ই-পেপার বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫
বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫
ই-পেপার

বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫

প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিকের সমাবেশ বেক্সিমকোর
প্রকাশ: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১:৩৯ এএম  (ভিজিট : ১০৪)
গাজীপুরের শ্রীপুরে সানসিটি মাঠে ৪২ হাজার শ্রমিকের বিশাল সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল বেক্সিমকো গ্রুপের কারখানার শ্রমিকদের পক্ষ থেকে। এ সমাবেশকে ঘিরে পোশাক শিল্প খাতে যাতে বিশৃঙ্খলা দেখা না দেয় সে জন্য সরকারের তরফ থেকে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেক্সিমকো গ্রুপ ও এর শ্রমিকরা সে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিকের সমাবেশ করেছে গতকাল। বেক্সিমকোর কারখানা খুলে দেওয়া, বেক্সিমকো গ্রুপের ব্যবসা চালু করার জন্য ব্যাংকে এলসি খোলার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তা তুলে নেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে এ সমাবেশ করে বেক্সিমকোর শ্রমিকরা। 

গাজীপুর মহানগরীর সারাব এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বন্ধ হয়ে যাওয়া ১৬টি কারখানা পুনরায় চালুর দাবিতে মূলত এ সমাবেশ করেন শ্রমিকরা। গতকাল দুপুর ২টায় সানসিটির মাঠে এ সমাবেশ হয়। এর আগে গত সপ্তাহে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকরা। 
ফিনিসিং কোয়লিটির ইনচার্জ মো. মামুনুর রশিদ গণমাধ্যমকে জানান, দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০টা থেকেই শ্রমিকরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করে। তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। তিনি আরও জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নতুন নতুন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। 

সমাবেশের আগে শ্রমিকরা লিফলেট বিতরণ করে এ কর্মসূচির খবর প্রচার করেছেন। লিফলেটে বলা হয়েছে, ‘সম্মানিত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের কর্মকর্তা, কর্মচারী, শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানানো হচ্ছে, কারখানাগুলো পুনরায় চালু, ব্যাংকিং কার্যক্রম সচল এবং বকেয়া পরিশোধের দাবিতে একত্রিত হোন। আমাদের প্রতিষ্ঠানের ৪২ হাজার পরিবারের ভবিষ্যৎ রক্ষায় আমরা একযোগে কাজ করব।’

গত ১৫ ডিসেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেক্সিমকোর ১৬টি কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে জানানো হয়, কারখানাগুলোতে নতুন ক্রয়াদেশ না থাকায় এবং প্রতিষ্ঠানটি ঋণখেলাপি হওয়ায় কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়।

প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। শ্রমিকদের মতে, বন্ধ হওয়া কারখানাগুলোর কারণে প্রায় ৪২ হাজার পরিবারের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে গেছে। এখন তাদের একমাত্র দাবি কারখানাগুলো পুনরায় চালু করা হোক।

সমাবেশে ব্যাংকিং সুবিধাসহ বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে অবস্থিত সব কারখানা খুলে দেওয়া, ‘দেশের সম্পদ রক্ষা করি গার্মেন্টস শিল্প সচল রাখি’, ‘সুঁই সুতোতে নিত্য বুনি বস্তু শত শত’, ‘বেক্সিমকো কারখানা না খুলিলে, না খাইয়ে শ্রমিক মরবে শত শত’, ‘অতি অবিলম্বে ফ্যাক্টরি খুলে দিন ৪২ হাজার পরিবার বাঁচান’, ‘আমরা স্বাধীন দেশে কর্ম করে পরিবার নিয়ে বাঁচতে চাই’সহ নানা সেøাগান লেখা ফেস্টুন নিয়ে গণসমাবেশে অংশ নেন। 

বুধবারের (আজ) মধ্যে বেক্সিমকোর বন্ধ সব কারখানা খুলে দেওয়া না হলে সমাবেশ থেকে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা। প্রয়োজনে আমরণ অনশন ও ঢাকায় গিয়ে আন্দোলন করার হুঁশিয়ারি দেন।

সমাবেশে অংশ নেওয়া বেক্সিমকো শিল্প পার্কের একটি গার্মেন্টস কারখানার অপারেটর আরিফুল ইসলাম জানান, এ শিল্প পার্কে ৪২ হাজার শ্রমিক থাকলেও আজ মঙ্গলবারের (গতকাল) সমাবেশে ৩০ হাজারের মতো শ্রমিক অংশ নেয়। বেতন-ভাতা ঠিকমতো না পাওয়ায় বাকি শ্রমিকরা যার যার গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে, নতুবা তারাও উপস্থিত থাকত।

তিনি আরও বলেন, ‘বেক্সিমকোর মালিক সালমান এফ রহমান অন্যায় করেছে, টাকা লুট করেছে, টাকা পাচার করেছে। তার পাপের শাস্তি আমাদের মতো নিরীহ শ্রমিকদের কেন পেতে হবে। আমরা কেন চাকরিচ্যুত হয়ে, বেতন-ভাতা না পেয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরব। এ জন্য আমাদের দাবি সংকটের সমাধান করে কারখানা খুলে দেওয়া হোক-আমরা আবার কাজে ফিরতে চায়। মূলত এই দাবিতে আমরা রাস্তায় নেমেছি। আমরা এর আগে মানববন্ধন করেছি, এর পর সমাবেশ করলাম। বুধবার (আজ) পর্যন্ত অপেক্ষা করব, কোনো সিদ্ধান্ত না এলে আমরা আমরণ অনশন, ‘ঢাকা চলো’র মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’

সরকারের তরফ থেকে সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি অবগত নন উল্লেখ করে শিল্প পুলিশপ্রধান ও এআইজি মো. সিবগাত উল্লাহ সময়ের আলোকে বলেন, ‘বেক্সিমকোর শ্রমিক সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল কি না-বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে শ্রমিকরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেশ শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করেছে। এ সমাবেশ ঘিরে শিল্প এলাকায় কোনো বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়নি। সমাবেশের আশপাশে শিল্প পুলিশসহ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় ছিল। একইসঙ্গে বেক্সিমকোর শ্রমিকদের এ কর্মসূচি ঘিরে যাতে পোশাক শিল্পে নতুন করে আর কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সে বিষয়ে আমরা খুবই সতর্ক অবস্থায় আছি।’

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close