প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ১:৫৫ এএম (ভিজিট : ৬০)
দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনেক অলি, বুজুর্গ ও পীরের মাজার রয়েছে। যারা একসময় এ দেশের আপামর জনতার মাঝে ইসলামের প্রচার-প্রসার করেছেন। উপস্থাপন করেছেন ইসলামের সঠিক দিকনির্দেশনা। এখনও বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের দ্বীনি খেদমতের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এমন সম্মানিত আলেম ও পীরগণ সমাজে ন্যায়বিচার এবং ইসলামের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে সবাইকে আমরণ সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। যাদের নির্দেশনায় সঠিক পথের সন্ধান পেয়েছে হাজারো পথভোলা মানুষ। এভাবেই ইসলামের প্রচার-প্রসার হয়েছে, এখনও হচ্ছে। মানুষ দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হচ্ছে। এভাবে এখনও বহু মানুষ ইসলামের সঠিক দিকনির্দেশনা গ্রহণ করছে।
যারা সারাজীবন ইসলামের সঠিক শিক্ষা ছড়িয়েছেন দেশ-বিদেশে, এমন বিখ্যাত বুজুর্গ আলেম ও পীরদের মৃত্যুর পর তাদেরই কিছু অনুসারী, ভক্ত, মুরিদ প্রভৃতি শ্রেণির লোকজন তাদের কবরকে মাজার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। সাধারণ মানুষ ও ভক্তরা সম্মান-শ্রদ্ধা, ভক্তি এবং ভালোবাসার নামে ইসলামবহির্ভূত বহু অনাকাক্সিক্ষত আচরণ করছেন এমন সব মহান মনীষী-বিদ্বান আলেম ও বুজুর্গদের সঙ্গে; যা কখনো কোনোভাবেই কাম্য নয়। এমনকি বর্তমানে ভক্তরা এমন পীরদের কবরে সেজদা করতেও কুণ্ঠিত হচ্ছেন না। কেউ হয়তো একেই ইবাদত জ্ঞান করে পুণ্যের আশায় এমন আচরণ করছেন। অথচ সেজদার উপযুক্ত একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। যা নামাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ কথা কারও কাছে অজানা নয়।
আর ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ শ্রেণির লোকসংখ্যাই বেশি। এমনকি যেকোনো ধরনের শিক্ষাবঞ্চিত সাধারণ মানুষদেরই এমন চিন্তা লালন করতে দেখা যায়। যারা মাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন মানত-সেজদা ইত্যাদি করেন। এ জন্য সবার জন্য আবশ্যক হলো, ইসলামের সঠিক জ্ঞান অর্জন করা। বিজ্ঞ আলেমের সান্নিধ্যে গিয়ে সঠিক দিকনির্দেশনা গ্রহণ করা। আমলযোগ্য বিষয় পালন করা। বাকি যাবতীয় অন্যসব কাজ থেকে বিরত থাকা। সাধারণত মানুষ বরকত বা পুণ্যের আশায় এমন আচরণ করে থাকে। কুরআন, হাদিস ও ইতিহাসের নির্ভরযোগ্য কিতাবেও পূর্ববর্তী বহু মানুষের এমন কিছু বিবরণ এসেছে যে, তারা তাদের পূর্ববর্তী মনীষীদের স্মরণে এমন কিছু ভক্তিমূলক আচরণ করতেন যা পরবর্তী সময়ে তাদের পূজনীয় ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করে দেয়। বসিয়ে দেয় স্রষ্টার আসনে। এ জন্য এমন আচরণ থেকে বিরত থাকা উচিত, যা আমাদের ঈমান আমল আকিদার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এমনকি অনেক সময় এসব কর্ম কুফর ও শিরকের মতো জঘন্য ও ঘৃণ্যও বটে। যার ফলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে ঈমানসহ মানুষের যাবতীয় নেক আমলও।
হাদিসে এসেছে, সাহাবি হজরত জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সাবধান থেকো, তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তাদের নবী ও নেককার লোকদের কবরগুলোকে মসজিদ (সেজদার স্থান) হিসেবে গ্রহণ করত। সাবধান, তোমরা কবরগুলোকে সেজদার স্থান বানাবে না। আমি তোমাদের এমন করতে নিষেধ করে যাচ্ছি’ (সহিহ মুসলিম)। কাজেই এ হাদিসের আলোকে ইসলাম যেকোনো ধরনের পীরের মাজারে যাওয়া, মৃতদের কবরে সেজদা করা, বিভিন্ন নিয়তে টাকা-পয়সা দান ও মানত ইত্যাদি কখনো ইসলাম সমর্থন করে না।