প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:০৯ এএম (ভিজিট : ১৬২)

দিনের বেশিরভাগ সময় রান্নার চুলায় হয় গ্যাস থাকে না, নয়তো গ্যাসের চাপ খুবই কম থাকে। কয়েক মাস ধরেই রাজধানীর শাহজাহানপুর, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর, কাজীপাড়া, রায়েরবাজারসহ বেশ কিছু এলাকায় এ অবস্থা চলছে। প্রায় একই ধরনের পরিস্থিতি রাজধানীর পাশের জেলা গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ অন্য বড় শহরগুলোতেও। চুলায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস থাকুক বা না থাকুক, একজন গ্রাহককে মাসে সরকার নির্ধারিত গ্যাস বিল দিতে হয়। বুধবার সময়ের আলো থেকে জানা যায়, এখন এই বিল বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে।
বিইআরসি ২০২২ সালের ৫ জুন সর্বশেষ গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করে। এর আগে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকদের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গড়ে এক চুলা ৪০ এবং দুই চুলা সর্বোচ্চ ৫০ ঘনমিটার ব্যবহার করছে। প্রিপেইড গ্রাহকের ব্যবহারের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এক চুলা ৭৩ দশমিক ৪১ ঘনমিটার ও দুই চুলা ৭৭ দশমিক ৪১ ঘনমিটার থেকে কমিয়ে যথাক্রমে ৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার করা হয়। এখন তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকরা অনেক বেশি গ্যাস ব্যবহার করছে।
কয়েক বছরের মধ্যে দেশীয় গ্যাসের সরবরাহ ব্যাপকভাবে হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কার বিপরীতে বড় ধরনের গ্যাসের মজুদ বাড়ানো বা অবশিষ্ট মজুদ থেকে বড় ধরনের উৎপাদন বাড়ানোর বৃহৎ কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। পেট্রোবাংলা সম্প্রতি বাপেক্সের মাধ্যমে কিছু নতুন অনুসন্ধান কূপ, উন্নয়ন কূপ ও ওয়ার্কওভার কূপ খননের যে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে রয়েছে, তা ওপরের সংকট মোকাবিলায় যথেষ্ট নয়। প্রশ্ন হলো, গ্যাস উৎপাদন বড় আকারে কমে যাওয়ার কারণে দেশে জ্বালানি সরবরাহে যে বৃহৎ সংকট সৃষ্টি হবে, তা মেটানোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থা কী রয়েছে? দেশের নীতিনির্ধারণী মহলে এর সমাধান কৌশল কি?
সরকারের লক্ষ্য থাকে শিল্পে গ্যাস সরবরাহ। বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে সরকার আবাসিকে গ্যাস বা জ্বালানি ক্ষেত্রে নতুন কৌশল ও সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। কিন্তু আবাসিকে গ্যাস-সংকট জিইয়ে রেখে দাম বাড়ানোর কৌশলের মধ্যে আর যাই হোক, কোনো পরিকল্পনার প্রমাণ মেলে না।
আমরা মনে করি, সরকার যদি আবাসিকে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করতে চায়, তবে একটি পরিকল্পনার মধ্য দিয়েই সরকারকে এগোতে হবে। এর জন্য সময়সীমা থাকতে হবে এবং বিষয়টি জনগণের কাছে স্পষ্ট ও পরিষ্কার করতে হবে। মূল্যস্ফীতির এ বাজারে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাশিত নয়। আর শুধু দাম বাড়ালেই হবে না, আবাসিকে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত ও সে অনুযায়ী পরিকল্পনাও নিতে হবে। তা না হলে জনগণকে দুর্ভোগের মধ্যে ফেলার এই দায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিতেই হবে। জনগণকে আস্থায় নিয়েই নীতি বা কৌশল বাস্তবায়ন করা হবে-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।