প্রকাশ: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ৪:০৭ এএম (ভিজিট : ৮২)
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ে সড়কবাতি স্থাপনের কয়েক মাসের মধ্যেই দেখতে অনেকটা খেলনা বাতির মতো হয়ে গেছে। দেখভালের অভাবে কাক্সিক্ষত সুফল মিলছে না। কোটি কোটি টাকার সড়কবাতি পড়ে আছে খাম্বার ওপরে। বাতি আছে ঠিকই, কিন্তু নেই আলো। এতে বেড়েছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কে স্ট্রিটলাইটগুলো বন্ধ থাকার কারণে রাস্তার পাশে অপরাধীরা বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটায়। লাইটগুলো থাকলে পুলিশের কাজ করতে সুবিধা হতো। সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী ওসমান গনি বলেন, নয়ারহাট, ধামরাই থেকে বারবাড়িয়া পর্যন্ত স্ট্রিটলাইটের তার ও যন্ত্রাংশ চুরি করে নেওয়ার কারণে লাইটগুলো বন্ধ আছে। এখন পর্যন্ত চোর ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে কয়েকবার। বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অতি দ্রুত লাইটগুলো মেরামত করে চালু করা হবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাতি থাকলেও আলো জ্বলে না কোনো জায়গায়। নিয়ম অনুযায়ী এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার ও দেখভালের কথা থাকলেও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছেন না সড়ক ও জনপথের লোকজন। নিম্নমানের যন্ত্রাংশ সংযোজন করে একটি সিন্ডিকেট বরাদ্দের বেশিরভাগ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, নয়ারহাট ও ধামরাই ইসলামপুর থেকে বারবাড়িয়া পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের অধিকাংশ সড়ক বাতিগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে। খুঁটিগুলো ঠিক দাঁড়িয়ে থাকলেও অনেক স্থানে বাতিগুলো উধাও হয়ে গেছে। এ ছাড়া মহাসড়কের পাশে অনেক যাত্রী ছাউনির ল্যাম্পপোস্টের বাতি অকেজো হয়ে পড়েছে। নয়ারহাট থেকে বারবাড়িয়া পর্যন্ত ৫ শতাধিক বাতি স্থাপন করা হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দিনের পর দিন পড়ে থাকতে থাকতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এগুলো।
ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা সিএনজি পাম্পের পূর্ব পাশে অবস্থিত একটি কার সেন্টারের মালিক শফিক আহম্মেদ বলেন, নিম্নমানের যন্ত্রাংশ বা উপকরণ দেওয়ায় সড়কের বাতিগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে। রাত হলেই রাস্তার দুই পাশ দিয়ে নেমে আসে অন্ধকার। যার ফলে মহাসড়কে দিন দিন বেড়ে চলেছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরও বাতিগুলো ঠিক করছে না। আমরা রাস্তার পাশে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করছি। বাতিগুলো থাকলে আমাদের জন্য অনেক ভালো হয়।
নিরাপদ সড়ক চাই ধামরাই উপজেলা শাখার সভাপতি নাহিদ মিয়া বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হচ্ছে সড়কের ত্রুটি ও অব্যবস্থাপনা। নয়ারহাট থেকে বারবাড়িয়া পর্যন্ত মহাসড়কে স্ট্রিটলাইটগুলো দীর্ঘদিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এতে চলাচলের সময় বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। এ ছাড়া সড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনা। রাস্তায় বাতিগুলো না থাকায় পথচারীরা অন্ধকারে প্রায়ই ছিনতাইয়ের কবলে পড়ছেন।
গাড়িচালক মো. সুরুজ বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক যেখানে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা গাড়ি চলাচল করে। রাতের বেলায় লাইটগুলো চালু থাকলে আমাদের গাড়ি চালাতে সুবিধা হয়। এ ছাড়া রাতে রাস্তার পাশে অপরাধও কম হতো।
সময়ের আলো/আরএস/