প্রকাশ: সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৫:২৯ পিএম (ভিজিট : ২৬৬)
নরসিংদীর শেখেরচরে ঘরে ঢুকে সুমনা আক্তার তিথি (১৩) নামে এক কিশোরীকে হত্যা ও মাকে আহতের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। এসময় লুট হওয়া ১০ লাখ ১ হাজার টাকাসহ হত্যার বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান। এর আগে গত কয়েকদিনে নরসিংদীসহ দেশের ৫ জেলায় অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানার পাঁচই এলাকার বাসিন্দা ফরিদ হোসেনের ছেলে ও শেখেরচর এলাকার ভাড়াটিয়া মো. রমজান শেখ ওরফে লিমন (২২), তার ভাই হাসিবুর রহমান শান্ত (৩১), নেত্রকোণার কেন্দুয়া থানার গন্ডা এলাকার বাসিন্দা ইনসান মিয়ার ছেলে ও শেখেরচর এলাকার ভাড়াটিয়া মো. কাউছার মিয়া (২০) ও নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া থানার চর গোয়াশ এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুল খালেক ওরফে বাবলুর ছেলে ও শেখেরচর এলাকার ভাড়াটিয়া মো. ইমন আলী (২১)।
তারা নরসিংদীর শেখেরচর এলাকার ভাড়ায় বাড়িতে বসবাস করে বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। গৃহকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বাড়ির পাশেই চা-পানের দোকান করতেন। সেখানে নিয়মিত আসা যাওয়া ছিল আসামিদের। সে সুবাধে বাড়িতে বিদেশ হতে টাকা আসার খবর জেনে যায় তারা।
পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বিদেশ হতে পাঠানো বাসায় রাখা মোটা অংকের টাকা লুট করতেই গত ২৭ জানুয়ারি রাতে শেখেরচর বাজার সংলগ্ন এলাকার চা-পানের দোকানী মোফাজ্জল হোসেনের বাড়িতে ঢুকে গ্রেফতারকৃতরা। এসময় ৭ বছরের প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানকে বাথরুমে আটক রাখে তারা। পরে বাসায় থাকা টাকা লুট করার সময় বাধা দিলে গৃহবধূ আসমা বেগম ও মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সুমনা আক্তার তিথিকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় অসংখ্য আঘাত করে মৃত ভেবে চলে যায়।
পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে গৃহকর্তা মোফাজ্জল হোসেন ঘরে ঢুকে স্ত্রী ও সন্তানকে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কিশোরী তিথীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। গুরুতর আহত মা আসমা বেগম (৩৮) ঢাকার একটি হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তাৎক্ষণিকভাবে কে বা কারা ঠিক কারণে এ হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে জানাতে পারেনি গৃহকর্তা মোফাজ্জল হোসেন। পরে তিনি বাদী হয়ে এ ঘটনায় সদর থানায় অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নরসিংদী, ফরিদপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা ও বরিশালে অভিযান চালিয়ে জড়িতদের গ্রেফতার ও লুট হওয়া ১০ লাখ ১ হাজার টাকাসহ হত্যার ঘটনার বিভিন্ন আলামত জব্দ করে পিবিআই এর একটি দল। গ্রেফতারকৃতরা আদালতে দেয়া জবানবন্দীতে টাকা লুট ও হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানান পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান।