ই-পেপার মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ই-পেপার

মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

থমকে গেছে সব কর্মসূচি
প্রকাশ: শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১:২৫ এএম  (ভিজিট : ৪২২)
বাংলাদেশে বর্তমানে ৮৮টি এনজিও পরিচালিত হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে। এর বাইরে আইসিডিডিআরবির মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের অনেক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কর্মসূচিও পরিচালিত হয় দেশটির অর্থে। এ রকম আরও কিছু সংস্থায় অর্থায়ন করে দেশটি। এ ছাড়া বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও বড় দাতা দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে দেশ স্বাধীনের পর থেকে আজ অবধি।

দেশটি হঠাৎই ঘোষণা দিয়েছে, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা কার্যক্রম ৯০ দিনের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। এ ঘোষণায় ওই এনজিগুলো ছাড়াও তাদের অর্থায়নে পরিচালিত বাংলাদেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি প্রকল্পের উন্নয়ন কর্মসূচি একরকম থমকে গেছে। 

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণা অনেকটা বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। মার্কিন অর্থায়ন স্থগিত হওয়ায় বাংলাদেশে এর বহুমাত্রিক প্রভাব পড়বে।
স্বাধীনতার তিন বছর পর থেকেই বাংলাদেশ বিভিন্নভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা পেয়ে আসছে। এ সহায়তা মূলত দেশের উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং মানবিক প্রচেষ্টাকে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে নিতে নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে মা ও শিশুস্বাস্থ্য, সংক্রামক রোগ মোকাবিলা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদানে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া পরিবহন ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে দেশটি।

জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার। ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত ‘অর্থনৈতিক প্রযুক্তিগত ও সম্পর্কিত সহায়তা’ শীর্ষক একটি চুক্তির অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও শাসনের মতো বিভিন্ন খাতে আজ অবধি ৮০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি ফান্ড দিয়েছে। তবে হঠাৎ সহায়তা স্থগিত করায় সংকটে পড়েছে বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান।

মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত এনজিও ও সংস্থায় শুরু হয়েছে গণছাঁটাই। গতকাল বাংলাদেশে পরিচালিত আন্তর্জাতিক সংস্থা-আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ-এ (আইসিডিডিআরবি) এক দিনে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে ১ হাজার কর্মীকে। ইউএসএইডের মাধ্যমে পরিচালিত বিভিন্ন সংস্থাতেও ছাঁটাই শুরু হয়েছে। মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করা এবং শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে কাজ করা সলিডারিটি সেন্টার-বাংলাদেশের সব কার্যক্রমও থমকে গেছে। বেতন ও চাকরির অনিশ্চয়তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এসব প্রতিষ্ঠানে  কর্মরতরা। অর্থায়ন স্থগিতের কারণে সংকটে পড়লেও এ বিষয়ে গণমাধ্যম বা অন্য কোনো প্ল্যাটফর্মে এ বিষয়ে কর্মরতদের মুখ খুলতে একেবারেই মানা করা হয়েছে। সবমিলিয়ে মার্কিন সরকারের এ সিদ্ধান্তে তাদের অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত এনজিও এবং অন্য সব সংস্থায় রীতিমতো গুমোট পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে সলিডারিটি সেন্টার, বাংলাদেশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সময়ের আলোকে বলেন, ‘যদিও মার্কিন সরকারের সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্তের বিষয়ে গণমাধ্যম থেকে শুরু করে যেকোনো স্থানে কোনো রকম কথা না বলার জন্য আমাদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তবে বাস্তবতা হচ্ছে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের আর্থিক সহায়তা বন্ধের যে ঘোষণা দিয়েছে-তাতে আমরা চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েছি। প্রতি তিন মাস পরপর আমাদের অর্থ ছাড় দেওয়া হয়। নতুন বছর শুরু হওয়ায় এ বছরের অর্থ আমরা এখনও পায়নি, তার আগেই বন্ধ ঘোষণা করা হলো। এর ফলে আমাদের সব কর্মসূচি বন্ধ তো হয়েছেই, সব কর্মীর বেতন এবং চাকরি নিয়েও চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। হয়তো অনেকেই চাকরিচ্যুতও হতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।’

এদিকে অর্থনীতিবিদ ও সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান মনে করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ ঘেষণা বাংলাদেশের জন্য বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। তিনি বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের পর থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী। দেশের স্বাস্থ্য খাত, শিক্ষা, অবকাঠামো এবং জ¦ালানিসহ অনেক খাতে দেশটি অর্থায়ন করে থাকে। এ জন্য হঠাৎ অর্থায়ন বন্ধ করায় বাংলাদেশের ক্ষতি হবে বহুমাত্রিক। যদিও দেশটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তবুও আমি মনে করি এখানেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন সময় এ ধরনের ঘোষণা দিল যখন বাংলাদেশের অর্থনীতি টালমাটাল অবস্থায় আছে। দেশে এখন ডলার সংকট প্রকট, রিজার্ভ কমে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। তিন মাস যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আর্থিক সহায়তা বন্ধ থাকে তা হলে দেশের রিজার্ভ সংকট আরও খারাপ অবস্থায় পড়বে। ডলারের বাজারে অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে। কারণ এ তিন মাসে দেশটি থেকে তো অনেক ডলার আসত। সেগুলো আসা বন্ধ হওয়ায় নিঃসন্দেহে সংকট বাড়বে।’

৮৮ এনজিওর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় : গত ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর দেওয়া তথ্য মতে, বর্তমানে বাংলাদেশে ৮৮টি এনজিও পরিচালিত হয় মার্কিন অর্থায়নে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে-একশন ফর এন্টারপ্রাইজ, আমেরিকান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল লেবার সলিডারিটি, কেয়ার বাংলাদেশ, ক্রিশ্চিয়ান সার্ভিস ইন্টারন্যাশনাল, কমিউনিট রিকভারি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, ফ্যামিলি হেলথ ইন্টারন্যাশনাল, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ-ইউএসএ, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল, হোপ ওয়ার্ল্ডওয়াইড বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন ফাউন্ডেশন, ইন্টারন্যাশনাল রিলিফ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, সেভ দ্য চিলড্রেন-ইউএসএ, সোনারবাংলা ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, স্পন্দন বাংলাদেশ, টেক ফর বাংলাদেশ, দ্য কার্টার সেন্টার, ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ।

এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ কয়েকটির কর্মীর সঙ্গে কথা হয় সময়ের আলোর। এর মধ্যে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সময়ের আলোকে বলেন, ‘আমরা এখন চাকরির অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গিয়েছি। ইতিমধ্যেই আমরা শুনতে পেয়েছি, বেশ কিছু কর্মী ছাঁটাই করা হবে। অফিসের সবার মাঝেই আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

কেয়ার বাংলাদেশের এক নারী কর্মী সময়ের আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজধানী থেকে শুরু করে একেবারে প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত কেয়ার বাংলাদেশের কার্যক্রম চলে আসছে। হঠাৎ অর্থায়ন স্থগিতের ঘোষণায় অনেক কার্যক্রমই এখন থমকে গেছে। আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি-কার কখন চাকরি চলে যায় কিংবা বেতন আটকে যায়।’

শ্রম অধিকার নিশ্চিত কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত : আমেরিকান সেন্টর ফর ইন্টারন্যাশনাল লেবার সলিডারিটি (সলিডারিটি সেন্টার) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৃহত্তম আন্তর্জাতিক শ্রমিক অধিকার সংস্থা। এ সংস্থা শ্রমিকদের নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর কর্মক্ষেত্র, পরিবারের জীবন ধারণের উপযোগী মজুরি, চাকরিতে মর্যাদা, পরিপূর্ণ গণতন্ত্র এবং কর্মক্ষেত্রে ও তাদের সমাজে সার্বিক ন্যায়বিচার পেতে সহায়তা করে। সলিডারিটি সেন্টার, এএফএল-সিআইওর সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী বৈষম্য, শোষণ এবং দারিদ্র্যকে প্রশ্রয় দেয় এমন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করতে কর্মীদের সহায়তা করে। সংস্থাটির ৩০০ জনেরও বেশি পেশাদার কর্মী বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬০টির অধিক দেশে শক্তিশালী ও কার্যকর ট্রেড ইউনিয়ন গঠন এবং অধিক ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৯০০টিরও বেশি অংশীদারের সঙ্গে কাজ করে, যার মধ্যে রয়েছে ৫০০টি ট্রেড ইউনিয়ন, শ্রমিক সমিতি ও কম্যুনিটি গ্রুপ, যাদের ব্যাপক পরিসরে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা, আইনি সহায়তা এবং অন্যান্য সহযোগিতা দিচ্ছে। অর্থায়ন স্থগিত করায় এসব কাজও থেমে গেছে।

কেমন অর্থ দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র : মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ‘ফরেইন অ্যাসিস্ট্যান্স ডট গভ’ ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, প্রতি বছর আন্তর্জাতিক সাহায্য খাতে যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়। যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য ২০২০ সালে ৫২ বিলিয়ন, ২০২১ সালে ৫৩ বিলিয়ন, ২০২২ সালে ৭৬ বিলিয়ন, ২০২৩ সালে ৬৮ বিলিয়ন, ২০২৪ সালে ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্নভাবে বাংলাদেশে ২০২১ সালে ৫০০ মিলিয়ন ডলার, ২০২২ সালে ৪৭০ মিলিয়ন ডলার, ২০২৩ সালের ৪৯০ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪ সালে ৪৫০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে। ইউএসএআইডি গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশকে প্রায় ২০ কোটি ২২ লাখ ডলার অর্থ সহায়তা দেওয়ার চুক্তি করে। এর আগে ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১-২০২৬ সালের জন্য বাংলাদেশ ও ইউএসএআইডির মধ্যে একটি নতুন ডিওএজি (ডেভেলপমেন্ট অবজেক্টিভ গ্রান্ট এগ্রিমেন্ট) স্বাক্ষর হয়। ডিওএজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইউএসএআইডি মোট ৯৫ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এ ছাড়া রোহিঙ্গা রিফিউজি রেসপন্সের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থ সহায়তা ২০২১ সাল থেকে অব্যাহতভাবে কমছে। চলতি বছরে ১১ কোটি ৮৫ লাখ ডলার দেওয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রের। সেটি পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

আইসিডিডিআরবির এক হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই : এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন স্থগিতের জেরে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এসব কর্মীকে গত বুধবার থেকে পর্যায়ক্রমে চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

গতকাল এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইসিডিডিআরবির কমিউনিকেশন্স বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক একেএম তারিফুল ইসলাম খান সময়ের আলোকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্প ও গবেষণা পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সেবাগ্রহীতা, বিভিন্ন অংশীদার ও সহকর্মীদের অসুবিধার জন্য সহানুভূতি ও দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা আশাবাদী পুনরায় আমাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারব।

আইসিডিডিআরবির আরেক কর্মকর্তা জানান, আমাদের এক হাজারের বেশি মানুষকে টার্মিনেশন লেটার (চাকরিচ্যুতির চিঠি) দেওয়া হয়েছে। তারা মূলত ইউএসএআইডিসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি সংস্থার অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পে কাজ করতেন।

জানা গেছে, আইসিডিডিআরবির সবচেয়ে বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ হারিয়েছেন সংক্রামক রোগ বিভাগের যক্ষ্মাবিষয়ক কর্মসূচি থেকে। যক্ষ্মা কর্মসূচির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারের জাতীয় যক্ষ্মানিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সঙ্গে কাজ করতেন।

গত ২৫ জানুয়ারি ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের ইউএসএআইডির দফতর চিঠি দিয়ে বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) বা তাদের কাজের অংশীদার সব প্রতিষ্ঠানকে সব ধরনের কাজ তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ বা স্থগিত রাখতে বলেছে। চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের উল্লেখ করা হয়। ওই নির্বাহী আদেশ বিদ্যমান বৈদেশিক সহায়তা দেওয়া স্থগিত ও নতুন সহায়তা বন্ধের কথা বলা হয়েছে। জরুরি খাদ্যসহায়তা এবং ইসরাইল ও মিসরে সামরিক সহায়তা এ নির্বাহী আদেশের বাইরে থাকবে।

উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীবার মেয়াদে ক্ষমতায় বসেই বিদেশে সহায়তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন। তাতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টসহ (ইউএসএআইডি) বিভিন্ন বৈশ্বিক কর্মসূচির কোটি কোটি ডলারের তহবিল হুমকির মুখে পড়েছে।

এ ব্যাপারে সিএনএন লিখেছে, বিদেশে মার্কিন সহায়তা ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না’ তা পর্যালোচনার জন্য ফেব্রুয়ারিতে মানদণ্ড তৈরি করবে ট্রাম্প প্রশাসন। এ পর্যালোচনার পরে সহায়তা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া, সংশোধন করা বা সমাপ্ত করা হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সময়ের আলো/আরএস/ 





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close