পরিক যোগাযোগ, মনস্তাত্তি¡ক ও আনন্দ-বিনোদন। ভালো, সুন্দর সময় কাটানো। 

প্রকাশকরা সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন। বছরের শুরু অর্থাৎ মার্চ-এপ্রিল থেকেই শুরু করেন প্রস্তুতি। পরের বছর ফেব্রুয়ারি মেলার জন্য। জানুয়ারির মাঝেই বই ছাপানো শেষ করার কী প্রাণান্তর চেষ্টা। সারা বছরের ব্যবসা এক মাসে। প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে জড়ানো সবার মনে অফুরান আনন্দ।  দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা টাইপ করা, ছাপানো, বাঁধাইসহ নানা কাজ চলছে তো চলছেই। মেশিনের চাকার সঙ্গে ঘুরছে অর্থনীতির চাকা। সারা দিন-রাত কাজ করেও তাই কোনো কষ্ট নেই, আক্ষেপ নেই। লেখকরাও খুশি তাদের সম্মান ও সম্মানী পেয়ে। 

মেলাকে ঘিরে জমে ওঠে ছোট-বড় নানারকম ব্যবসা। ফুচকা বিক্রেতা থেকে রেস্তোরাঁর মালিক। সবাই জমিয়ে ব্যবসা করে। অবদান রাখে জাতীয় অর্থনীতিতে।  আমাদের মার্তৃভাষা বাংলা। মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষার মেলা অমর একুশে বইমেলা। মেলাতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের লেখক-পাঠক আসেন। আড্ডা-গল্পের পাশাপাশি জমে ভাববিনিময়। বাংলাদেশের বিভিন্ন সমাজের সর্বস্তরের মানুষের পদচারণে মুখরিত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। গরিব-দুঃখী, বড়-ছোট, সাধারণ-অসাধারণ সবাই আসে। বই দেখে। বই কেনে। প্রিয়জনকে বই উপহার দেয়। বইমেলা পরিণত হয় সামাজিক মেলায়। 

মানুষ জন্মগতভাবেই সামাজিক ও রাজনৈতিক জীব। যেখানে মানুষ, সেখানেই রাজনীতি। অমর একুশে বইমেলার একটা রাজনৈতিক দিক আছে। মেলায় প্রবেশ করেই এর প্রমাণ মেলে। ভাষা আন্দোলন যেমন সামাজিক থেকে রাজনৈতিক রূপ নিয়েছিল। 

রাজনীতি শুধু মিটিং-মিছিল নয়। শিল্প-সংস্কৃতি-সাহিত্য চর্চাও রাজনীতি। বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনীতি। বাংলা একাডেমি বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনীতি চর্চার সূতিকাগার।  বাঙালি সংস্কৃতি ও বাংলা একাডেমি এক সুতোয় গাঁথা। অমর একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে একাডেমি প্রাঙ্গণে নামে নানা মানুষের ঢল। বই কেনা ও বই পড়া সবচেয়ে বড় সংস্কৃতি। বাঙালিকে আগ্রহভরে বই পড়তে শিখিয়েছে বইমেলা। বই কেনাবেচার পাশাপাশি একাডেমির মলচত্বরে মাসব্যাপী চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মেলায় আসা মানুষ উপভোগ করে বাংলা একাডেমির সাংস্কৃতিক আয়োজন। শিল্প সংস্কৃতি চর্চার এ এক নতুন মাত্রা। 

একটা জাতিকে শিক্ষিত করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার বই। লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী তার বই পড়া প্রবন্ধে বলেছেন ‘বই কিনে কেউ কখনো দেউলিয়া হয় না’। সবরকম জ্ঞানের উৎস বই। বই মানুষের মনের চোখ খোলে দেয়। একটা জাতি যতবেশি শিক্ষিত হবে ততবেশি লাইব্রেরি গড়ে তুলবে। বইমেলা মানুষকে বই কিনতে ও পড়তে উৎসাহিত করে। দিনশেষে শিক্ষার আলোয় আলোকিত সমাজ গড়ে তোলে। যে সমাজ যত বেশি জ্ঞানচর্চা করে সে সমাজ তত বেশি উন্নতি করে। ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো জ¦ালাতে, আলোকিত মানুষ তৈরি করতে চাই বই। 

একুশে বইমেলা নানারকম বইয়ের মেলা। এ মেলা জাতিকে শিক্ষিত, মার্জিত, জ্ঞানী-গুণী বানানোর মেলা। মেলায় আসা মানুষরা তাদের জ্ঞানপিপাসা মেটানোর পাশাপাশি যোগাযোগ স্থাপন করে। বইমেলা হয়ে ওঠে পারস্পরিক যোগাযোগের সেতু। প্রতিদিন নিজেদের মাঝে আড্ডা-গল্পের সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদান হয়। নতুন-পুরোনো অনেকের সঙ্গে দেখা হয়। দীর্ঘ একটা শূন্যতা পূরণ হয়। এক মাস চলে মেলা। প্রতিদিনই কারও না কারও সঙ্গে পরিচয় হয়। কথা হয়। এই যোগাযোগের রেস চলে পুরো ১১ মাস। 

যোগাযোগ মানুষকে কাছে টানে। সামনাসামনি যোগাযোগ যত বেশি হয় মানুষ তত কাছে আসে। মাসব্যাপী বইমেলা আমাদের আত্মকেন্দ্রিকতাকে পেছনে ফেলে বহির্মুখী হতে অনুপ্রাণিত করে। মানুষ ও মানবিকতা নিয়ে ভাবতে শেখায়। আমরা হয়ে উঠি একে-অপরের আরও আপন। আরও ঘনিষ্ঠ।

অমর একুশে বইমেলা একসময় হয়ে ওঠে আনন্দমেলা। নতুন নতুন বই দেখা, কেনা ও পড়ার আনন্দে আন্দোলিত হই আমরা। প্রিয় লেখকদের সান্নিধ্য, অটোগ্রাফ আনন্দের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। শুধু গল্প-আড্ডাই নয়, জমে শিল্প-সংস্কৃতি-সাহিত্যচর্চা। সময় কাটে বিদ্যুৎগতিতে। প্রতিদিনের রুটিনের অংশ হয় বইমেলা।

বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের অন্যতম বড় অর্জন। ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবাহী অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে বইমেলার আয়োজন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির একুশের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করা হয়। সেবারই প্রথম অমর একুশে উদযাপনে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। এতে বাংলা একাডেমির বই বিক্রি কার্যক্রম সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। 

১৯৭২ সাল ও এরপর থেকে চিত্তরঞ্জন সাহা ও অন্যান্য প্রকাশক এবং বাংলা একাডেমির প্রচেষ্টায় এই কার্যক্রম সম্প্রসারিত হতে থাকে। ১৯৮৪ সালে বইমেলা ‘বাংলা একাডেমি অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নাম লাভ করে। একাডেমি প্রাঙ্গণে চলতে থাকে মেলা। 

২০১৪ সালে অমর একুশে বইমেলা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্প্রসারিত হয়। লেখক-পাঠক-প্রকাশক আনন্দচিত্তে মেলায় আসেন। উপভোগ করেন খোলা আকাশের নিচে মেলার রূপ-গন্ধ। বিশাল উদ্যানে হাজার মানুষের ভিড়ে নিজেকে আবিষ্কার করেন একজন মেলাপ্রেমী হিসেবে। বইকে করেন নিত্যসঙ্গী। ২০১৪ সাল থেকেই অমর একুশে বইমেলা একাডেমি ও উদ্যান উভয় স্থানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

কেবল বাংলাদেশের মানুষ নয়, বাংলাভাষী সব মানুষই বইমেলার জন্য গর্ব অনুভব করেন। এ মেলায় বাংলা বইয়ের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী হয়। বইমেলা বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের অন্যান্য ভাষার সব মানুষের সৃষ্টিশীলতা তুলে ধরে। মেলায় নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়। প্রতি বছর বইমেলায় হাজার হাজার নতুন বই প্রকাশ হয়। ২০১৯ সাল থেকে বইমেলায় প্রকাশিত মোট নতুন বইয়ের মধ্যে কতগুলো মানসম্মত তা জানানোর রীতি চালু হয়। 

অমর একুশে বইমেলা বাংলা ভাষা, শিল্প, সাহিত্য, প্রকাশনা শিল্প, শিশু-কিশোরদের মধ্যে প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনা ছড়িয়ে দেয়। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত হয়। সে সূত্র ধরে অমর একুশে বইমেলায় লাগে আন্তর্জাতিকতার ছোঁয়া। বইমেলা কেবল বইয়ের কেনাবেচা মেলা নয়, মননেরও মেলা। বাঙালির মনন তৈরিতে এ মেলার আছে বিশেষ অবদান।

অমর একুশে বইমেলা এখন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জীবনের অপরিহার্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে। খাদ্য ও পানীয়ের মতো মেলাটা মানুষের বেঁচে থাকার উপাদান। মেলাপাগল মানুষ এক সেকেন্ড চিন্তা করতে পারে না বইমেলা ছাড়া। বই কেনার চেয়েও বড় আনন্দ সামাজিক সম্মিলন।  প্রকাশক, লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক সবাই আসছেন একাডেমি প্রাঙ্গণে। 

বই ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কাছে অমর একুশে বইমেলা মানে ঈদ। ঈদের মতোই আনন্দ ঘরে ঘরে। বছরে একটা মাস। ব্যবসার মৌসুম। বাকি ১১ মাস বলতে গেলে তেমন কোনো ব্যবসা হয় না। তাই সবাই যার যার মতো কাজ করছে।

শত বাধা অতিক্রম করে বাঙালি যাচ্ছে মেলায়। মেলাটা যে সবার প্রাণের মেলা। দলবেঁধে তাই সবাই ছুটছে মেলায়। তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, শিশু-কিশোর, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধবী, সবাই যাচ্ছে বইমেলায়। আবেগতাড়িত বাঙালি জাতিকে কেউ রুখতে পারেনি। কখনো পারবে না। বইমেলা হচ্ছে। সবাই বই কিনছে। পড়ছে। ভেতরে গুনগুনিয়ে বাজছে আবার জমেছে বইমেলা।

মাতৃভাষার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে হবে

মাতৃভাষায় কথা বলা যেমন মানুষের জন্মগত অধিকার তেমনি ভাষার মান-মর্যাদা রক্ষা করাও প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য। বর্তমানে বিশে^র অন্যান্য দেশে বাঙালিরা এবং অন্যান্য জাতির মানুষ বাংলা ভাষার জ্ঞান অর্জন করছেন। যেখানে ভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষরাই বাংলার চর্চায় পিছিয়ে নেই, সেখানে বাঙালি হয়ে নিজ ভাষার চর্চায় পিছিয়ে থাকাটা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে বুকে লালন করা প্রতিটি বাঙালির কর্তব্য। কারণ, যেদিন থেকে আমরা মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছি, সেদিন থেকেই মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছি। সময়ের পরিক্রমায় আমাদের মানসিকতা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, আমরা বাংলা অপেক্ষা পাশ্চাত্য বা অন্য ভাষায় কথা বলতে অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। বাঙালির অসংখ্য ত্যাগের বিনিময়ে প্রাপ্ত মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় আমরা ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছি।

আজকাল কিছু পরিবার তাদের সন্তানদের ইংরেজি চর্চায় এতটা গুরুত্ব দেন, যার ফলে বাচ্চারা ঠিকভাবে বাংলায় কথা বলতে বা লিখতে তেমন সক্ষম হয় না যতটা ইংরেজিতে হয়। যে শিশু তার নিজ ভাষার ব্যবহারই শিখতে পারেনি, তার পক্ষে ভাষা আন্দোলনের চেতনা বুকে লালন করা নিতান্তই আশাতীত। পৃথিবীর বুকে বাঙালি জাতি যাদের নিজ ভাষার অধিকার অর্জনে সংগ্রাম করতে হয়েছে। মাতৃভাষার মুক্তচর্চার জন্য করতে হয়েছে দীর্ঘ আন্দোলন, বিসর্জন দিতে হয়েছে অসংখ্য প্রাণ। সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারের মতো বীরদের রক্তক্ষয়ী ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ বাধাহীনভাবে ভাব বিনিময় করতে পারি আমাদের প্রাণের বাংলা ভাষায়। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম কি কঠোর ত্যাগের বিনিময় পাওয়া এই ভাষাকে সবার সম্মুখে নির্ভুলতার সঙ্গে উপস্থাপনের মাধ্যমে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে সক্ষম হচ্ছে? এ প্রশ্নটি করা অনেকের কাছে নিতান্তই অজ্ঞতার পরিচায়ক হলেও  মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার দায়িত্বটি অবহেলার আড়ালেই রয়ে গেছে বৈকি! বাংলা বাঙালির ভাষা, চিরকালই তাই ছিল, এখনও সে রকমই আছে; কিন্তু শাসকরা জনগণের থেকে দূরেই রয়ে গেছে, যেমন তারা আগে ছিল। শাসকশ্রেণির সন্তানরা ইংরেজি শেখে, তারা দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে, বিদেশে ঘরবাড়ি কেনে এবং তাদের সন্তানরা বিদেশমুখী হয়। বাংলার প্রচলনের অন্তরায় অন্য কেউ ঘটাচ্ছে না, জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে দেশের বিদেশমুখী ও বিদেশপ্রভাবিত শাসকরাই ঘটাচ্ছে। শাসকশ্রেণির প্রধান যোগ্যতা তারা ধনী। এরা ইংরেজি ব্যবহার করতে পারলে খুশি হয়। পাশাপাশি বাণিজ্যিক রেডিও স্টেশনগুলোর বিকৃত ও বাংলিশ উচ্চারণ মাতৃভাষাকে প্রভাবিত করছে।

ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও ইউটিউবের মাধ্যমে বর্তমানে আমাদের দেশের ঘরে ঘরে ও হাতে হাতে আগমন ঘটছে হিন্দি ভাষার। যার কারণে অনেকেই খুব সহজে বাংলাকে বিতাড়িত করে হিন্দি ভাষা শিখছে। অতীতে আমরা উর্দুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু বর্তমানে হিন্দির জন্য আমাদের দরজা-জানালা খোলা। বিশ্বে এখন বাংলাভাষীর সংখ্যা প্রচুর, ত্রিশ কোটিরও বেশি হবে; সংখ্যাবিচারে বাংলাভাষী মানুষের স্থান পঞ্চম। কিন্তু বাংলা ভাষার মর্যাদা খুবই কম। কারণ কী? কারণ হচ্ছে আমরা সংখ্যায় অনেক ঠিকই কিন্তু সক্ষমতায় সামান্য। অনেকটা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মতোই; পরিমাণে শিক্ষিতদের সংখ্যা অনেক, কিন্তু গুণগতমান নিম্নগামী। বাংলা ভাষার উৎকর্ষ ও প্রয়োগ বৃদ্ধির জন্য আমরা বিভিন্ন কাজের সুপারিশ করতে পারি। যেমন, পাঠাগার গড়ে তোলা; বাংলায় সংস্কৃতিচর্চার গুণ ও ব্যাপকতা বৃদ্ধি। বলতে পারি ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণের আবশ্যকতার কথা। সাহিত্যচর্চার অপরিহার্যতার বিষয় তুলে ধরতে পারি। উচ্চ আদালতের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের অনুরোধ জানাতে পারি বাংলা ব্যবহারের। কিন্তু মূল ব্যাধিটাকে যেন না ভুলি। সেটি হলো বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় চরিত্র। ওই চরিত্রে বদল ঘটিয়ে, রাষ্ট্রকে জনগণের অধীনে নিয়ে আসতে হবে। সেটি ঘটলে রাষ্ট্র, সমাজ ও ব্যক্তিজীবনের সর্বত্র জনগণের ভাষা অব্যাহতরূপে ব্যবহৃত হবে, তার উন্নতির পথে অন্তরায় থাকবে না। 

মায়ের ভাষা বাংলা ভাষার মর্যাদা আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। দেশের সর্বত্রই বাংলা ভাষার প্রচলনের ব্যাপারে সরকারের পাশাপাশি সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের সন্তানদের বাংলা ভাষা শেখার ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলতে হবে।

লেখক পরিচিতি,  প্রাবন্ধিক




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close