ই-পেপার মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ই-পেপার

মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বই মেলার স্থাপনায় লোকজ ঐতিহ্য
প্রকাশ: সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:১৭ এএম  (ভিজিট : ১৭২)
বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘুরতে ঘুরতে চোখ আটকে যায় সজ্জায়। স্টল এবং প্যাভিলিয়নগুলোর স্থাপনায় এবার দেখা যায় গ্রামীণ ঐতিহ্যের টান। কাঠ, বাঁশ, টিনের উপকরণে নির্মিত স্টলগুলো মনে আনে গ্রামীণ সংস্কৃতির আবহ। প্যাভিলিয়নগুলোর নকশার সৌন্দর্য আলাদা করে নজর কাড়ে। এতে বইমেলার অভিজ্ঞতা আরও মনোমুগ্ধকর হয়ে ওঠে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লেকপাড় থেকে একটু এগোলেই দেখা মিলবে একচালা একটি ঘর। লেখা আছে ‘ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড’। বই রাখার তাকগুলো কাঠের তৈরি। কাঠ মোবাইল স্ট্যান্ডের মতো করে বইগুলো আটকে রেখেছে। অনেকে এসে ছবি তুলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ ঘুরে ঘুরে বই দেখছেন। এখান থেকে কাজী মোহাম্মদ নোমান নামের এক বিক্রেতা বলেন, এটা গ্রামের একচালা ঘরের মতো। তাকগুলো দেখতে খুব সুন্দর। আলাদা আলাদাভাবে বইগুলো এক প্রকার ঠেস দিয়ে আটকে রাখা। অনেকে এখানে আসছেন ছবি তুলছেন। গ্রামীণ নান্দনিকতা ও ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলেছে ‘বাতিঘর’। একসময় গ্রামে টালির ঘর পাওয়া যেত। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন তা হারিয়ে গেছে। তবে সেই গ্রামীণ আবহ তুলে ধরেছে ‘বাতিঘর’। এটির বেড়ার কিছু অংশ বাঁশের তৈরি। ওপরে মাটির টালি। আর ভেতরে হাতির পিঠে আরোহণকারীদের জন্য যে ছাদ বা ছত্রি বসানো হতো তার আদলে গোল করে বইয়ের তাক। মুজাহিদুল আলম নামের এক বিক্রয়কর্মী বলেন, টালির ঘর গ্রামাঞ্চল থেকে হারিয়ে গেছে। এ স্টলে ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। অনেকে এখানে এসে ছবি তুলছেন।

লেকপাড় থেকে একটু এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে চারচালা একটি ঘর। গ্রামাঞ্চলে এখন এ ধরনের ঘর নেই বললেই চলে। তবে এবারের বইমেলায় ‘আফসার ব্রাদার্স’ সেই ঐতিহ্যকে সবার সামনে তুলে ধরেছে। বিক্রয়কর্মী নাজিফা নওশীনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী চারচালা ঘরের মতোই এ প্যাভিলিয়নকে আকার দেওয়া হয়েছে। অনেকে এখানে এসে ঘুরে ঘুরে দেখছেন। এ ছাড়া কথাপ্রকাশ, অনিন্দ্য প্রকাশ, দেশ পাবলিকেশন, অনন্যা প্রকাশনী, পুথিনিলয়, নালন্দাসহ বেশ কয়েকটি প্যাভিলিয়ন নান্দনিকভাবে সাজানো হয়েছে। বইমেলার প্যাভিলিয়ন আর স্টলগুলোর এমন সজ্জা দেখে অভিভূত হন অনেকেই। এমন ধারার মানুষের মধ্যে শামিম হায়দার একজন। তিনি এবারই প্রথম বইমেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, একসময় আমাদের গ্রামের বাড়িতে টালির ঘর ছিল। একচালা ঘরও ছিল। প্রতিবেশী চাচার বাড়িতে চারচালা ঘর দেখেছি। এখন এ ঘরগুলোর পরিবর্তে দালান ঘর হচ্ছে। এসব ঘর যে এখানে দেখতে পাব তা ভাবিনি।

মেলায় আসা রাশেদ আহমেদ বলেন, বাঙালির কাছে অমর একুশে বইমেলা শুধু বইয়ের মেলা না। এটি একইসঙ্গে ঐতিহ্যেরও ধারক। বইমেলায় আমরা সেই ঐতিহ্য দেখার সুযোগ পাচ্ছি। আমার মনে হয় সব প্রকাশনীর আলাদা আলাদা বৈচিত্র্য তুলে ধরা উচিত। আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যেও তো শেষ নেই।

তথ্যকেন্দ্র থেকে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও নান্দনিক স্টলের জন্য বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে পুরস্কার দেওয়া হবে।  এদিকে বইমেলার দ্বিতীয় দিনে এসেও অনেক স্টলে বই ওঠানো হয়নি। চলছে স্টল নির্মাণ। অপরদিকে দ্বিতীয় দিনেও খাবারের স্টলগুলো ঠিকঠাক করে বসেনি। স্টল দ্রুত নির্মাণের জন্য নির্মাণ শ্রমিকরা দিনভর কাজ করে যাচ্ছেন।

রোববার মেলা শুরু হয় বেলা ৩টায়। চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিন মেলায় নতুন বই এসেছে ১৩টি। বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘হেলাল হাফিজের রাজনৈতিক পাঠ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. কুদরত-ই-হুদা। আলোচনায় অংশ নেন মৃদুল মাহবুব। সভাপতিত্ব করেন সুমন রহমান।

লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন, কবি রাসেল রায়হান, কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন শফিক এবং শিশুসাহিত্যিক আশিক মুস্তাফা।

আজ সোমবার বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘হায়দার আকবর খান রনো’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সোহরাব হাসান। আলোচনা করবেন আবদুল্লাহ আল ক্বাফী রতন এবং জলি তালুকদার। সভাপতিত্ব করবেন দীপা দত্ত।


সময়ের আলো/এএ/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close