ই-পেপার মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ই-পেপার

মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রতিবেশীর প্রকার ও বিধান
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯:৩৮ এএম  (ভিজিট : ১৪০)
পৃথিবীতে মানুষ একে অন্যের সহযোগিতা নিয়ে বসবাস করে। মানুষের এ পারস্পরিক সহযোগিতা সূচনা হয়েছিল হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.)-এর সময়কাল থেকে। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে মানুষের সামাজিক পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে মানুষের সামাজিক চাহিদা ও প্রয়োজন।

তাই ইসলাম পরস্পরের সম্পর্কের হক ও অধিকার যথাযথ আদায়ের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়’ (মুসলিম : ১৮৩)। তাই প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে একজন মুমিন মুসলমানের সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।

ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের প্রতিবেশী হচ্ছে আশপাশের মুসলিম, অমুসলিম যে কোনো ধর্মাবলির অনুসারী, নেক বান্দা, ফাসেক, বন্ধু, শত্রু, ভিনদেশি, স্বদেশি, উপকারি, অনিষ্টকারী, আত্মীয়, অনাত্মীয়, কাছের বা দূরের সবাই। শুধু পাশের ঘরের লোকেরাই প্রতিবেশী তা নয়। প্রতিবেশী বিভিন্নভাবে হতে পারে। একজনের জমির পাশে আরেকজনের জমি থাকলে তারা একে অন্যের প্রতিবেশী। একজনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশে আরেকজনের প্রতিষ্ঠান থাকলে তারাও পরস্পর প্রতিবেশী। কোনো বাহনে কোথায় যাওয়ার সময়ে যাত্রীরাও কিছু সময়ের জন্য একে অন্যের প্রতিবেশী। অর্থাৎ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক ও বন্ধনের যতগুলো সূত্র আছে সবই এর অন্তর্ভুক্ত।

এ দৃষ্টিকোণ থেকে একজন মুসলমানের প্রতিবেশী তিন শ্রেণির-

১. অনাত্মীয় বিধর্মী প্রতিবেশী, এ শ্রেণির প্রতিবেশীরা সামাজিক ও মানবিক সৌজন্যতা লাভ করবেন।

২. মুসলিম প্রতিবেশী, মুসলিম প্রতিবেশী একজন মুসলিম হিসেবে ও একজন প্রতিবেশী হিসেবে দুদিক থেকে তার হক পাবেন।

৩. মুসলিম আত্মীয় প্রতিবেশী, একজন প্রতিবেশী, একজন মুসলিম ও একজন আত্মীয় হিসেবে তার হক পাবে। ইসলামে আত্মীয়স্বজনের জন্য বিশেষ হক রয়েছে। যে ব্যক্তি আত্মীয়স্বজনের হক আদায় করে না এবং তাদের বঞ্চিত করে সে ব্যক্তি রাসুল (সা.) এর উম্মত নয়।

এখানে তিনটি শ্রেণিই এক প্রতিবেশী হিসেবে তার হক পাবেন। প্রতিবেশীর বিপদে পড়লে সহায়তা করা, অসুখ হলে প্রয়োজনে সেবা করা বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়া, মারা গেলে একে অন্যের দাফন ও জানাজায় অংশ নেওয়া, প্রতিবেশীর কষ্ট হয় এমন কোনো কাজ না করা ইত্যাদি বিষয়গুলো একজন উত্তম প্রতিবেশী হিসেবে খেয়াল রাখা জরুরি। হাদিসে এসেছে, ‘যে তার ভাইয়ের প্রয়োজন পুরো করে আল্লাহ তার প্রয়োজন পুরো করেন।’ (বুখারি : ২৪৪২)

ইসলামে সচ্চরিত্র, সৎ, আদর্শ, ন্যায়পরায়ণ প্রতিবেশীকে জীবনের জন্য সৌভাগ্যের নিদর্শন হিসেবে ধরা হয়। রাসুল (সা.) তিনটি জিনিসকে সৌভাগ্যের প্রতীক বলেছেন-  ১. প্রশস্ত বাসস্থান। ২. সৎ প্রতিবেশী ও ৩. রুচিসম্মত বাহন।

একজন প্রতিবেশীর সম্পর্কে তার প্রতিবেশীই সবচেয়ে ভালো জানেন। হজরত ইবন মাসউদ (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি মহানবীকে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! কীভাবে জানব, ভালো কাজ করছি নাকি মন্দ কাজ করছি? নবীজি বললেন, যখন প্রতিবেশীকে বলতে শুনবে যে, ভালো কাজ করছ তখন মূলতই ভালো কাজ করছ। আর যখন তাদের বলতে শুনবে, খারাপ কাজ করছ তখন মূলতই খারাপ কাজ করছ। আসলে একজন প্রকৃত মুমিন বা মুসলিম হতে হলে ইসলামের সব নির্দেশনা মেনে চলা অতীব প্রয়োজন। তাই প্রতিবেশী ও পাশের মানুষটির জন্য আমার ওপর অর্পিত কর্তব্য মেনে চলাও একান্ত জরুরি।


সময়ের আলো/এএ/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close