বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একাদশতম আসরও শেষ হতে চলল। গত দশটি আসরের মতো এবার অন্তত বিতর্ক হবে না এমনটাই প্রত্যাশা ছিল সবার। অবশ্য সেই প্রত্যাশাটা আরও বাড়িয়ে দেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ। নাজমুল হাসান পাপনের পর বিসিবির দায়িত্ব নিয়ে বলেছিলেন, নতুন বিপিএল হবে এবার।
তবে দিন যত গড়িয়েছে, বিপিএলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন বিতর্ক। অন্য আসরগুলোকেও যেন ছাড়িয়ে গেছে টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার আগেই। যে বিষয়টি বারবার সামনে আসছে সেটি হলো ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক না দেওয়া।
বিশেষ করে দুর্বার রাজশাহী, চিটাগং কিংসের পারিশ্রমিক ইস্যুতে উদাসীনতা চোখে পড়ার মতো। ম্যাচের আগে চেক দেওয়া হলেও সেই চেকের অর্থ ক্রিকেটারদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যুক্ত হচ্ছে না। রাজশাহীর চেক এ নিয়ে দুইবার বাউন্স করেছে। এদিকে চিটাগং কিংসের খেলোয়াড়রাও পারিশ্রমিক পাননি ঠিকঠাক। দুটি দলই বিপিএলে ফিরেছে লম্বা বিরতির পর।
তবে দুদলের কাছ থেকে পারিশ্রমিক ইস্যুতে অপেশাদার আচরণ পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। বিশেষ করে রাজশাহীর হয়ে খেলতে আসা শ্রীলঙ্কার লাহিরু সামারাকুন। এই লঙ্কান অলরাউন্ডার বিসিবির কাছে বিষয়টি জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি। একটি ম্যাচ খেললেও শেষ পর্যন্ত কোনো পারিশ্রমিক না নিয়েই ফেরেন দেশে।
এমন পরিস্থিতিতে শুধু বিপিএল নয় দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তিও বেশ বিতর্কের মুখে পড়ছে। এর থেকে উত্তরণের কোনো পথই যেন খুঁজে পাচ্ছে না বিসিবি।
বিপিএলের এই অবস্থায় বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক ও ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল জানিয়েছেন বিসিবিকে আরও সতর্ক হতে হবে ফ্র্যাঞ্চাইজি নির্বাচনের ক্ষেত্রে, ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি বেছে নেওয়ার সময় আরও সতর্ক হতে হবে বিসিবিকে।’
বিশেষ করে ড্রাফটের বাইরে যারা সরাসরি চুক্তিতে খেলতে আসেন, তারাই এমন বিপদে পড়েন। সে ক্ষেত্রে তামিম বললেন, ‘ড্রাফটের বাইরে কেউ সাইনিং করলে এটারও যেন একটা চুক্তি থাকে, একটা আমি নিজের কাছে রাখব একটা বিসিবিকে দেব একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি রাখবে। অন্তত বিসিবি জানবে আমি কত পাচ্ছি। এ জিনিসটা করলে এসব সমস্যা হবে না। এই টুর্নামেন্ট হিউজ পটেনশিয়াল। আমরা কাজগুলো ঠিকঠাক করছি না।’
এর আগে তামিমের সঙ্গেও পারিশ্রমিক ইস্যুতে বিতর্ক হয়েছিল। ২০১৩ সালের আসরে চিটাগং কিংসের হয়ে খেলার পর পারিশ্রমিক না পাওয়ার একটা গুঞ্জন আসছে এবারের আসরে। এ নিয়ে তামিম বলেন, ‘বোর্ডে যারা এসেছিলেন, আমাকে একটা পেমেন্ট দিয়েছিলেন। ওই অ্যামাউন্ট ছিল না, তার চেয়ে কম ছিল। তবে সমাধান হয়ে গিয়েছিল। আমি চাই বিপিএল অনেক ভালো করুক, অনেক নাম করুক। একটা সময় আমরা অনেক দ্রুত আগাচ্ছিলাম। যখন ফ্র্যাঞ্চাইজি নিচ্ছেন খুব সতর্ক হওয়া উচিত, কাকে দল দিচ্ছেন কাকে দল দিচ্ছেন না। দিন শেষে একটা দল যদি খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক দিতে না পারে। অতীতে এমন হয়েছে ৫০ শতাংশ বাকি, শেষ পর্যন্ত দর কষাকষি করে ২৫ শতাংশ দিয়ে খুশি হয়ে চলে যায়।’
সময়ের আলো/আরএস/